শিরোনাম:
ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১
Swadeshvumi
বৃহস্পতিবার ● ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » ভোটের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ইসি’র সন্তোষ
প্রচ্ছদ » জাতীয় » ভোটের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ইসি’র সন্তোষ
২৫১ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ভোটের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ইসি’র সন্তোষ

 ---

সংসদীয় ৬ আসনের উপনির্বাচনে ভোট

# সবমিলিয়ে নির্বাচনে ভোট পড়েছে ১৫-২৫ শতাংশ

# নিরুত্তাপ পরিবেশের কারণ কাঙ্ক্ষিত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকা: সিইসি

# ভোটের দিনও আলোচনায় ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিখোঁজ স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফ

বিশেষ প্রতিনিধি

বড় ধরনের কোন অনিয়ম ছাড়াই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শেষ হয়েছে জাতীয় সংসদের শূন্য হওয়া ছয় আসনের উপনির্বাচন। ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু থাকলেও ভোটার উপস্থিতি কম, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভোটকেন্দ্রের বাইরে বোমাবাজি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিখোঁজ এমপি আসিফ এবং বগুড়ার দুটি আসনে হিরো আলমকে নিয়ে দিনভরই ছিলো আলোচনা। বুধবার ভোট হওয়া সংসদীয় আসনগুলো হলো- ঠাকুরগাঁও-৩, বগুড়া-৪ ও ৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও ৩ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২। আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপির এমপিরা গত বছরের ১১ ডিসেম্বর পদত্যাগ করায় এই আসনগুলো শূন্য হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বেলা দুইটা থেকে তিনটা পর্যন্ত সদর উপজেলার শান্তির মোড় ও সোনার মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। লাঠিপেটা ও অন্তত ২০টি ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরা।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনের নিখোঁজ স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের নিখোঁজ থাকা নিয়ে দিনভরই ছিলো আলোচনা। বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে তার স্ত্রী মেহেরুননিছা মেহেরীন আশুগঞ্জ উপজেলার শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভোট না দিয়েই ফিরে যান।

ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের পীরগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটারদের লাইন।

এর আগে ছয় আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয় সকাল সাড়ে ৮টায়; বিরতিহীনভাবে চলে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। সব আসনে ভোট নেয়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। ছয়টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোট ২৭ জন প্রার্থী। এসব আসনের ভোটে এবার সিসি ক্যামেরার পর্যবেক্ষণ না থাকলেও ভোটের পরিবেশ নিয়ে শান্তিপূর্ণ থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়াল।

ভোটগ্রহণ কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং শেষে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান, ‘স্থানীয় প্রশাসন এবং ইসির নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ভোটের পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটর করা হয়েছে। অনিয়ম বা কারচুপির উল্লেখযোগ্য কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফ নিখোঁজ থাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিষয়ে আমরা নজর রেখেছি, সেখানেও বিরূপ কোন তথ্য পেরিবেশিত হতে দেখিনি। নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে তথ্য পেয়েছি, দুয়েকটি জায়গায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে; একটি ককটেল তাজা পাওয়া গেছে। দুয়েকটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে যেটা কেন্দ্রের বাইরে। আমরা যে তথ্য পেয়েছি, সিসি ক্যামেরা ছাড়াই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। ভোটগ্রহণ বলা চলে সাধারণভাবে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে হয়েছে।’

স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় সন্তোষ প্রকাশ করে সিইসি বলেন, ‘ সবমিলিয়ে ধারণা করা হচ্ছে এই ছয় আসনের নির্বাচনে ভোট পড়েছে ১৫-২৫ শতাংশ; যা কাক্সিক্ষত নয়। ভোট গণনা শেষে এটি সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাবে। এক্ষেত্রে আমি মনে করি কাক্সিক্ষত প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হওয়ায় ভোটার উপস্থিতি ছিলো কম ও পরিবেশও ছিলো নিরুত্তাপ। আমরা গণমাধ্যমের সহায়তায় এখান থেকে দেখছিলাম- বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া আমরা এমন কিছু দেখিনি যে ভোটকেন্দ্রে ভোট ডাকাতি হচ্ছে, ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। খুব গুরুতর বা ব্যাপক অনিয়ম দেখিনি; যাতে ভাটের ফলাফল পাল্টে যেতে পারে। সেদিক থেকে আমরা বলব সাধারণভাবে সুষ্ঠু হয়েছে ভোট।’

