শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
Swadeshvumi
সোমবার ● ৩১ জুলাই ২০২৩
প্রচ্ছদ » নির্বাচন » ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসির চিঠি
প্রচ্ছদ » নির্বাচন » ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসির চিঠি
১৭৬ বার পঠিত
সোমবার ● ৩১ জুলাই ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসির চিঠি

সাংবাদিককে পেটানোর হুমকি

---

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

পৌরসভা নির্বাচনে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও নির্বাচনী কাজে বাধা সৃষ্টির কারণে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

রোববার (৩০ জুলাই) ইসির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠি স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে. ‘গত ১৬ জুলাই ভান্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাচনের পূর্বদিন রিটার্নিং অফিসারের সাথে সাংবাদিকদের সভা চলাকালীন হঠাৎ ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সভাকক্ষে প্রবেশ করে উপস্থিত একজন সংবাদকর্মীকে হুমকি প্রদান বা অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পিরোজপুর জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার এবং গণমাধ্যমকর্মীর সাথে একজন জনপ্রতিনিধি উপজেলা চেয়ারম্যানের এহেন ঔদ্বত্যপূর্ণ আচরণ কমিশনের জন্যও বিব্রতকর। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর বিধি ৭৩ (১)(ক)(অ) ও বিধি ৭৩ (২) এবং পেনাল কোড ১৮৬০ এর সেকশন ১৭১এফ অনুসারে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করার সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। উল্লিখিত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর বিধি ৭৩ (১)এর (ক) তে বলা আছে, ‘কোন ব্যক্তিকে কোন নির্বাচনে ভোটপ্রদান করিতে বা উহা হইতে বিরত থাকিতে অথবা নির্বাচনের প্রার্থী হইতে বা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করিতে প্ররোচিত বা বাধ্য করিবার উদ্দেশ্যে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে তিনি নিজে বা তাহার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তির মাধ্যমে (অ) অনুসারে কোন প্রকার শক্তি, ত্রাস বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন বা ভীতি প্রদর্শন করেন। বিধি ৭৩ (২) অনুযায়ী, কোন ব্যক্তি উপ-বিধি (১) এ উল্লিখিত কার্যকলাপের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হইলে তিনি অন্যূন ছয় মাস ও অনধিক দুই বৎসরের কারাদন্ডে বা অর্থদন্ডে বা উভয়দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।’ একইভাবে পেনাল কোড ১৮৬০ এর সেকশন ১৭১এফ বলা আছে, যে কোনও নির্বাচনে ব্যক্তিত্বের অযৌক্তিক প্রভাবের অপরাধ সংঘটিত করে, তাকে এক বছরের জন্য বা জরিমনা বা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবেন।

গত ১৬ জুলাই রাত ৯টার দিকে ভাণ্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার জিয়াউর রহমান খলিফা তার কার্যালয়ে ঢাকা থেকে আগত ইসির বিটের ১০-১২ জন সাংবাদিকের সঙ্গে মতবিনিময় করছিলেন। এ সময় সেখানে আকস্মিকভাবে উপস্থিত হন ভাণ্ডারিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মিরাজুল ইসলাম মিরাজ। সভায় উপস্থিত ইত্তেফাক পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি সঙ্করকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তোকে সারাদিন বেশ কয়েকবার এ কার্যালয়ের এখানে ঘুরতে দেখছি, তোর এখানে কাজ কী? আবার যদি তোকে এখানে দেখি, তাহলে তোকে উপজেলা চত্বরে টাঙ্গিয়ে পেটাব। এ কথার পর সঙ্করকে ওই অফিস থেকে বের করে দেয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে আসা দুই ব্যক্তি। পরবর্তীতে ওই ঘটনার সংবাদ প্রকাশ হলে ১৭ জুলাই ভোটের দিন সকালে সঙ্করকে পুনরায় টেলিফোন দিয়ে আঙ্গুল কেটে নেয়ার হুমকি দেন মিরাজ। একইসাথে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন, যার অডিও নির্বাচন কমিশনে দেয়া হয়।

পৌরসভার নির্বাচন শেষে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সাংবাদিক পেটানোর হুমকিদাতা প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব বলেন, সাংবাদিককে টাঙ্গিয়ে পেটানোর হুমকিদাতা পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিরাজুল ইসলাম মিরাজকে ছাড়বো না। আমরা বিষয়টি কমিশন বৈঠকে তুলে ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন, আমরা এটি ছাড়বো না। আমরা কমিশনে ওঠাবো। সেই চেয়ারম্যান ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন। রিটার্নিং অফিসার ঘটনার চিত্র তুলে ধরে ইসিতে প্রতিবেদন পাঠান। নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান ইউ নোট (আন অফিসিয়াল) বা অনানুষ্ঠানিক চিঠিতে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন।

ইউনোটে কমিশনার আহসান হাবিব খান জানান, গত ১৬ জুলাই এ পৌরসভায় ভোটের আগের রাতে উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজ ভান্ডারিয়া রিটার্নিং অফিসারের সম্মুখে তাঁর অফিস কক্ষে উত্তেজিত হয়ে উচ্চস্বরে উপস্থিত দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ভান্ডারিয়া উপজেলা প্রতিনিধি শঙ্কর জীৎ সমাদ্দারকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, ‘তোমার এখানে কাজ কি? চলে যাও। আবার যদি তোমাকে এখানে বসে থাকতে দেখি তাহলে তোমাকে। উপজেলা চত্বর থেকে বের করে দিবো।’ তবে ইত্তেফাকের উপজেলা প্রতিনিধিকে উপজেলা চত্ত্বরে টাঙ্গিয়ে পিটানোর হুমকি দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজ। ভোটের কয়েকদিন পন গত ২০ জুলাই  খোদ রিটার্নিং কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান খলিফা ভোটের একটি প্রতিবেদন পাঠান ইসিতে।

গত ১৭ জুলাই এ দক্ষিণের জেলা পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া পৌরসভায় ভোট হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. ফাইজুর রশিদ নৌকা প্রতীকে নয় হাজার ৬২৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাহিবুল হোসেন মাহিম পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৭১ ভোট। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট হওয়ার পাশাপাশি ভোটে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার ছিল। তবে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে জয়ী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে ভোট কারচুপির অভিযোগ দেন জাতীয় পার্টি (জেপি) মনোনীত বাইসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মো. মাহিবুল হোসেন মাহিম।



বিষয়: #



আর্কাইভ