রবিবার ● ১১ জুন ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » দুই সিটিতে কাল ভোটযুদ্ধ, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন
দুই সিটিতে কাল ভোটযুদ্ধ, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন
বরিশাল ও খুলনা সিটি নির্বাচন
* লড়াই হবে নৌকা, পাখা ও লাঙলে
* নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা দুই সিটি এলাকা
* আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশি জোরদার
* সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ ভোটের প্রত্যাশা ইসি’র
শাহনাজ পারভীন এলিস (বরিশাল থেকে)
রাত পোহালেই বরিশাল ও খুলনা নগরীতে ভোট উৎসব। ভোটকে কেন্দ্র করে দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে পুলিশের কড়া নজরদারি। মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট, চলছে তল্লাশি। সোমবার সকাল ৮টা থেকে দুই সিটিতে একযোগে শুরু হবে ভোটগ্রহণ, চলবে বিকেল। ভোটগ্রহণ করা হবে (ইভিএম) ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে। এদিকে ভোট অনুষ্ঠানের জন্য রোববার বিকেল ৫টার মধ্যেই সব কেন্দ্রে পৌঁছানো হয়েছে নির্বাচনি সব সরঞ্জাম। সুষ্ঠু ভোটের জন্য ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্ততি নিয়ে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা। এরই মধ্যে ভোটের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া গাজীপুর সিটি নির্বাচনের চেয়েও এই দুই সিটিতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটের প্রত্যাশা করছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে কেউ অনিয়ম করলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কমিশন।
বরিশাল সিটিতে ভোটের প্রস্তুতি
বরিশাল সিটিতে ভোটগ্রহণের জন্য রোববার সকাল থেকেই জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে প্রতিটি কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে নির্বাচনি সরঞ্জাম বুঝিয়ে দেয়া হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের জানান, প্রথমবারের মতো এবার বরিশালের সবগুলো কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হচ্ছে। ইভিএমে ভোট দেওয়ার বিষয়ে প্রতীক বরাদ্দের পরই প্রতিটি ওয়ার্ডে একটানা ভোটারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এতে ভোটারদের মধ্যে বেশ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। আশা করছি, কেন্দ্রে ভোটার সমাগম ঘটবে এবং সুষ্ঠু পরিবেশে তারা ভোটে দেবেন।
তিনি আরও জানান, ১২৬টি কেন্দ্রের ৮৯৪টি বুথের জন্য দেড় হাজার ইভিএম রাখা হয়েছে। সকাল থেকে ইভিএমসহ নির্বাচনি সামগ্রী প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুঝে নেওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে স্ব স্ব কেন্দ্রে চলে যাবেন প্রিজাইডিং অফিসাররা। এছাড়া ১২৬টি ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রায় ১ হাজার ২০০ সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রোববার সকাল থেকে বরিশাল নগরের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে চলে টহল পুলিশ তল্লাশি। এছাড়া রহমতপুর, নতুল্লাবাদ বাসটার্মিনাল, রুপাতলিসহ শহরের মূল প্রবেশদ্বারগুলোতে বসানো হয়েছে পুলিশি চেকপোস্ট। সন্দেহজনক কাউকে দেখলে জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি করতে দেখা গেছে। নগরজুড়ে বিজিবির টহল দেখা গেছে। বহিরাগতদের নগরী ছাড়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন। গোটা নির্বাচনি এলাকাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলতে সাড়ে ৪ হাজার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম। অপরদিকে প্রতি কেন্দ্রে ১২ জন করে আনসার সদস্য মিলিয়ে ১ হাজার ৫১২ জন আনসার সদস্য কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া র্যাবের ১৬টি টিম স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেব কাজ করছে। পাশাপাশি ১০ প্লাটুন বিজিবি, ৩০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১০ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানিয়েছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
কখন কোন কেন্দ্রে ভোট দেবেন মেয়র প্রার্থীরা
বরিশাল সিটিতে মোট ভোটার ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮। এই সিটিতে ভোট যুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৬৭ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৮ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৪২ জন। ভোটের শুরুতেই প্রার্থীরা সবাই নিজ নিজ কেন্দ্রে ভোট দেবেন। