শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১
Swadeshvumi
বুধবার ● ২২ মার্চ ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » অনিয়ম হলে সংসদ নির্বাচনও বাতিল করবে কমিশন: ইসি রাশেদা
প্রচ্ছদ » জাতীয় » অনিয়ম হলে সংসদ নির্বাচনও বাতিল করবে কমিশন: ইসি রাশেদা
২৭৫ বার পঠিত
বুধবার ● ২২ মার্চ ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

অনিয়ম হলে সংসদ নির্বাচনও বাতিল করবে কমিশন: ইসি রাশেদা

---

বিশেষ প্রতিনিধি

নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেছেন, ‘নির্বাচনে ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেননি- এই ধরনের অভিযোগ আর নির্বাচন কমিশন শুনতে চায় না। আমরা স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, ভোটারদের আস্থা ফেরানোর কাজ চলছে। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যা যা প্রয়োজন, আমরা সব ব্যবস্থা নেবো। আমাদের একটাই মেসেজ- অনিয়ম হলে গাইবান্ধার উপনির্বাচনের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচনও বাতিল করে দেয়া হবে।’ গতকাল বুধবার (২২ মার্চ) নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

ভোটে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে কমিশনের কী পদক্ষেপ রয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আস্থা বিষয়টি তো মানসিক। কে কীভাবে আস্থা পাবে, তা তো আমরা বলতে পারবো না। তবে আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর এমন কোন কাজ করিনি যে, কেউ আস্থায় আসবে না। আমরা গাইবান্ধার উপনির্বাচনে সে প্রমাণ দিয়েছি।

রাশেদা সুলতানা আরও বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধার মতোই অনঢ় অবস্থানে থাকবে কমিশন। আইন সংস্কারে ইসি যেসব পরিবর্তন চেয়েছে, তার কিছুই কাটছাঁট হয়নি। সংশোধিত আইন পাস হলেই তা সুষ্ঠু নির্বাচন সহায়ক হবে। ভোটারদের আস্থা ফেরানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শতভাগ বিতর্কমুক্ত নির্বাচন করা অসম্ভব ব্যাপার। তারপরও আইন প্রয়োগের মানসিকতা ইসির আছে। আইন ক্ষমতা দিলে সংসদ নির্বাচন স্বচ্ছ না হলে বাতিল করে দেবে কমিশন।’

নির্বাচনে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার বিষয়ে কমিশনার রাশেদা বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা বসানোর সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়নি। সরকারের কাছ থেকে বাজেট পেলে কমিশন ৩শ’ আসনে আমরা সিসি ক্যামেরা বসাতে চাই। তবে আসছে পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে। ভোটগ্রহণ করা হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।

দাতা সংস্থাগুলোর কোন সহায়তা জাতীয় নির্বাচনে নেবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘বিদেশি বন্ধু রাষ্ট্র বা দাতা সংস্থার পক্ষ থেকে ভোটের কারিগরি সহয়তা নেওয়ার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য কোন সহযোগিতা প্রয়োজন হলে বিবেচনা করবে কমিশন। সেরকম যদি হয়, আমাদের তো নিতে অসুবিধা নেই। তবে কে কী দেবে বা কীভাবে হবে সেটা আগে দেখতে হবে। সময়মতো সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পরিচয়হীনদের এনআইডি সরবরাহের বিষয়ে রাশেদা সুলতানা বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাদের একটি কমিটি কাজ করছে। কীভাবে তাদের এনআইডি দেওয়া যায়, তা নিয়ে পরিকল্পনা ইসির রয়েছে।

এদিকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) ভোট বাতিলের ক্ষমতাসংক্রান্ত সংশোধনী প্রস্তাবে আইন মন্ত্রণালয়ের সায় মিলেছে বলে জানিয়েছে ইসি। এর ফলে ভোটে অনিয়ম করে কেউ জয়ী হয়ে হলে এবং সেই নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ হওয়ার পরও তা বাতিলের ক্ষমতা পেতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছিলেন, ‘নির্বাচনে অনিয়ম হলেও ফলাফলের গেজেট হওয়ার পর আরপিওতে কিছু করার ক্ষমতা নেই কমিশনের। এই ক্ষমতা পাওয়ার জন্যই আমরা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) ভোট বাতিলের ক্ষমতা সংক্রান্ত সংশোধনী প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আইন মন্ত্রণালয়ের যারা বৈঠকে ছিলেন তারা নির্বাচন কমিশনের জাস্টিফিকেশনে খুশি। তারা বলেছেন, কোন অসুবিধা নেই। এখন কেবিনেটে যাবে। পরে পাস হবে সংসদে।’

২০২২ সালের ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণের পর সিইসি প্রথমে ৫০টি কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেন। এরপর রিটার্নিং কর্মকর্তাও একটি কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেন। একপর্যায়ে ভোটগ্রহণের যৌক্তিকতা না থাকায় পুরো নির্বাচন স্থগিত করে দেয় ইসি। এরপর অনিয়মের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি ৬৮৫ জনের শুনানি নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের সত্যতা পায় ৫১টি কেন্দ্রে। এছাড়া অবশিষ্ট কেন্দ্রগুলোর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেও অনিয়মের প্রমাণ পায় তদন্ত কমিটি। পরে সেই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গাইবান্ধার এক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, পাঁচ এসআই, নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ ১৩৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বরখাস্তসহ বিভিন্ন শাস্তির সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। পরবর্তীতে গত ৪ জানুয়ারি নতুন করে ওই আসনে উপনির্বাচনে পুনরায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়।



বিষয়: #



আর্কাইভ