ভয়ভীতিহীন নির্বাচন করতে তৎপর কমিশন: ইসি আহসান

আগামী সংসদ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলকে ভোটে অংশ নেওয়ার আহ্বান ইসি’র

বিশেষ প্রতিনিধি

নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভয়ভীতিহীন ও নির্বিঘ্ন পরিবেশ নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছে নির্বাচন কমিশন। এসময় ভোট নিয়ে কল্পনাপ্রসূত কোন শঙ্কার বশবর্তী হয়ে নির্বাচন বর্জনের সংস্কৃতি থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে সরে আসারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার (১ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো লিখিত এক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ভোটার হব, নিয়ম মেনে ভোট দিব যোগ্যজনে’- এমন প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারের ভোটার দিবস উদযাপন করছে সাংবিধানিক এই সংস্থা।

নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, ‘ভয়ভীতিহীন নির্বাচন ও নির্বিঘ্ন পরিবেশ করতে নির্বাচন কমিশন সর্বোচ্চ তৎপর। নিজেদের মেয়াদের প্রথম বছরে এ পর্যন্ত যত নির্বাচন হয়েছে তাতে যেখানে বাধা, অনিয়মের অভিযোগ এসেছে সেখানেই কমিশনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

বর্তমান কমিশনের অধীনে পাঁচ শতাধিক নির্বাচন হয়েছে উল্লেখ করে ইসি আহসান হাবিব বলেন, ‘এসব ভোটের সিংহভাগই করা হয়েছে ইভিএমে। এসব ভোটে নির্ভরযোগ্য কোন অভিযোগ তো আসেইনি এবং কেউ আদালতেও দ্বারস্থ হয়নি। ইভিএমের নির্বাচনে ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট দেয়া প্রসারিত করেছে।’ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষে অবাঞ্ছিত লোকের উপস্থিতি ও কেন্দ্রে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিকভাবে কয়েকজনকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে বলে জানান এই কমিশনার৷

‘ভোটার দিবসেই শুধু নয়, আমরা সবসময় আশ্বস্ত করতে চাই- আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে পালন করবো। পাশাপাশি সবার সহযোগিতাও কামনা করি। ভালো নির্বাচনও উপহার দিতে সক্ষম হবো।’ -নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান

ভোটার, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, নির্বাচনি এজেন্ট, গণমাধ্যমকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তার নিশ্চিত করতে কমিশন বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সারা বছরই ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করে যাচ্ছি। হালনাগাদে নির্ধারিত কর্মসূচির বাইরেও সারাবছরই যোগ্যরা ভোটার হতে পারছেন। ভোটার হওয়ার পাশাপাশি তাদের এনআইডি সেবাও সহজীকরণে সব ধরনের পদক্ষেপ রয়েছে। প্রত্যেক ভোটারের নাগরিক অধিকার তার ভোটাধিকার। এ অধিকার রক্ষায় আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছি এবং তা অব্যাহত থাকবে।’

আহসান হাবিব খান বলেন, ‘নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেয়ার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে সবাইকে। যেকোন উপায়েই জিততে হবে এমন প্রবণতা থেকে যেমন বেরিয়ে আসতে হবে, তেমনি পরাজয় মেনে নেয়া প্রবণতা থাকতে হবে।’ নির্বাচন কমিশন শুধু ভালো নির্বাচন করব কিন্তু যিনি বা যারা পরাজিত হবেন, তিনি বা তারা সমালোচনায় মুখর হবেন তা সমীচীন নয় বলে মনে করেন এই কমিশনার। নির্বাচনের গুণগত সংস্কৃতির বিকাশে ভোটার, দল, অংশীজনসহ সবার সহযোগিতা দরকার বলে জানান তিনি।

সব দলকে ভোটের আসার বিষয়ে ইসির আহ্বান বরাবরই অব্যাহত থাকে জানিয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘ভোটাধিকার মুখের কথা নয়, এটাকে অর্থবহ করতে আমাদের সব ধরনের উদ্যোগ, সর্বোচ্চ সদিচ্ছা থাকবে। আমরা চাই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনসহ সব নির্বাচন হোক অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক। ভোটে আসেন সবাই, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হোক। গোলযোগ, সহিংসতা পরিহার করতে হবে; নির্বাচন কমিশনও অনিয়ম ঠেকাতে কঠোর অবস্থান রয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হলে ভোটের মাঠেও ভারসাম্য থাকবে। ভোটে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকবে।’

আহসান হাবিব জানান, ‘ভোটকেন্দ্রে আসতে ভোটারদের বাধা, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী, নির্বাচনি এজেন্টদের বাধা-বিপত্তিতে শাস্তি বাড়ানোর সুপারিশও করেছে এ কমিশন। ভোটের নির্বিঘ্ন পরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান জানান, ভোটাররাও উৎসবমুখরভাবে কেন্দ্রে আসবেন, নিরাপদে পছন্দে প্রার্থীকে ভোট দিয়ে ঘরে ফিরে যাবেন। ভোটার দিবসেই শুধু নয়, আমরা সব সময় আশ্বস্ত করতে চাই- আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে পালন করব। পাশাপাশি সবার সহযোগিতাও কামনা করি। ভালো নির্বাচনও উপহার দিতে সক্ষম হবো।’