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত নগরীর কালিবাড়িরোডস্থ সরকারি বরিশাল কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেবেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস গোরস্থান রোডের সৈয়দ আব্দুল মান্নান ডিডিএফ আলিম মাদরাসা কেন্দ্রে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রার্থী মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বরিশাল নগরীর রূপাতলী হাউজিং আ. রব সেরনিয়াবাত মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে, জাকের পার্টির গোলাপফুল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান বাচ্চু ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের চহুতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেবেন। টেবিলঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন কালুশাহ সড়কের আলেকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে, হরিণ প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো. আলী হোসেন হাওলাদার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের চহুতপুর ইস্কান্দার শরীফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো. আসাদুজ্জামান বরিশাল নগরীর সদররোডের সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেবেন।
এদিকে ভোটের আগের দিন ক্ষমতাসীনরা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার নীল নকশা করেছে- এমন অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) লাঙল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস। রোববার (১১ জুন) সকাল ১০টায় নগরের অক্সফোর্ড মিশন রোডে তার প্রধান নির্বাচনি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তাপস বলেন, ২০১৮ সালে এ বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একটি নগ্ন ভোট ছিনতাই, ভোট চুরির নাটক হয়েছিল। সেখানে ক্ষমতাসীন যে দল ছিল সেই দলই, যেই পরিবার ছিল সেই পরিবারই এবং যেই সরকার ছিল সেই সরকারেরই মানুষ ২০২৩ এর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। তাদের কার্যকলাপে আমার মনে হয়েছে যে, তারা ১২ জুনের নির্বাচনও তারা ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতো করতে চাচ্ছে।
তাপস আরও বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা নির্বাচনে তাদের পক্ষে নেওয়ার জন্য অপচেষ্টা, ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত, অশুভ তৎপরতা করছে তা জাতি মানতে পারছে না। তাই গণমাধ্যমের কাছে অনুরোধ নির্বাচন যেন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়। অনুরোধ করছি যেসব আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা বরিশালে রয়েছেন তারা যেন অবিলম্বে শহর ছেড়ে যান। যেসব এমপি, পাশের থানা-জেলা উপজেলার চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়ররাও যেন অবিলম্বে বরিশাল ত্যাগ করেন। তা না হলে নির্বাচন নিয়ে আমি খুবই শঙ্কিত, সুষ্ঠু হবে বলে মনে হচ্ছে না। একজন বিশেষ প্রার্থীকে বাঁচানো কিংবা পাশ করার জন্য এ জাতির ওপর যেন অশুভ কাজ চাপিয়ে না দেওয়া হয়। আমি বিশ্বাস করতে চাই এখানে স্থানীয় প্রশাসনের অপতৎপরতা চলছে।
নগরীর সদররোডস্থ আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনি কার্যালয়ে রোববার বেলা দেড়টায় সংবাদ সম্মেলন করেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত)। এসময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘দল-মত নির্বিশেষে সকল মানুষ আমাকে স্বতস্ফূর্তভাবে ভোট দিবে। বিএনপির সমর্থকরাও মনে করছে আমাকে ভোট দিতে পারলে নগরবাসী সেবা পাবে। বিজয়ী হলে বরিশালের উন্নয়ন করার নিশ্চয়তা আমি দিয়েছি। এসময় নির্বাচনের পরিবেশ ও প্রতিপক্ষ প্রার্থীর বিভিন্ন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেহেতু আমি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকতেই পারে, করতেই পারে। কিন্তু আমার দৃষ্টিতে সবকিছু স্বাভাবিক ও চমৎকার পরিবেশ দেখতে পাচ্ছি। এখানে কোন অস্বাভাবিক কিছু দেখতে পাচ্ছিনা। অভিযোগ যে কেউ করতে পারে। কোন বিষয়ে আমি পাল্টা জবাবও দিতে চাই না। তবে আমি বলবো নির্বাচনের পরিবেশটা ভালো আছে। ইনশাআল্লাহ এখানে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। ভোটের জন্য বস্তিতে অর্থবিতরণ, সিটিতে বহিরাগতদের বিচরণসহ জাতীয় পার্টির প্রার্থীর তোলা বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ সঠিক নয়।
খুলনা সিটিতে ভোটের প্রস্তুতি
ভৈরব-রূপসা-পাড়ের শহর খুলনা শহরেও নেওয়া হয়েছে ভোট অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি। এই সিটিতেও সোমবার(১২ জুন)সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। ভোটগ্রহণ করা হবে (ইভিএম) ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে। ভোট অনুষ্ঠানের জন্য গতকাল রোববার বিকেল ৫টার মধ্যেই সব কেন্দ্রে পৌঁছানো হয়েছে নির্বাচনি সব ধরনের সরঞ্জাম।
১৯৮৪ সালের ১০ ডিসেম্বর সিটি কর্পোরেশন হওয়ার পর এটি হবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) ৬ষ্ঠ নির্বাচন। দেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করলেও নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতায় কোন কমতি রাখেনি নির্বাচন কমিশন।
