বুধবার ● ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে জাতির মাঝে ফিরে আসে আনন্দ-স্বস্তি
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে জাতির মাঝে ফিরে আসে আনন্দ-স্বস্তি
ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের আলোচনা সভা
নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা করেছে ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘মহানায়কের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
ঢাকা মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি এম. মনসুর আলীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সরদার মাহামুদ হাসান রুবেলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিধি ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. শেখ আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর আগমন বাঙালি জাতির জন্য একটি বড় প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। পূর্ণতা পেয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। পাকিস্তানের কারাগারে গোপনে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সব ধরনের আয়োজন সম্পন্ন করেছিলেন পাকিস্তানের সামরিক জান্তা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। বিশ্ববাসীকে সেই কথা জানিয়ে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য পাকিস্তানের সামরিক জান্তাকে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক ও নগর কমিটির উপদেষ্টা প্রফেসর ড. সৈয়দ শামসুদ্দীন আহমেদ বলেন, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে আসেন স্বাধীন বাংলাদেশে। শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের এক নতুন অভিযাত্রা। বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণার পর মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস তাঁকে থাকতে হয় পাকিস্তানের মিনাওয়ালী কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে। এ সময় প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর প্রহর গুনতে হয় বঙ্গবন্ধুকে। তার আগমনের দিনটি এখনও অনেকের মনে গভীর আনন্দের স্মৃতি হয়ে আছে।
নগর কমিটির উপদেষ্টা ও কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কে এম জাকির হোসেন বলেন, ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পকিস্তানি কারাগার থেকে মুক্তি পান। একটি পাকিস্তান সামরিক বিমানে খুব গোপনে বঙ্গবন্ধুকে লন্ডনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। লন্ডনে সময় তখন ভোর ৮টা ৩০ মিনিট, ৯ জানুয়ারি ১৯৭২ সাল। স্বদেশে ফেরার জন্য বঙ্গবন্ধু ওঠেন ব্রিটিশ রাজকীয় বিমান বহরের কমেট জেটে। বাংলাদেশে ফেরার পথে বিমানটি দুই ঘণ্টার যাত্রা বিরতি করে দিল্লিতে। ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ভি ভি গিরি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুকে অভ্যর্থনা জানান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১০ জানুয়ারি, ১৯৭২ বিকালে তেজগাঁও বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেন। দীর্ঘদিন পর স্বদেশের মাটিতে পা রাখেন তিনি। মুহুর্মুহু ‘জয় বাংলা’ ও ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে জনতা অভ্যর্থনা জানায় তাদের প্রিয় নেতাকে। আর এভাবে নিরসন ঘটে বঙ্গবন্ধু ও জাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে দীর্ঘ সাড়ে ৯ মাস ধরে সাড়ে সাত কোটি বাঙালির মনে বিরাজমান সব ধরনের সংশয়, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও ব্যাকুলতার। চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার পর দেশের মাটিতে বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গে গোটা জাতির মাঝে ফিরে আসে পরম আনন্দ ও স্বস্তি।’
সভায় ইন্দিরা গান্ধীকেও কৃতজ্ঞতা চিত্তে স্মরণ করে বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ও বঙ্গবন্ধুকে মুক্তির লক্ষ্যে তৎকালীন সময়ে তিনি ৬৭টি দেশের সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানকে চিঠি দেন। অন্যদিকে তিনি ইউরোপের ৫টি দেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সফর করে বিশ্বজনমত বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের অনুকূলে আনতে সক্ষম হন। ফলে পাকিস্তানের সামরিক জান্তার পক্ষে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা সম্ভব হয়নি।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. সামছুদ্দিন ইলিয়াস, বিনয় ভূষণ তালুকদার, ড. এস এম কফিল, সালাউদ্দীন আল আজাদ, তপন কুমার সরকার, কাজী মাহতাবুল হক, এস এম ওয়াহিদুজ্জামান, নির্মল বিশ্বাস, আসিফ আবেদীন, আব্দুল্লাহ আল আমিন রঞ্জন, মো. আজিবুর রহমান রাজিব, কৃষিবিদ নূর ইসলাম, রাজীব কিষান, সাইফুজ্জামান মিন্টু, প্রকৌশলী মোহাম্মদ আওয়াল হোসেন, ডা. মো. কামরুল ইসলাম খান (ইমন), কল্যাণ কিশোর সরকার, ওয়াহিদুর রহমান, মো. এনামুল হক, আশরাফুল আলম (আশরাফ), সাকিব মাহদী আজিজ, আব্দুর রাজ্জাক, মোঃ আবু আলম, সাইফুল আলম তুষার, শামীম আহমেদ, শওকত আকবর, আশেক এলাহী সাব্বির প্রমুখ।
বিষয়: #বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে জাতির মাঝে ফিরে আসে আনন