শনিবার ● ১০ জুন ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত বরিশালের প্রার্থীরা
শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত বরিশালের প্রার্থীরা
বরিশাল সিটি নির্বাচন
* আজ মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে প্রচারণা
* শহরে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ
* ১২৬টি কেন্দ্রের ১০৬টি ঝুঁকিপূর্ণ
শাহনাজ পারভীন এলিস, বরিশাল থেকে
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণের বাকি আন মাত্র ১ দিন। প্রার্থীদের ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে গোটা নগরী। ভোট প্রার্থনা করে প্রার্থীর পক্ষে স্লোগান, মাইকিংএ মুখর নগরীর সব পাড়া-মহল্লা। শনিবার শেষ দিনে ভোর থেকেই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছোটেন প্রার্থীরা। দিচ্ছেন নগর উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি।
বরিশাল সিটির নির্বাচনি প্রচারণায় শেষ মুহূর্তে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে প্রচারে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী যুবলীগের নেতাকর্মীরা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট চাচ্ছেন তারাও। কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা, স্থানীয় নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে একেক টিম একেক এলাকায় যাচ্ছেন, সরকারের উন্নয়ন অর্জন জনগণের কাছে তুলে ধরছেন।
বরিশালে এবার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাতজন। মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের আবদুল্লাহ (নৌকা), জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম (হাতপাখা), জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামরুল আহসান (ঘড়ি), আসাদুজ্জামান (হাতি) ও আলী হোসেন (হরিণ)। আর ৩০টি সাধারণ কাউন্সিলর পদের বিপক্ষে লড়ছেন ১৪২ জন প্রার্থী। এছাড়া সংরক্ষিত ১০ ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন ৪২ জন।
মেয়র পদে প্রার্থীর সংখ্যা ৭ হলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন তিনজন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের আবদুল্লাহ, জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম। এবার স্বামীর নির্বাচনি প্রচারে নেমে ভিন্ন রকম সাড়া ফেলেছেন তিন মেয়র পদপ্রার্থীর স্ত্রীরা। তাদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহর স্ত্রী লুনা আবদুল্লাহ, জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেনের স্ত্রী ইসমত আরা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসানের স্ত্রী হুমায়রা মিরাজ। তারা দিন-রাত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। মেয়র পদপ্রার্থী স্বামীর জন্য ভোট প্রার্থনা করছেন, বিশেষ করে নারীদের নিয়ে আলাদা সভা-সমাবেশের পাশাপাশি মতবিনিময় সভা করে ভোটের মাঠে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন।
এদিকে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ব্যাপক পরিস্থিতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শনিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে জানান, সিটি করপোরেশন এলাকায় যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঢেলে সাজানো হয়েছে পুরো নগরীর নিরাপত্তা ব্যাবস্থা। এরই ধারাবাহিকতা বহিরাগতের শনিবার রাত ১২টার মধ্যে ছাড়তে হবে বরিশাল সিটি। তা নাহলে বহিরাগতের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
5১১
এদিকে নির্বাচন পরিবেশ ঠিক রাখতে এবং বরিশাল শহরে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে চারটি স্পটে চেকপোস্ট বসিয়েছে র্যাব। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ১০ প্লাটুন বিজিবিসহ অন্তত সাড়ে ৫ হাজার সদস্য মাঠে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি ভোটের মাঠে ১৬ স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন রয়েছে তাদের।
নির্বাচনি প্রচারণার জন্য নগরীতে যারা রয়েছেন তাদের বিষয়ে সাইফুল ইসলাম বলেন, আইন সবার জন্য সমান। চিকিৎসার মতো বৈধ কারণ না থাকলে আমরা কাউকে থাকতে দেবো না। গত এক সপ্তাহে বেড়াতে আসা স্বজনদের বাড়িতে ফেরত পাঠানোর জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি ।
তিনি আরও জানান, বরিশাল সিটিতে মোট ১২৬টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০৬টিই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সেই অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিয়মিত ভোটকেন্দ্রে ১৮ সদস্যের পুলিশ টিম এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৯ সদস্যের পুলিশ টিম মোতায়েন থাকবে বলে জানান বিএমপি প্রধান। তিনি আরো জানান, নির্বাচনের দিন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মোট ১০টি প্লাটুন মোতায়েন থাকবে। কোনো ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি করতে নয়, বরং নির্বাচনের জন্য উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় রাখতে তৎপর রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
বরিশাল সিটিতে ভোটগ্রহণ হবে ১২ জুন। এই সিটিতে মোট ভোটার ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। ভোট কেন্দ্র ১২৬ টি। গড়ে প্রতিটি কেন্দ্র গড়ে ৪৪ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।
বিষয়: #শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত বরিশালের প্রার্থীরা