শিরোনাম:
ঢাকা, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
Swadeshvumi
রবিবার ● ৪ জুন ২০২৩
প্রচ্ছদ » আন্তর্জাতিক » সিডনির মঞ্চে বাংলাদেশের পালাগান ও মঞ্চনাটক
প্রচ্ছদ » আন্তর্জাতিক » সিডনির মঞ্চে বাংলাদেশের পালাগান ও মঞ্চনাটক
৪৫৪ বার পঠিত
রবিবার ● ৪ জুন ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সিডনির মঞ্চে বাংলাদেশের পালাগান ও মঞ্চনাটক

বাংলাদেশি নাট্যদল নাটনন্দনের পরিবেশনা পালাগান ‘বিষ পবনের গীত’ এর একটি দৃশ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির হার্স্টভিল সিভিক থিয়েটারে মঞ্চ মাতাচ্ছে বাংলাদেশি নাট্যদল নাটনন্দন। বাংলাদেশ কালচারাল থিয়েটারের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গতকাল শনিবার ( জুন) সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে দলটি মঞ্চস্থ করে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী গ্রামবাংলার  পালাগানের আসরবিষ পবনের গীত’।

একসময় গ্রামবাংলার রূপরস আর ঐতিহ্য ছিল পালাগান। গায়ে হলুদে এবং বিয়ের অনুষ্ঠানে এসব গানের প্রচলন ছিল। অথচ সেই পালাগান এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। সিডনিবাসীদের জন্য সেই পালাগান পরিবেশন করে বাংলাদেশের থিয়েটার নাটনন্দনের শিল্পীরা। পালাগানে পালাকারের ভূমিকায় ছিলেন নাটনন্দনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আসমা আখতার লিজা, তার সহযোগী ছিলেন বিশিষ্ট অভিনেত্রী সুরভী রায়, সঙ্গীতে ছিলেন বাউল শিল্পী মনিকা দেওয়ান, বাদ্যযন্ত্রে সায়েম মুর্শেদ এবং মঞ্চ ও আলোক পরিকল্পনায় ছিলেন ফয়েজ জহির।

বাংলাদেশি নাট্যদল নাটনন্দনের পরিবেশনা পালাগান ‘বিষ পবনের গীত’ এর একটি দৃশ্য

আজ জুন একই মঞ্চে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে প্রদর্শিত হবে নাটনন্দন নাট্যদলের ১১তম প্রযোজনানারী রাক্ষসী এই নাটকটির রচনা নির্দেশনা দিয়েছেন আসমা আখতার লিজা। এই নাটকের নানা দিক নিয়ে ফোনে স্বদেশভূমির প্রতিবেদকের সাথে তার কথা হয়। আসমা আখতার লিজা জানান, নারী রাক্ষসীআমাদের সমাজব্যবস্থায় নারীদের বাস্তব অবস্থা তুলে ধরার লক্ষ্যেই এই নাটকের অবতারণা। মূলত, নারীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, ধর্ষণের শিকার হচ্ছে- এই সভ্য সমজের সদস্যদের দ্বারাই। আমরা বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সংস্কৃতিতে এগিয়ে যাচ্ছি কিন্তু নারী-অধিকারের ক্ষেত্রে নারীর অবস্থান সমাজের একেবারে নিচুস্তরে। প্রতিদিনের খবরের কাগজের শিরোনামে নারী শিশু ধর্ষণের চিত্রটি ভেসে ওঠে। এই দৃশ্যে যেন আমরা প্রতিদিন অভ্যস্থ হয়ে যাচ্ছি প্রতিদিনের জীবনযাপনের মতো। এর কোন প্রতিবাদ নেই, নেই প্রতিকার, নেই প্রতিরোধ। মেয়ে শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ন বাড়ছে মহামারিসংক্রান্ত মতো। তবুও নীরব দর্শক হিসেবে তাকিয়ে আছি প্রশাসনের দিকে। প্রশাসন দেখেও যেন কিছু দেখেতে পায় না, কারণ আইনতো অন্ধ। তাই ধর্ষণকারী নির্যাতনকারীরা তাদের বিষদাঁত বের করে উপহাসের হাসি হাসছে, জুতা মারছে বর্তমান আধুনিক সভ্যতার মুখে। আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা আইনের নাকের ডগায় ঘুরে বেড়াচ্ছে রাজার মতো। অপরাধের পর অপরাধ বিষাক্ত করে তুলেছে মানুষের জীবনযাপন।

বাংলাদেশি নাট্যদল নাটনন্দনের প্রযোজনা ‘নারী ও রাক্ষসী’ নাটকের দৃশ্য

আসমা আখতার লিজা আরও জানান, এই নাটক সমাজের নির্যাতিত নারীদের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে নির্মিত। এই নাটকে যে ছয়টি নারী চরিত্র দেখানো হয়েছে তাদের প্রত্যেকের সাথেই আমি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাদের জীবন দেখেই আমি এই নাটক নির্মাণে অনুপ্রাণিত হয়েছি। এখানে দেখানো হয়েছে, পারিপার্শ্বিক অবস্থা একটা মেয়েকে কীভাবে পতিতা বানিয়ে দেয়। কীভাবে একটা মেয়ে নির্যাতিত, ধর্ষিত হয় দিনের পর দিন। মিথ্যে ধর্মের বেড়াজালে কী করে আটকে দেয়া হয় একটা মেয়ের স্বাধীনতা। অথচ এই সমাজ, এই দেশ, এই আইনের কাছে তারা কোন বিচার পায় না। এই বিচারহীন প্রক্রিয়ার ভেতর থেকে নির্যাতিত হতে হতে তারা একসময় প্রতিবাদী হয়ে ওঠে, বুঝে নেয় জীবনের অধিকার। পৃথিবীর সকল নারী ন্যায্য অধিকার পাক। সুন্দর হোক এই পৃথিবী, পৃথিবীর অধিকার থাক। সুন্দর হোক এই পৃথিবী, এই স্বপ্ন। এই নাটকের মাধ্যমে প্রত্যাশা- পৃথিবীর সব নির্যাতিত নারীদের পায়ের অদৃশ্য শিকল খুলে যাক, মুক্তি পাক সকল নারী, অন্ধকার মুক্ত হোক আমাদের সমাজ।

