সোমবার ● ১৬ জানুয়ারী ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » দেশে ভোটার বাড়লো প্রায় ৮০ লাখ
দেশে ভোটার বাড়লো প্রায় ৮০ লাখ
খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ
# মোট ভোটার ১১ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ১৫৮ জন
# চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে আগামী ২ মার্চ
# ভোটার বৃদ্ধির হার ৫.১০ শতাংশ
বিশেষ প্রতিনিধি
দেশের হালনাগাদ ভোটার তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছেন ৭৯ লাখ ৮৩ হাজার ২৭৭ জন নাগরিক। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে মোট ভোটার বাড়ছে ৫৭ লাখ ৭৪ হাজার ১৪৮ জন। ভোটার বৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ১০ শতাংশ। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের খসড়া ভোটার তালিকায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
গতকাল রোববার (১৫ জানুয়ারি) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব জাহাঙ্গীর আলম এসব তথ্য তুলে ধরেন। তিনি আরও জানান, খসড়া এই তালিকার ওপর অভিযোগ নিষ্পত্তি শেষে আগামী ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। আর চূড়ান্ত সেই ভোটার তালিকা দিয়েই অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
খসড়া ভোটার তালিকা অনুযায়ী, প্রায় ৮০ লাখ নতুন ভোটারসহ দেশে বর্তামানে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ১৫৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৩ লাখ ৮৩ হাজার ১১২ জন। নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৬ লাখ ৭৭ হাজার ২০৯ জন। আর হিজড়া জনগোষ্ঠীর মধ্য থেকে নতুন ভোটার হয়েছেন ৮৩৭ জন।
ইসি সচিব জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে এই ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়। ২০১৬ ও ২০১৯ সাল থেকে ৩ বছর পরপর (১৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী ও ভোটারযোগ্যদের) নতুন ভোটারদের তথ্য সংগ্রহে হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করে ইসি। এবার গত বছরের জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম। খসড়া তালিকা প্রকাশের পর নাম বা অন্য তথ্য সংশোধনের জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে পারবেন সংশ্লিষ্টরা। দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি করে ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। তবে ভোটার হওয়ার উপযুক্ত ব্যক্তিরা যে কোন সময় ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হতে পারেন।
সবশেষ ২০২২ সালে হালনাগাদে নতুন করে ভোট দেয়ার যোগ্য হয়েছেন ৭৯ হাজার ৮৩ লাখ ২৭৭ জন। তার মধ্যে পুরুষ ৪০ লাখ ৭২ হাজার ৪৫৫ জন, নারী ৩৯ লাখ ১০ হাজার ৪৩৯ জন এবং হিজড়া ৩৮৩ জন। মৃত ২২ লাখ ৯ হাজার ১২৯ জন ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। মৃতদের বাদ এবং নতুনদের অন্তর্ভুক্ত করে সবমিলিয়ে এ বছরের খসড়া ভোটার তালিকা নতুন অন্তর্ভুক্তযোগ্য ভোটারের সংখ্যা ৫৭ লাখ ৭৪ হাজার ১৪৮ জন; যা ৫.১০ শতাংশ। এর আগে ২০২২ সালে ২ মার্চ পর্যন্ত ভোটার ছিল ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৯ জন। নারী ভোটার ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭ জন। আর হিজড়া ভোটার ছিলো ৪৫৪ জন।
চলতি বছরের ২০ মে থেকে গত ২০ নভেম্বর পর্যন্ত চার ধাপে তথ্য সংগ্রহ ও নিবন্ধনের কাজ সম্পন্ন করে ইসি। এ সময় বর্তমান ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে মৃতদের তথ্য সংগ্রহও করা হয়েছে; এবার মৃত ভোটারের তথ্যও নেয়া হয়। গতকাল (১৫ জানুয়ারি) হালনাগাদের খসড়া তালিকা প্রকাশের পর তা বিভিন্ন জনবহুল স্থানে প্রকাশ্যে টানিয়ে দেওয়া হয়েছে; যেন কারো কোনো ভুল থাকলে আবেদন সংশোধনের সুযোগ পান। এক্ষেত্রে দাবি, আপত্তি বা সংশোধনের আবেদন করার শেষ সময় ৩১ জানুয়ারি। অর্থাৎ দাবি, আপত্তি বা সংশোধনের জন্য সময় থাকছে ১৬ দিন। সংশোধনকারী কর্তৃপক্ষ সেই আবেদন নিষ্পত্তি করবে ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। আবেদন নিষ্পত্তির পর হালনাগাদকৃত চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে আগামী ২ মার্চ। এই তালিকায় বাদ পড়া বাকিরা ২০২৪ ও ২০২৫ সালে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী হওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকায় যুক্ত হবেন।
দাবি, আপত্তি ও সংশোধন সংক্রান্ত আবেদন নিষ্পত্তির জন্য প্রতিটি উপজেলা/থানার ভোটার এলাকার জন্য ক্ষেত্রবিশেষে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা/অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা/সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন অফিসার/অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার/উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সিটি কর্পোরেশন ও ফ্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকার জন্য আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা/সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার/জেলা নির্বাচন অফিসার/অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)/ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার এবং কতিপয় বিশেষ এলাকার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)/অতিরিক্ত জেলা প্রশাসনকে (শিক্ষা) সংশোধনকারী কর্তৃপক্ষ (রিভাইজিং অথরিটি) নিয়োগ করা হয়েছে।
ইসির তথ্য অনুযায়ী ২০০৭-২০০৮ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর এ পর্যন্ত ভোটার তালিকা হালানাগাদ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে পাঁচবার। ২০০৯-২০১০ সাল, ২০১২-২০১৩ সাল, ২০১৫-২০১৬ সাল, ২০১৭-২০১৮ সাল ও ২০১৯-২০২০ সালে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে নির্বাচন কমিশন।
বিষয়: #দেশে ভোটার বাড়লো প্রায় ৮০ লাখ