খুলনা সিটির এবারের নির্বাচনে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো অংশ না নিলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি (জাপা), ইসলামী আন্দোলন, জাকের পার্টি অংশ নিচ্ছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ নির্বাচনকে ঘিরে সব মহলের নজর এখন খুলনার দিকে। কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫ প্রার্থী। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের তালুকদার আব্দুল খালেক (নৌকা), জাপার শফিকুল ইসলাম মধু (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আব্দুল আউয়াল (হাতপাখা), জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন (গোলাপ ফুল) ও স্বতন্ত্র এসএম শফিকুর রহমান মুশফিক (দেয়াল ঘড়ি)।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে পরাজিত করে মেয়র হয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের খালেক এবারও দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে লড়বেন। তার বিপরীতে নেই শক্ত কোন প্রতিদ্বন্দ্বী।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনে ৩১টি ওয়ার্ড রয়েছে। এছাড়াও সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে ১০টি। এর মধ্যে ১৩ ও ২৪নং সাধারণ ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দুই জন কাউন্সিল নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ২৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে শুধু কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৭৫ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ২৮৯টি, আর ভোটকক্ষ রয়েছে ১৭৩২টি। এবারের নির্বাচনে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন ও পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন। এবারই প্রথম সবকটি কেন্দ্রেই ইভিএমে ভোট নেওয়া হবে।
গণনা শেষে ফল ঘোষণা হবে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে স্থাপিত ইসির নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে। নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. আলাউদ্দীন। ৪৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি
কেসিসি’র নির্বাচনকে ঘিরে খুলনা সিটিতে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ৪ হাজার ৮২০ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে নিয়মিত পুলিশ ৪ হাজার ৫২০ জন। আর ৩ শ আর্মস পুরিশ ব্যাটেলিয়ন। সেই সঙ্গে ৩ হাজার ৪৬৮ জন আনসার সদস্যও মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া ১৬ প্লাটুন বিজিবি, ২ কোম্পানি র্যাব নির্বাচনের কাজে সহযোগিতা করছে। পাশপাশি ৩১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রতি কেন্দ্রে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ১৭ জন পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। মাঠে রয়েছে ৭১টি মোবাইল টিম। প্রতি ৩ কেন্দ্রের জন্য একটি করে মোট ২০টি মোটরসাইকেল টিম থাকছে। তার মধ্যে ২টি মোটরসাইকেলে ৪ জন করে বিভিন্ন এলাকায় ক্রস পেট্রোল ডিউটি করছে। আর স্ট্যান্ডবাই পার্টি থাকছে ২০টি। রিজার্ভ ফোর্স থাকবে ৫টি দলে বিভক্ত হয়ে। প্রতি টিমে থাকছে ৫৫ জন করে। এর মধ্যে ৩৫ জন পুলিশ ও ২০ জন ব্যাটালিয়ন সদস্য।
খুলনা সিটি করপেরেশনে সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ১৫ মে। সেই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক ধানের শীষ প্রতীকের বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে পরাজিত করে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন।
ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে কমিশনের বক্তব্য
দুই সিটি ভোট প্রসঙ্গে রোববার (১১ জুন)দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অবঃ) জানান, গাজীপুর সিটি নির্বাচনের চেয়েও বরিশাল ও খুলনা সিটিতে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটগ্রহণ হবে বলে আশা প্রকাশ করছে কমিশন। নির্বাচনে কেউ কোন অনিয়ম করলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। জানান, তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনে বিধি-বিধান প্রতিপালনে আমাদের অবস্থান কঠোর ছিল। খুলনা ও বরিশাল সিটি নির্বাচনের প্রতিটি পদক্ষেপেই আমরা সুতীক্ষণ্ণ নজর রাখছি। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ভোটের দিনও আমরা সরাসরি সিসি ক্যামেরায় এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবো।
আহসান হাবিব আরও জানান, নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমাদের নির্দেশনা প্রশাসন, পুলিশ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা শতভাগ পালনের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। আমাদের বার্তা স্পষ্ট ছিল, আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করেছি, এবং নির্বাচন প্রচারণায় অনিয়ম এবং বিশৃঙ্খলা করলে কোন ধরনের ছাড় দেইনি। নির্বাচনি দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধে চেকপোস্ট বসিয়ে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
===
বিষয়: #দুই সিটিতে কাল ভোটযুদ্ধ #সব প্রস্তুতি সম্পন্ন