শনিবার ● ১৮ মার্চ ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা ও অধিকার আদায়ে নারীদের ভীত হলে চলবে না: এএলআরডি’র সেমিনারে বক্তারা
ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা ও অধিকার আদায়ে নারীদের ভীত হলে চলবে না: এএলআরডি’র সেমিনারে বক্তারা
বিশেষ প্রতিনিধি
ধর্মীয় অনুশাসন আর পরিবারের অবহেলাকে পাশকাটিয়ে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা ও অধিকার আদায়ে নারীদের রুখে দাঁড়াতে হবে। কারণ পরিবার থেকেই শুরু হয় নারীদের অধস্তন করে রাখার প্রবণতা ও অবমূল্যায়ন। পারিবারিক সম্পত্তির অংশীদারিত্ব থেকেও নারীকে বঞ্চিত করা হয়। ধর্মীয় অনুশাসন অনুযায়ী সম্পত্তি বন্টনে প্রাপ্য সম্পত্তি নারীরা বুঝে পেয়েছেন- এমন ঘটনা খুব বিরল।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে নারীর ভূমি ও সম্পত্তিতে অধিকারের বাস্তবতা: রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এএলআরডির চেয়ারপারসন ও মানবাধিকার নেত্রী খুশী কবিরের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মানবাধিকার আইনজীবী, জেন্ডার ও টেকসই উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ড. ফস্টিনা পেরেরা এবং এএলআরডির উপ-নির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান মনি।
আলোচনায় সমাজের পুরুষতান্ত্রিক বিভিন্ন ঘটনা ও মনোভাবের উদ্ধৃতি উল্লেখ করে ড. ফস্টিনা পেরেরা বলেন, ভূমি বা সম্পত্তিতে নারীর অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা। এজন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের চুক্তি রয়েছে। সামাজিক, আইনি, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলো এর মধ্যে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। আর সম্পত্তিতে নারীর অধিকার আদায়ের আন্দোলল শত বছর পেরিয়ে গেলেও অগ্রগতি ক্ষীণ। কারণ এ বিষয়ে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কাজ হলেও সমন্বিত প্রচেষ্টা নেই। পরিবার ও সমাজের পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের উন্নতি হয়নি, আইনেও রয়েছে ঘাটতি। তাই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিশেষ করে নারীদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন জরুরি।
‘সিডও বাংলাদেশ প্রতিবেদন, নারীর ভূমি ও কৃষির অধিকার: নাগরিক উদ্বেগ’ বিষয়ক আলোচনায় এএলআরডি’র উপ-নির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান মনি বলেন, সিডও ২০১৬ সালে ২৭টি ইস্যুতে ৫৮টি সুপারিশ করে যার মধ্যে ১৬টি নারীর ভূমি, উত্তরাধিকার, সম্পত্তির অধিকার বা নারীর সমান অধিকারের সঙ্গে যুক্ত। এসময় তিনি নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সব ধরনের ভূমি আইন, নীতিমালা ও প্রবিধান বাতিল করা, সিডও সনদেও ধারা-২ এবং ১৬.১(গ) এর ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার কমিটির সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণসহ নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে ১১ দফা প্রস্তাবনা ও সুপারিশ তুলে ধরেন।
এসময় কবি ও দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, তৃণমূল মানুষের অধিকার আদায় ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও সমাজের দীর্ঘদিনের প্রচলিত যে অনাচার বিরাজমান তা ভাঙতে হলে ঐক্যবদ্ধ অন্দোলনের বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি।
এছাড়াও প্যানেল আলোচনায়- ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটির পরিচালক নবনীতা চৌধুরী, রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য লাকি আক্তার এবং এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বক্তব্য রাখেন।
বিষয়: #ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা ও অধিকার আদায়ে নারীদের ভীত হলে চলবে