শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
Swadeshvumi
বুধবার ● ১৮ জানুয়ারী ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » ইভিএম নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা কাটেনি: সিইসি
প্রচ্ছদ » জাতীয় » ইভিএম নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা কাটেনি: সিইসি
২২৬ বার পঠিত
বুধবার ● ১৮ জানুয়ারী ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ইভিএম নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা কাটেনি: সিইসি

---
# জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায় ইইউ
# ইভিএম নিয়ে অবিশ্বাস কমেছে, সংকট বাজেটের
# নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করার চেষ্টা করবে ইসি
# দলগুলোর মতপার্থক্য দূর হবে আশাবাদ

বিশেষ প্রতিনিধি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কতগুলো আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার করা সম্ভব হবে তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। এ প্রসঙ্গে গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের কাছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘ইভিএম নিয়ে যে অবিশ্বাস ছিল তা অনেকটা কেটে গেছে। তবে ইভিএম নিয়ে আমরা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছি না, কারণ আদৌ ইভিএম এভেবেলব হবে কি-না। আমরা কী পরিমাণ নির্বাচন ইভিএমে করতে পারবো সে বিষয়ে এখনো আমরা কোন নিশ্চিত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারিনি।’
এর আগে সকালে আগারগাঁও এর নির্বাচন ভবনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন সিইসি, তিন নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবসহ কমিশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ১১ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেলিগেশন চার্লস হোয়াইটলি।
বৈঠকে কী ধরনের আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে সিইসি জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, তাতে ইভিএমের ব্যবহার, নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্ধারিত রোডম্যাপ অনুযায়ী আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে এবং যথাসময়ে নির্বাচন করতে চাই। আমরা এটাও উনাদের পরিস্কার করে বলেছি। তবে কিছু বিষয়ে এখনো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। যার কারণে নির্বাচনি পরিবেশটা এখনো অনুকূলে মনে করছি না। তবে অচিরেই এই মতপার্থক্যটা দূর হয়ে যাবে বলে আমরা আশা করছি। শেষমেষ সবদলগুলো নির্বাচনে আসবে সে বিষয়ে আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছি, তবে সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত কওে বলতে পারছি না। আমরা বলেছি যদি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয় তাহলে চমৎকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। সেই লক্ষ্যে আমাদের পুরো প্রস্তুতি রয়েছে।’

---
রাজনৈতিক সংলাপ প্রসঙ্গে কোন কথা হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে একাধিকবার বলেছি যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার প্রয়োজন। এবং ব্যাপক অর্থে তাদের মধ্যে সমঝোতা প্রয়োজন, যাতে নির্বাচন সুষ্ঠু পরিবেশে সম্পন্ন হয়। প্রথম থেকেই আমরা এই আবেদন করে আসছি, এখনো করে যাচ্ছি। মতপার্থক্যগুলো রাজনৈতিক ইস্যু, আমাদের জন্য ইস্যু নয়। কাজেই রাজনৈতিক ইস্যুগুলো, যেগুলো নির্বাচনের জন্য অন্তরায় হতে পারে, সেগুলোর সুরাহা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো সেটা অনুধাবন করতে হবে এবং বুঝতে হবে। তাদেরকেই সেটা অসুখ নিরাময় করতে হবে। তাহলেই নির্বাচনটা প্রত্যাশিত মাত্রায় অংশগ্রহণমূলক হবে। সুন্দর, সুষ্ঠু হবে এবং গণতান্ত্রিক চেতনায় যে নির্বাচন প্রত্যাশিত সে নির্বাচনটা ওভাবেই অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতিনিধি দলের পক্ষে থেকে কোন সুপারিশ আছে কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘এটা ছিল একটাই আমরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণটা কী ধরনের সহযোগিতা দিতে পারবো। আমরা বলেছি যে গণমাধ্যম আমাদের নির্বাচন কভার করে থাকে, পর্যবেক্ষকরাও করে থাকে। অতীতেও যেভাবে করেছে কিন্তু এবার আমরা যেটা করবো আমাদের তরফ থেকে আমরা ফুললি ওপেন হবো। আমাদের তরফ থেকে কোনো অন্তরায় থাকবে না। ফরেন ওবজারভার সম্পর্কে আমাদের একটা পলিসি আছে। তারা আমাদের কাছে আবেদন করবেন। আমরা সেটা পাঠিয়ে দেবো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এবং আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। কারণ বিষয়টি দ্বিপাক্ষিকভাবে সুরাহা হতে হবে। কিন্তু এতটুকু আমরা বলেছি আমাদের তরফ থেকে কোন অন্তরায় থাকবে না। জেনেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি বিদেশি পর্যবেক্ষকে এলাউ করবেন। কারণ একটা ব্রিট্রিশ এমপি ডেলিগেশন উনার সঙ্গে মিট করেছিল। তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সে আশ্বাস দিয়েছি। উনারাও এতে আনন্দিত, আমরাও এতে আনন্দিত, যে হ্যাঁ বিদেশি পর্যবেক্ষকরাও যদি এসে আমাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে, গ্লোবালিও সারাবিশ্ব দেখবে আমাদের দেশের নির্বাচনটা সুন্দর, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’

---

এর আগে ইসি’র সঙ্গে দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে ইইউ প্রতিনিধিদলের প্রধান চার্লস হোয়াইটলি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এদেশের নির্বাচন নিয়ে কমিশনের সঙ্গে আমাদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। গত বছরের জুলাইয়ে শেষ বৈঠকের পর থেকে এটির আরো অগ্রগতি হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিদেশি মিশনের সাথে কথা বলার জন্য আমাদের স্বাগত জানিয়েছেন এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ ইইউ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে ইতিবাচক। আমরা মনে করি নির্বাচন কমিশনের কাজের অগ্রগতিতে প্রযুক্তিগত এবং পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আরো আলোচনা করার সুযোগ রয়েছে। নির্বাচনে ইসির প্রস্তুতির বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে আমাদের আলোচনা বেশি হয়েছে। সবাই চায় একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। তাই আমরা ইসির কাছে কোন সুপারিশ করিনি। তারা তাদের কাজ করবে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন- ঢাকায় ইইউর ডেপুটি হেড অফ মিশন ব্রেন্ড স্পাইনার, ডেনমার্কের দূত ইউনি স্ট্র্যাপ পিটারসন, সুইডেনের দূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন, জার্মানির দূত আচিম টোস্টার, নেদারল্যান্ডসের দূত এন্যি গিরার্ড ভ্যান লুইন, ফ্রান্সের ডেপুটি হেড অফ মিশন গিলিয়াম এড্রেন ডে কের্ডেল, ইতালির ডেপুটি হেড অফ মিশন মাতিয়া ভেনচুরা, স্পেনের হেড অফ মিশন ইগনাসিয়ো সাইলস ফার্নান্দেজ, সুইজারল্যান্ডের দূত নাথালি চুয়ার্ড ও নরওয়ের দূত এস্পেন রিক্টার সেভেন্ডসেন।
উল্লেখ্য, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের লক্ষ্যে ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকার নতুন একটি প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই প্রস্তাব এখনও পাস হয়নি, যা এখনও পরিকল্পনা কমিশনে সিদ্ধান্তের অপক্ষোয়।



বিষয়: #



আর্কাইভ