অভিযোগ উঠেছে, ভোটের মাঠে ইসির হাতে নিয়ন্ত্রণ নেই। একজন প্রার্থী নিখোঁজ ছিলেন। নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর হয়েছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই এটা আমি মেনে নিতে রাজি না। আমরা এখান থেকে বসে সর্বোত্তমভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। সংযোগ রক্ষা করেছি। খোঁজ-খবর নিয়েছি।’

ছয় আসনে প্রার্থী ছিলেন যারা:

ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ৬ প্রার্থী: মো. সিরাজুল ইসলাম- বিএনএফ; হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ- জাতীয় পার্টি; মো. ইয়াসিন আলী- বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (১৪ দল); মো. শাফি আল আসাদ- ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, মো. এমদাদুল হক- জাকের পার্টি এবং গোপাল চন্দ্র রায়- স্বতন্ত্র।

বগুড়া-৪ আসনে ৯ প্রার্থী: একেএম রেজাউল করিম তানসেন- জাসদ (১৪ দল); শাহীন মোস্তফা কামাল- জাতীয় পার্টি; আব্দুর রশিদ সরদার- জাকের পার্টি; মো. তাজ উদ্দীন মণ্ডল- বাংলাদেশ কংগ্রেস। আর মো. গোলাম মোস্তফা, আলহাজ্ব মো. ইলিয়াস আলী, মো. আশরাফুল হোসেন আলম (হিরো আলম), মো. কামরুল হাসান সিদ্দিকী (জুয়েল) এবং মো. আব্দুর রশিদ স্বতন্ত্র প্রার্থী।

বগুড়া-৬ আসনে ১১ প্রার্থী: মো. আফজাল হোসেন- গণফ্রন্ট; মো. এমদুদুল হক ইমদাদ- জাসদ; মো. নূরুল ইসলাম ওমর- জাতীয় পার্টি; রাগেবুল আহসান রিপু- আওয়ামী লীগ; মোহাম্মদ ফয়সাল বিন শফিক- জাকের পার্টি; মো. নজরুল ইসলাম- বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন। স্বতন্ত্র প্রার্থী- মো. আব্দুল মান্নান, মো. রাকিব হাসান, মাছুদার রহমান হেলাল, মো. আশরাফুল হোসেন আলম (হিরো আলম) এবং মো. সরকার বাদল।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে ৬ প্রার্থী: মু. জিয়াউর রহমান- আওয়ামী লীগ; মো. নবীউল ইসলাম- বিএনএফ; মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক- জাতীয় পার্টি; মো. গোলাম মোস্তফা- জাকের পার্টি; মু. খুরশিদ আলম ও মোহাম্মদ আলী সরকার স্বতন্ত্র প্রার্থী।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে ৩ প্রার্থী: মো. আব্দুল ওদুদ- আওয়ামী লীগ; কামরুজ্জামান খান- বিএনএফ; এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সামিউল হক।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ৫ প্রার্থী: মো. আব্দুল হামিদ- জাতীয় পার্টি; জহিরুল ইসলাম জুয়েল- জাকের পার্টি। স্বতন্ত্র প্রার্থী-অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউল হক মৃধা, আবদুস সাত্তার ভূঞা (উকিল আবদুস সাত্তার) এবং আবু আসিফ আহমেদ (নিখোঁজ)।

গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগের সমাবেশে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পরদিন তারা সংসদ ভবনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর দপ্তরে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। মেয়াদপূর্তির এক বছর আগেই তারা সংসদ ছাড়েন। এ ঘটনার পরদিন রাতেই ওই ছয়জনের আসন শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে সংসদ সচিবালয়। বিএনপির পদত্যাগকারী সাত সাংসদেও মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনে (মহিলা আসন-৫০) ভোটের তারিখ এই ছয় আসনের ভোট শেষ হওয়ার পর ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন।



বিষয়: #



আর্কাইভ