শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
Swadeshvumi
সোমবার ● ১৯ জুন ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » দুই সিটিতে আজ মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে প্রার্থীদের প্রচারণা
প্রচ্ছদ » জাতীয় » দুই সিটিতে আজ মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে প্রার্থীদের প্রচারণা
১৯৪ বার পঠিত
সোমবার ● ১৯ জুন ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

দুই সিটিতে আজ মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে প্রার্থীদের প্রচারণা

রাজশাহী-সিলেট সিটি নির্বাচন

---

শাহনাজ পারভীন এলিস

আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। দুই সিটি নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন আজ। মধ্যরাত থেকে এই দুই সিটিতে গণসংযোগ, নির্বাচনি মাইকিংসহ সব ধরনের প্রচার বন্ধ থাকবে।

তাই শেষ সময়টাতে ভোটারদের কাছে ছুটছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। রাজশাহী সিটিতে মেয়র পদে লড়ছেন চার জন। এ ছাড়া নগরীর ৩০ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর ১১২ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ৪৬ জন।

শেষদিন সকাল থেকে গণসংযোগ করছেন রাজশাহীর জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নিয়মিত নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে গণসংযোগ করেছেন। জনগনের দ্বারে দ্বারে গিয়ে উন্নয়নের আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র প্রার্থীরা।

---

এদিকে রোববার সিলেট সিটি নির্বাচনে ২১ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত গণসংযোগ করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। নির্বাচিত হলে সিলেট শহরকে একটি আধুনিক নগরীতে পরিণত করার আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র প্রার্থীরা।

এই সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। রাজশাহী সিটি নির্বাচনে ১৫৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৪৮টিই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গত ২ জুন প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রচারে নামেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ভোটের সময় যত এগিয়ে আসছে ততই বাড়ছে উত্তেজনা। এরই মধ্যে ৩০টি ওয়ার্ডের আটটিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, এমনকি এসেছে প্রাণনাশের হুমকি। তবে কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমনের কথা জানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, নগরীর ১৫৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৪৮টি গুরুত্বপূর্ণ ও সাতটিকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে নির্বাচনে নাশকতাকারীদের কঠোরভাবে দমন করা হবে।

এখন পর্যন্ত কোন প্রার্থী লিখিত অভিযোগ করেননি দাবি করে রাজশাহী সিটি নির্বাচন রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রয়েছে।

---

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনেও মাঠের প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ। প্রচারণার শেষ মুহূর্তের গত কদিন মাঠের বক্তব্যে ছিল উত্তাপ। ছিল ব্যক্তিগত, পারিবারিক বিষয়াদি তুলে ধরে প্রতিপক্ষকে আক্রমণের প্রতিযোগিতাও। ধুম বৃষ্টির মধ্যেও চলছে জমজমাট প্রচারণা।
প্রার্থীরা তাদের সাধ্যমতো প্রচারণায় আছেন। নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে পরপর তিন দফা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গলের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। এরপর বিগড়ে যান নৌকার প্রার্থীসহ কর্মী-সমর্থকরা। এর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের আব্দুল হানিফ কুটুও আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিতে শুরু করেন নৌকার প্রার্থীকে কটাক্ষ করে। কিন্তু এসবের পালটা জবাব না দিয়ে সংযত অবস্থানে নৌকার আনোয়ারুজ্জামান। তিনি বলেন, তারা নাটক করছেন।

সিলেট সিটি নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে বড় ফ্যাক্টর নতুন ভোটাররা। জীবনের প্রথম ভোটে উন্নয়নবান্ধব জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে চান তরুণ ভোটাররা। তরুণদের নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা জানাচ্ছেন প্রার্থীরাও।

এদিকে সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাত মেয়র প্রার্থী। ৪২ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭৩ জন ও সংরক্ষিত কাউন্পসিলর পদে ৮৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন।

সিলেট সিটি নির্বাচনে এবার ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। গতবারের চেয়ে এবার ভোটার বেড়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৭৩ জন। মোট ভোটারের ২০ শতাংশই প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন সিটি নির্বাচনে।

---

তরুণ ভোটার মমিন বলছেন, দল বা কোনো প্রতীক মুখ্য নয় নগরীর উন্নয়নে যারা কাজ করবেন তাদেরকেই ভোট দেবেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সজল বলেন, গত বছর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ডুবেছিল সিলেট। নগরীকে বন্যামুক্ত করতে কার্যকর পরিকল্পনা চাই। কর্মসংস্থানের সুযোগ, পর্যাপ্ত খেলার মাঠ তৈরির পাশাপাশি সিলেটকে সবুজ নগরী হিসেবে গড়ে তোলার দাবি আমাদের। এবারের নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে এই তরুণ ভোটারদের সমর্থন।

এদিকে নৌকার পক্ষের লোকজনের আক্রমণাত্মক বক্তব্যে অনেকটা ধৈর্যহীন হয়ে পড়েন লাঙ্গলের প্রার্থী ও তাদের লোকজন। নৌকার প্রার্থীকে উড়ে এসে জুড়ে বসাসহ নানা আক্রমণ শুরু করেন তারাও।
লাঙ্গলের বাবুল পালটা জবাবে বক্তব্য দেন উদ্বেগের সঙ্গে। বলেন, আমাকে জেলে নেওয়া হোক; খুন, গুম করা হোক; তারপরও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াব না। আমার ব্যাপারে একের পর এক অপপ্রচার রটানো হচ্ছে। মানসিকভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে। যারা নোংরা রাজনীতি করেন, এটা তাদেরই কাজ। আমার শেষ আহ্বান-আসুন নগরবাসী সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকা ডুবাই। বাবুলের জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী, নিত্যসঙ্গী আব্দুস শহীদ লস্কর বশির ব্যক্তি আনোয়ারুজ্জামানকে নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য দিচ্ছেন।
নৌকা ও লাঙ্গলের দুটি পক্ষ যখন মাঠের মরণকামড় প্রচারণায়, তখন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আব্দুল হানিফ কুটু নিজ দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। আনোয়ারুজ্জামানকে লক্ষ করে তার উচ্চমাধ্যমিক পাশের কলেজ নিয়ে প্রশ্ন করে বসেন। কুটুর দাবি, আনোয়ারুজ্জামানের জন্মতারিখও ভুল। তবে আনোয়ারুজ্জামান বলেন, এসব ভুয়া অভিযোগ। কয়েকদিনের এমন পালটাপালটি বক্তব্যের পর নৌকা ও লাঙ্গলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ও উপদেষ্টারা উভয় প্রার্থীকেই সংযত হয়ে বক্তব্য দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। রোববার দুই শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বীর বক্তব্যেও তার কিছুটা প্রতিফলন লক্ষ করা গেছে। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বক্তব্য প্রচারণার শেষভাগে এসে অনেকটা সংযত। জাতীয় পার্টির বাবুলও রোববার বক্তব্য দিয়েছেন অনেকটা সংযত হয়েই। নগরবাসীও শান্তিপূর্ণ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অপেক্ষায়। যার মধ্য দিয়ে একজন যোগ্য মেয়র নির্বাচিত হবেন। প্রকৃত উন্নয়নের মুখ দেখবে নগরী।



বিষয়: #



আর্কাইভ