রবিবার ● ১৩ আগস্ট ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » পনেরো আগস্টের ঘাতক চক্র এখনও সক্রিয়
পনেরো আগস্টের ঘাতক চক্র এখনও সক্রিয়
‘ইতিহাসের রাখাল রাজা’ শীর্ষক আলোচনা সভা
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘাতক চক্র এখনও সক্রিয়। পঁচাত্তরের ঘাতক ও একাত্তর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের দোসররা নানা ষড়যন্ত্র করছে। তাদের প্রতিহত করার বিকল্প নেই। যে কোন মূল্যে এই অপশক্তিকে প্রতিরোধ করতে সবার সচেতনতা জরুরি। বিভিন্ন দেশের জরিপের তথ্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি এ দেশের ৭০ শতাংশ মানুষের সমর্থন আছে।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। শনিবার ১২ আগস্ট সন্ধ্যায় রাজধানীর কলাবাগানে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কার্যালয়ে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
‘ইতিহাসের রাখাল রাজা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক, বাংলাদেশ ফেড়ারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ। ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সরদার মাহামুদ হাসান রুবেলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘাতক চক্র এখনও সক্রিয়। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা নানা ষড়যন্ত্র করছে। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছিলেন, ক্যাম্পাসে ৪-৫টা লাশ ফেলে দেন, আন্দোলন জমে যাবে। সেই কাজটিই তারা করার চেষ্টা করছে। বিএনপি-জামায়াত জানে, আন্দোলন করে নির্বাচন করে তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে না। কারণ আগামী নির্বাচন নিয়ে সর্বশেষ জরিপগুলোতে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের জরিপেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি দেশের ৭০ শতাংশ মানুষের সমর্থন আছে বলে জানা গেছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির তো বাংলাদেশ রাষ্ট্রকেই স্বীকার করে না। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের ২২ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। সেই জায়গা থেকে এই অপশক্তিকে প্রতিরোধ করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, স্কুলজীবন থেকে বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন অনেক নেতা। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মতো কেউ আন্দোলন করেননি, কেউ ভাবেননি। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হবে, বাংলা সেই রাষ্ট্রের ভাষা হবে সেই লক্ষ্যে তিনি আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রভাষা বাংলা থেকে একের পর এক আন্দোলন এবং প্রত্যেকটাতেই তিনি সফল হয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পথচলা শুরু বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে। দেশে-বিদেশে নানা ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি তাকে হত্যা করে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা থেমে যায়। এরপর দীর্ঘদিন সামরিক সরকারের শাসনে নিষ্পেষিত ছিল এ দেশের জনগণ। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তখন আবারও সেই ষড়যন্ত্রকারীরা তৎপর হয়ে উঠেছে।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম স্বপন বলেন, বঙ্গবন্ধু কাউকে ছাড় দিয়ে কথা বলেননি। তাকে হত্যার পর পুরো জাতি ছিল বাকরুদ্ধ।
বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ যখন মাথা তুলে দাঁড়াতে শুরু করে ঠিক তখনই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিকাশের পথ রুদ্ধ করে দেওয়া হয়। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি চক্র বাংলাদেশ বিরোধিতার মাস্টারপ্ল্যান হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে যার উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়া এবং স্বাধীনতাবিরোধীদের পুনর্বাসিত করা।’
১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূল চেতনা ও গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল। বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। নতুন প্রজন্মকে প্রকৃত ইতিহাস জানতে দেওয়া হয়নি।
বক্তারা আরও বলেন, পৃথিবীর বহু বীর যুদ্ধ করেছেন অস্ত্র দিয়ে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ করেছেন অঙ্গুলি হেলনে, বজ্রকণ্ঠে ভাষণে ছিনিয়ে এনেছেন বিজয়। এখানে তিনি ব্যতিক্রমী একজন বীর।
বিষয়: #১৫ আগস্টের ঘাতক চক্র এখনও সক্রিয়