বাংলাদেশি নাট্যদল নাটনন্দনের প্রযোজনা ‘নারী ও রাক্ষসী’ নাটকের দৃশ্য

তাই সময়োপযোগী, সময় সমাজের দর্শন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে এই নাটককে। সকলের নীরবতা নির্বাক করে দেয় মানুষের বিবেক সেই সময় নাটকের দৃশ্যায়নে উঠে আসে- কী করে একটি শিশুকে বিক্রি করে দেয়া পতিতালয়ে, তারপর এক হাত থেকে অন্য হাত, পতিতাপল্লী থেকে শেষ ঠিকানা ফুটপাত। মানসিক বিকারগ্রস্ত পুষ্প অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে। রাতের অন্ধকারে ফুটপাতে জন্য দেয় একটি কন্যাশিশু। একটি কুকুর ছাড়া আর কেউ শুনতে পায়না তার আর্তনাদ নিজের সম্ভানকে আগলে রাখতে চায় সব বিপদ থেকে যেন ধর্ষিত, নির্যাতিত হতে না হয় তার মতো। সে চায় তার সম্ভান যেন তার পরিপূর্ণ অধিকার নিয়ে সমাজে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু সমাজের চিত্র ভিন্ন। মানুষরূপী পুরুষগুলো প্রতিমুহুর্তে ছিঁড়ে খেতে চায় তার (মেয়ে) ছোট্ট প্রজাপতিকে। মাখা তুলে দাঁড়াতে দিতে চায় না। তবুও সংগ্রাম করে সমালের সাথে বাঁচতে চায় প্রজাপতি। নিজের কাছে জানতে চায় যে তার বাবা কে, কী তার পরিচয়। পরিচয়হীনতার গ্লানি তাকে আরো সাহসী করে তোলে, বাঁচতে শেখায় নতুন একজন মানুষ, যার অবয়ব পুরুষের মতো হলেও ভেতরটা সম্পূর্ণ মানুষ। শেষ পর্যন্ত সমাজকে বদলে দেওয়া স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যায় পুষ্প মেয়ে প্রজাপতি, ডাক দেয় প্রতিবাদের।

---

নাটকে বিভিন্ন দৃশ্যপটে ১২টি চরিত্রে অভিনয় করেছেন আসমা আক্তার লিজা, সুরভী রায় সায়েম মুরশেদ। মিউজিক করেছেন মনিকা দেওয়ান সায়েম মুরশেদ। সেট ডিজাইন আলোক নির্দেশনা দিয়েছেন ফায়েজ জহির।

নাটনন্দন দলেরনারী রাক্ষসীনাটকটি এর আগে ২০১৮ সালে লন্ডনের সিজন অব বাংলা ড্রামা নাট্যোৎসব, ২০১৯ সালে বাংলাদেশের এডওয়ার্ড এমন কেনেডি (ইএমকে) সেন্টার, চট্টগ্রামে নাটনন্দন নাট্যোৎসবসহ বেশকিছু স্থানে প্রদর্শিত হয়েছে।



বিষয়: #



আন্তর্জাতিক এর আরও খবর

নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনালাপে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিলেন ড. ইউনূস নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনালাপে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিলেন ড. ইউনূস
আপনারা হতাশ হবেন না, আমি শিগগিরই দেশে ফিরব : শেখ হাসিনা আপনারা হতাশ হবেন না, আমি শিগগিরই দেশে ফিরব : শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের মতো পরিস্থিতি হতে পারে ভারতেও বাংলাদেশের মতো পরিস্থিতি হতে পারে ভারতেও
শক্তিশালী গণতন্ত্রের জন্য লিঙ্গ সমতা অপরিহার্য: স্পিকার শক্তিশালী গণতন্ত্রের জন্য লিঙ্গ সমতা অপরিহার্য: স্পিকার
একাত্তরের মতো ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত: প্রণয় ভার্মা একাত্তরের মতো ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত: প্রণয় ভার্মা
এদেশের নির্বাচন পদ্ধতি কেমন জানতে চেয়েছে কমনওয়েলথ এদেশের নির্বাচন পদ্ধতি কেমন জানতে চেয়েছে কমনওয়েলথ
জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে ইইউ জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে ইইউ
স্পিকার’স সামিটে যোগ দিতে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের সংসদীয় প্রতিনিধিদল স্পিকার’স সামিটে যোগ দিতে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের সংসদীয় প্রতিনিধিদল
বাংলাদেশে নির্দিষ্ট সময়েই নির্বাচন চায় ভারত বাংলাদেশে নির্দিষ্ট সময়েই নির্বাচন চায় ভারত
কাগজবিহীন আন্তঃবাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: থাইল্যান্ডে বাণিজ্য সচিব কাগজবিহীন আন্তঃবাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: থাইল্যান্ডে বাণিজ্য সচিব

আর্কাইভ