শিরোনাম:
ঢাকা, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
Swadeshvumi
বুধবার ● ২২ মার্চ ২০২৩
প্রচ্ছদ » গণমাধ্যম » সংশোধনী ছাড়া প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস করতে দেয়া হবে না
প্রচ্ছদ » গণমাধ্যম » সংশোধনী ছাড়া প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস করতে দেয়া হবে না
৬৫৩ বার পঠিত
বুধবার ● ২২ মার্চ ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সংশোধনী ছাড়া প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস করতে দেয়া হবে না

গতকাল বুধবার রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে গণমাধ্যমকর্মী আইন বিষয়ে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) আয়োজিত অংশীজন সংলাপে বক্তারা।

-বিজেসির অংশীজন সংলাপে বক্তারা

# প্রস্তাবিত আইনের ৫৪ ধারা কমিয়ে আনা জরুরি

# আইনের বিতর্কিত ধারাগুলো সংশোধন করতে হবে

# আইনের সংশোধনী কাঠামো তৈরিতে কমিটি গঠনের প্রস্তাব 

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইনটি অসম্পূর্ণ মন্তব্য করেছেন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার-বিজেসি’র নেতৃবৃন্দসহ বিশিষ্ট সাংবাদিকরা। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ওই আইনের বিতর্কিত ধারাগুলো সংশোধনী ছাড়া তা সংসদে পাস করতে দেয়া হবে না। কারণ সংশোধনী ছাড়া আইনটি পাস হলে তা স্বাধীন সাংবাদিকতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত করাসহ সংবাদপত্রের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করবে। অধিকার খর্ব করার মতো আপত্তিকর ধারাগুলো সংশোধন করা হলে এই আইন পাসে কোন আপত্তি থাকবে না বলেও জানান তারা। সংবাদমাধ্যমের অধিকাংশ মালিক সাংবাদিকদের যৌক্তিক সুযোগ-সুবিধা দিতে চান না বলেই তারা এই আইনের বিরোধিতা করছেন।

গতকাল বুধবার (২২ মার্চ) রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে গণমাধ্যমকর্মী আইন বিষয়ে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) আয়োজিত অংশীজন সংলাপে তারা এসব কথা বলেন। সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিজেসির নির্বাহী মিলটন আনোয়ার। এসময় তিনি প্রস্তাবিত আইনের বিভিন্ন অসঙ্গতি ও অস্পষ্ট দিকগুলো তুলে ধরে বলেন, প্রস্তাবিত আইনে গণমাধ্যমকর্মীর যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তা অসম্পূর্ণ। সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত স্থায়ী, অস্থায়ী, ফ্রিল্যান্স সব ধরনের ব্যক্তিকে এই আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে ৷

সংলাপে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) এর চেয়ারম্যান ও মাছরাঙা টিভির বার্তাপ্রধান রেজওয়ানুল হক রাজা বলেন, ‘গণমাধ্যমের অংশীজনেরা ঐক্যবদ্ধভাবে এখনো এই আইনের বিষয়ে কোন সংশোধনী প্রস্তাব দিতে পারিনি। অন্যদিকে অংশীজনদের বড় অংশ হচ্ছে মালিকপক্ষ। তারা এই আইন না করার ব্যাপারে অবস্থান নিয়েছে। আমরা এই আইনের পক্ষে। কারণ গণমাধ্যমকর্মীদের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিতে এই আইন প্রয়োজন। তবে প্রস্তাবিত আইনের সংশোধন ছাড়া এই আইন পাস হলে তা সংবাদমাধ্যমের এগিয়ে যাওয়ার পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’ একই সাথে প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইনের ৫৪ ধারা কমিয়ে আনা জরুরি বলেও জানান তিনি।

বিজেসির সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মী আইনটি এখনো পাস হয়নি। প্রস্তাবের পর্যায়ে রয়েছে। আইনটি এভাবে পাস হলে আগামী বহু বছর আমাদের জীবন, পেশা এবং সাংবাদিকতা নিয়ন্ত্রণ করবে। তাই এই আইনের অসঙ্গতি এবং অসম্পূর্ণতা সম্পর্কে আমাদের এখনই কথা বলতে হবে। যেহেতু কর্মী দুর্বল হলেই মিডিয়া দুর্বল হয়। তাই দুর্বল মিডিয়া তৈরির অংশ হিসেবে এই আইনটি ব্যবহৃত হবে।

গতকাল বুধবার রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে গণমাধ্যমকর্মী আইন বিষয়ে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) আয়োজিত অংশীজন সংলাপে বক্তারা।

আলোচনায় স্টেকহোল্ডারদের মতামত গ্রহণ করে সাংবাদিকবান্ধব আইন তৈরির পরামর্শ দেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। তিনি জানান, প্রস্তাবিত আইনের ১২ ধারায় বলা হয়েছে, কোন গণমাধ্যমে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত কর্মী থাকলে যারা অতিরিক্ত তাদের ছাঁটাই করা যাবে। কিন্তু অতিরিক্ত কর্মীর ব্যাখ্যা আইনের কোথাও নেই। ফলে এই বিধান চাকরির নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু বলেন, নতুন আইনে সাংবাদিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার সংরক্ষিত করতে হবে। গণমাধ্যমকর্মী আইন যত বড় হবে, বিপদ তত বাড়বে। আইনের প্রথম ধারাতেই থাকতে হবে যে, এই আইনকে অবশ্যই ডিজিটাল ও ডাটা সিকিউরিটি অ্যাক্টের আওতামুক্ত রাখতে হবে। প্রস্তাবিত আইনে ৫৪টি ধারা রয়েছে। এটাকে ১০-১৫ ধারার মধ্যে কীভাবে আনা যায়, সেটা ভাবতে হবে। একই সাথে এই আইনের সংশোধিত কাঠামো তৈরিতে অংশীজনদের সমন্বয়ে  একটি কমিটি গঠনের পরামর্শ দিলেন তিনি।

গ্লোবাল টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইনের লক্ষ্য গণমাধ্যমকর্মীদের কল্যাণ, চাকরির শর্ত ও কর্মপরিবেশসহ গণমাধ্যমকর্মীদের আইনি সুরক্ষা দেওয়া। কিন্তু প্রস্তাবিত আইনে এমন কিছু ধারা রয়েছে, যার ফলে গণমাধ্যমকর্মীরা বিভিন্নভাবে নিগ্রহের শিকার হবেন। রাষ্ট্র ও সরকারের নিজের বিকাশের স্বার্থে এই আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার জরুরি। এই আইনের সংশোধনী আদায়ে সম্মিলিত ও সমন্বিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব ও নাগরিক টিভির বার্তা প্রধান দীপ আজাদ বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমের মালিকপক্ষ আইনটি না করার ব্যাপারে সেতুমন্ত্রীকে বলেছেন। কিন্তু আমরা আইনটি চাই। তবে এই আইনের বেশকিছু ধারায় সংশোধন প্রয়োজন। অন্যথায় সংবাদমাধ্যমকে দুর্বল করবে এই আইন। তাই সংশোধনী ছাড়া এই আইন পাসের বিপক্ষে আমাদের অবস্থান।’

এছাড়া সংলাপে এ্যাটকো, এডিটরস গিল্ড, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, রিপোর্টার্স ইউনিটি, সাব এডিটরস কাউন্সিল, টিসিএ এবং প্রডিউসারস এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিসহ সংবাদমাধ্যম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।



বিষয়: #



আর্কাইভ