শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১
Swadeshvumi
শনিবার ● ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » আমাদের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি এখনো সর্বোচ্চ ধাপে পৌঁছায়নি: সিইসি
প্রচ্ছদ » জাতীয় » আমাদের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি এখনো সর্বোচ্চ ধাপে পৌঁছায়নি: সিইসি
১৬২ বার পঠিত
শনিবার ● ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

আমাদের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি এখনো সর্বোচ্চ ধাপে পৌঁছায়নি: সিইসি

---

জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সংসদ ভোট: ইসি আনিছুর

# জনগণ ভোট দিতে পারলেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে

# প্রশিক্ষণ দক্ষতা ও সততা সঞ্চারণে ভূমিকা রাখে

# প্রায় ১০ লাখ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেবে ইসি

# টিওটি প্রশিক্ষণ পাবেন ৩,২০০ জন 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নির্বাচনের সময় মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন এমন প্রায় ১০ লাখ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি। সেই লক্ষ্যে আজ (শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর) সকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষক (টিওটি) কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। অনুষ্ঠানে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি এখনো সর্বোচ্চ ধাপে পৌঁছায়নি। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যেখানে নির্বাচন নিয়ে হায়হুতাস করতে হয় না। বিশেষ করে ইউরোপের অনেকগুলো দেশ, যেখানে নির্বাচনগুলো খুব শান্তিপূর্ণভাবে হয়ে যায়। ওরা গণতন্ত্রের একটা বিশেষ অবস্থানে গিয়ে স্থিতু হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন কোন সহজ কর্ম নয়। ভোটের সময় জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারলে সেটি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে আমি মনে করি। আরেকটি বিষয় যুক্ত হয়েছে ক্রেডিবিলিটি। আমাদের সমন্বিতভাবে চাইতে হবে, নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে, তার ব্যবস্থা করতে হবে।’

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। কাজেই যারা এই নির্বাচন পরিচালনা করবেন তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপযুক্ত করা জরুরি। কারণ ভোটকেন্দ্রের দায়িত্ব তাদের উপলব্ধি করতে হবে। বর্মানে রিটার্নিং অফিসারদের দায়িত্ব ও ক্ষমতা আরও বর্ধিত করা হয়েছে। প্রশিক্ষণে আপনারা বর্ত দায়িত্ব ও নির্াচনি বিধিবিধান সম্পর্ সুস্পষ্ট ধারণা পাবেন। আমি মনে করি, প্রশিক্ষণ শুধু দক্ষতাই বৃদ্ধি করে না, কর্কর্াদের সততা সঞ্চারণেও ভূমিকা রাখে। প্রশিক্ষণ গ্রহণের সময়কোন ধরনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব না রাখা এবং সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন বিভাগের উপজেলা থেকে আসা ইসির মাঠ পর্ায়ের কর্কর্াদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

---

আলোচনায় নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান জানান, আগামী বছরের প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি। তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালের গোড়ার দিকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে আমরা এখনও কোন ভোটগ্রহণের কোন তারিখ ঠিক করিনি। আজকের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়ে গেল।’

আনিছুর রহমান আরও বলেন, ‘আমাদের সময় ইলেকশনের তিনদিন চারদিন আগে অল্প সময়ের জন্য ট্রেনিং করানো হতো। সেই সময় কোন প্রশ্ন বা কোন জবাব দেওয়ার সুযোগ ছিল না। কারণ দুই-তিনদিনের মধ্যে অনেক কাজ করতে হতো। ওই সময় কাজের তুলনায় লোকবল ছিল না। এখন হয়তো লোকবল অনেকটাই পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা থাকবে, তারপরও আপনারা নির্াচনি আইন-কানুন বিধি-বিধান সম্পর্কে একটু জানবেন। প্রিজাইডিং অফিসারের ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি ভোটের দিন। না জানার কারণে অনেকে বোঝেন না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলেও করণীয় আছে, আইনে প্রিজাইডিং অফিসারের ভোট বন্ধ করারও ক্ষমতা দেয়া আছে। সেসময় ম্যাজিস্ট্রেটি পাওয়ার দেয়া থাকে, তাও কাজে লাগানোর সুযোগ আছে।’


নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘আমরা যখন চাকরিতে ঢুকেছি তখন নির্বাচনে কোনরকম প্রশিক্ষণই হতো না। কিন্তু নির্বাচন তো ঠিকই করতাম। তারপরও নির্বাচন নিয়ে কোনরকম কথাবার্তা হতো না। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে, ততই সবকিছু জটিল হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে নির্বাচনও জটিল হয়ে গেছে। এই জটিলতার কারণে এতো আইনকানুন এবং প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হচ্ছে। নির্বাচনি আইন যেটা আছে, সেগুলো পড়ে আপনারা জানবেন এবং প্রশিক্ষণ দেয়ার সময় মাঠ পর্যায়ের অন্য কর্মকর্তাদের জানাবেন।

---

নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আইনকানুনগুলো আপনারা ভালো করে দেখে নিবেন, পড়ে নিবেন। নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করবেন।’ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য করতে সবার আন্তরিক প্রচেষ্টা খুব জরুরি বলেও জানান তিনি।


নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, ‘কঠিন প্রশিক্ষণ সহজ যুদ্ধ। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করার জন্য সকলের সহযোগিতা দরকার। যত সুন্দরভাবে প্রশিক্ষণ হবে, নির্বাচনটা ততই সুন্দর হবে। আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর প্রায় ১ হাজার নির্বাচন সুন্দর ও অবাধভাবে করেছি। কোন প্রশ্ন উঠে নাই সেসব নির্বাচন নিয়ে। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে নির্বাচনি কর্মকর্তাদের ভূমিকা অনেক। আপনারা যারা এখান থেকে প্রশিক্ষণ নেবেন তারা প্রথমে অঞ্চলভিত্তিক প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করবেন। এরপর অঞ্চলে যারা প্রশিক্ষিত হবেন তারা জেলা পর্যায়ে এবং জেলার প্রশিক্ষিতরা উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেবেন।


অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট (ইটিআই) এর মহাপরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনি কাজে সম্পৃক্ত প্রায় ১০ লাখ জনবলকে প্রশিক্ষিত করা হবে। এ পর্ায়ে নির্বাচনের সময় মাঠপর্যায়ে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষিত করবেন তাদের প্রশিক্ষণ দিতেই এই টিওটি প্রোগ্রাম (প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ) কার্যক্রম। সেপ্টেম্বর থেকে তফসিল ঘোষণার আগে ও পরে কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ে এই ১০ লাখ লোকবলকে পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। টিওটি প্রোগ্রাম প্রতি ব্যাচে অংশ নিচ্ছেন শতাধিক কর্কর্া। সবমিলিয়ে ১২৮টি ব্যাচে আবাসিক এই কর্সূচিতে প্রশিক্ষণ নেবেন ৩ হাজার ২০০ জন।

ইটিআই মহাপরিচালক জানান, প্রশিক্ষণে নির্বাচনি আইন, বিধিমালা, নির্বাচন পরিচালনা বিধি, আচরণবিধিসহ সার্বিক বিষয় তুলে ধরার পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব, কর্তব্য ও করণীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরপর ধাপে ধাপে মাঠ পর্যায়ে সব প্রিজাইডিং, সহকারি প্রিজাইডিং, পোলিং অফিসার নিয়ে সব ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রযুক্তিনির্ভর ভোট ব্যবস্থাপনার বিষয়ে জেলা ও উপজেলা সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদেরও আলাদা প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা থাকবে। তফসিল ঘোষণার পর রিটার্নিং অফিসার, সহকারি রিটার্নিং অফিসার, নির্বাহী ও বিচারিক হাকিমদেরও  নির্শনা দেয়া হবে।

নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে থেকে উপজেলা ও থানা পর্যায়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সেসময় ৪২ হাজার হাজারের বেশি প্রিজাইডিং অফিসার, আড়াই লাখের বেশি সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার এবং সোয়া ৫ লাখের মতো পোলিং অফিসারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রায় ১২ কোটি ভোটারের এই নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজারেরও বেশি। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত কর্মকর্তা মিলিয়ে ১০ লাখেরও বেশি লোকবল প্রয়োজন। তাই নির্ধারিত সংখ্যক লোকবল নিয়ে এই ব্যাচভিত্তিক প্রশিক্ষণ, যা পর্য়ায়ক্রমে চলবে।



বিষয়: #



আর্কাইভ