শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১
Swadeshvumi
সোমবার ● ৩১ জুলাই ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » গত ১ বছরে বিএনপির আয়-ব্যয় দুটোই বেড়েছে
প্রচ্ছদ » জাতীয় » গত ১ বছরে বিএনপির আয়-ব্যয় দুটোই বেড়েছে
১৮৭ বার পঠিত
সোমবার ● ৩১ জুলাই ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

গত ১ বছরে বিএনপির আয়-ব্যয় দুটোই বেড়েছে

---
>আয় বেড়েছে ৫ কোটি ৮ লাখ টাকা
>ব্যয় বেড়েছে ১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
গত তিন বছর পর আয়ের মুখ দেখেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এক যুগেরও বেশি সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির আগের বছরের তুলনায় ২০২২ সালে আয় বেড়েছে ৫ কোটি ৭ লাখ ৯২ হাজার ৭৮৮ টাকা। আর এ সময়ে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৮৬ হাজার ৬৩২ টাকা। দলটির আয়-ব্যয়ের হিসাব বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে উপস্থিত হয়ে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেন।
এতে দেখা যায়, ‘২০২২ সালে বিএনপির আয় হয়েছে ৫ কোটি ৯২ লাখ ৪ হাজার ৬৩২ টাকা। মোট ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৮৮ লাখ ৩৩ হাজার ৮০৩ টাকা। উদ্বৃত্ত ২ কোটি ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮২৯ টাকা। জাতীয় নির্বাহী ও স্থায়ী কমিটির চাঁদা, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান এবং ব্যাংকের এফডিআরের অর্জিত ইন্টারেস্ট আয়ের উৎস বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে।’ হিসাব অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিএনপির আয় হয়েছে ৮৪ লাখ ১২ হাজার ৪৪ টাকা। আর ২০২২ সালে দলটির আয় হয়েছে ৫ কোটি ৯২ লাখ ৪ হাজার ৬৩২ টাকা। অর্থাৎ ১ বছরে আয় বেড়েছে ৫ কোটি ৭ লাখ ৯২ হাজার ৭৮৮ টাকা। পাশাপাশি ২০২১ সালে ব্যয় ছিল ১ কোটি ৯৮ লাখ ৪৭ হাজার ১৭১ টাকা। ২০২২ সালে ব্যয় হয় ৩ কোটি ৮৮ লাখ ৩৩ হাজার ৮০৩ টাকা। সে অনুযায়ী ১ বছরে ব্যয় বেড়েছে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৮৬ হাজার ৬৩২ টাকা।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি। অর্থাৎ ২০১৮ সালে এসে দলটির আয় কয়েক গুণ বেড়ে দাঁড়ায় ১০ কোটিতে। ওই বছর শেষে দলীয় তহবিলে উদ্বৃত্ত ছিল ৬ কোটি টাকা। এরপর ফের আয়ে ধস নামে। ২০১৯ সালে ৮৭ লাখ টাকা, মহামারির মধ্যে ২০২০ সালে সোয়া ১ কোটি টাকা আর ২০২১ সালে ৮৪ লাখ টাকা আয় দেখায় দলটি। এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগের বছর ২০২২ পঞ্জিকা বছরে আয়-ব্যয়ে ফের ঘুড়ে দাড়িয়েছে। প্রায় ৬ কোটি টাকা আয় দেখিয়েছে দলটি। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া বিএনপির আয়-ব্যয়ের হিসাব বলছে, গতবছর দলটি পৌনে চার কোটি টাকার বেশি খরচ করেছে। সব মিলিয়ে এখন ২ কোটি টাকার বেশি স্থিতি রয়েছে তাদের আর্থিক হিসাবে।
ইসিতে হিসাব জমা দেওয়ার পর রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় নির্বাহী ও স্থায়ী কমিটির চাঁদা, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান এবং ব্যাংকের এফডিআরের অর্জিত ইন্টারেস্ট থেকে এ আয় হয়েছে। আর অফিসের বিভিন্ন খরচ, পোস্টার-লিফলেট ছাপানো, বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র বাবদ খরচ, বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণ, নেতাকর্মীদের পরিবারের আর্থিক সহায়তা, ইফতার মাহফিল ও বিবিধ খাতে ব্যয় হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিজেরা জ্বালাও-পোড়াও করে দায়টা চাপায় অন্যের ওপর। সেই পুরোনো পদ্ধতি, সেই পুরোনো রীতি মানুষের ওপর পালটা দায় চাপানো। যেটা তাদের প্রধানমন্ত্রী করেছেন।’
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘অবৈধ শাসকের কথার কোনো ভিত্তি থাকে না। উনি যদি নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হতেন, তাহলে জনগণের কাছে জবাবদিহির একটা ভয় থাকত, সেই ভয় তো ওনার নেই। উনি এবং ওনার সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব যখন যা ইচ্ছা বলছেন। এটা আপনারা নিজেরাই প্রমাণ পেয়েছেন।’
রিজভী বলেন, ‘আমাদের এত বড় মহাসমাবেশ হলো, সেখানে কি আমরা কোনো অশান্তি সৃষ্টি করেছি? হঠাৎ অতর্কিত এসে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করল, বেপরোয়া কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করল, গুলি করা শুরু করল। সবই আপনাদের সামনে হয়েছে।’
শনিবারের কর্মসূচিতে বিএনপি নেতাকর্মীর উপস্থিতি কম থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, ২৫ তারিখের পর থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুলিশ গ্রেফতার অভিযান চালিয়েছে। একদিকে পুলিশ, অন্যদিকে তাদের সম্পূরক শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। এদের মাঝখানেও আমাদের ছেলেরা বীরের মতো দাঁড়িয়ে কর্মসূচি পালন করেছে, আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
কংগ্রেসম্যানদের দেওয়া চিঠির প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘পৃথিবীর গণতন্ত্রকামী মানুষ এটা বুঝতে পেরেছে যে, এ দেশে গণতন্ত্র নেই। গোটা দেশে এখন দমবন্ধ করা পরিবেশ।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আমাদের সংগ্রম চলছে। কারণ, এই সরকারে অধীনে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না।’
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিবন্ধিত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিরীক্ষা করিয়ে দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়। বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টি অডিট রিপোর্ট জমা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ আজ সোমবার (৩১ জুলাই) তাদের ২০২২ পঞ্জিকা বছরের নিরীক্ষিত হিসাব প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৪২টি। আইন অনুযায়ী পরপর তিন বছর দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।



বিষয়: #



আর্কাইভ