শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
Swadeshvumi
শুক্রবার ● ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » পুড়েছে ২১৭টি দোকান, ক্ষয়ক্ষতি ৩৫০ কোটি
প্রচ্ছদ » জাতীয় » পুড়েছে ২১৭টি দোকান, ক্ষয়ক্ষতি ৩৫০ কোটি
১৬১ বার পঠিত
শুক্রবার ● ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পুড়েছে ২১৭টি দোকান, ক্ষয়ক্ষতি ৩৫০ কোটি

কৃষি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড

---

# সাড়ে ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে

# আগুনে পুড়েছে ৫ শতাধিক দোকান

# ৩৫০ কোটি টাকার ক্ষতি দাবি ব্যবসায়ীদের

# শর্টসার্কিট থেকে আগুন ধারণা ফায়ার সার্ভিসের

নিজস্ব প্রতিবেদক

গভীর রাতের ভয়াবহ আগুনে নিঃস্ব হয়ে গেছেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। অগ্নিকাণ্ডে ২১৭টি দোকান পুরোপুরি পুড়ে গেছে। ব্যবসায়ীদের দাবি তাদের অন্তত ৩৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রধান সড়কের পাশে হক বেকারি থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। শর্টসার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি রাতে বিদ্যুতের প্রধান সুইচ বন্ধ থাকার পরও কীভাবে শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগে? ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সিটি করপোরেশন যে মার্কেটগুলো ভেঙে পাকা মার্কেট করতে চাচ্ছে সেগুলোতেই শুধু আগুন লাগছে! এই আগুন অবশ্যইরহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন তারা।

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের নতুন কাঁচাবাজার মালিক সমিতির অফিস সহকারী মুশফিকুর রহমান লিটন বলেন, আগুনের সূত্রপাত কাঁচাবাজারের প্রবেশমুখে থাকা হক বেকারি থেকে। রাত ৩টার দিকে নিরাপত্তা কর্মী এসে আমাকে জানান, হক বেকারি থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে আমি ছুটে গেলাম। গিয়ে দেখি আগুন ধরে গেছে। পরে অফিসে এসে ফায়ার সার্ভিসকে ফোন দিই। কিন্তু তারা কল ধরে নাই। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কল দিই। তারা বলে, আমরা তথ্য পেয়েছি। গাড়ি পাঠাচ্ছি। এর আধাঘণ্টা পর দুইটা ছোট গাড়ি আসে। ততক্ষণে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে পাঁচ-সাতটা গাড়ি এসেছে। এগুলো আগে এলে ক্ষতি কম হতো।

ব্যবসায়ীরা জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে আগুনের সূত্রপাত। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট। আগুন নিয়ন্ত্রণ, উদ্ধার অভিযান সার্বিক শৃঙ্খলায় ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দেয় সেনা, নৌ বিমানবাহিনী, পুলিশ, আনসার এবং বিজিবির অগ্নিনির্বাপণ সাহায্যকারী দল। আগুনে মার্কেটের প্রায় পাঁচ শতাধিক দোকান পুড়ে গেছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। মার্কেট কাঁচাবাজারে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে প্রায় ৭০০-৮০০টি দোকান ছিল। বাতাসে মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মার্কেট বন্ধ থাকায় ফায়ার সার্ভিস প্রথমে এসে ভেতরে ঢুকতে পারেনি। এজন্য আগুন আরো বেশি ছড়িয়ে পড়ে। বিমান বাহিনী হেলিকপটারের মাধ্যমে মার্কেটের ওপর থেকে পানি ছিটায়।

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে কোনো ফায়ার সেফটি ছিল না বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিংয়ের কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। ফুটপাত সড়কে দোকান থাকায় মানুষের ভিড়ের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়েছে। এখানে পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও ছিল না। কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে। এই মার্কেটটি অনেকটা বঙ্গবাজার মার্কেটের মতো। দোকানের সামনেও অনেক দোকান ছিল।

---

ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ

প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে পুড়েছে এই মার্কেট। ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ঢাকা মহানগর দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি মো. আরিফুর রহমান টিপু। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষোভ ঝেড়ে তিনি বলেন, ঢাকা শহরের যতগুলো মার্কেটে আগুন লেগেছে সবগুলো ঘটনাই ঘটেছে ভোর রাতে। ভোররাতেই কেন আগুন লাগে? আমি মনে করি এই বিষয়টা খতিয়ে দেখা উচিত। এখানে কয়েক দোকান রয়েছে। প্রয়োজনীয় সব কিছুই সুলভমূল্যে এখানে পাওয়া যায় বলে মার্কেটটি খুব জনপ্রিয় ছিল। শুনেছি সিটি করপোরেশন ফায়ার সার্ভিস এই মার্কেটকে ঝুঁকিপূর্ণ বলেছে, কিন্তু আমরা তো সে ধরনের কোনো নোটিশ পাইনি। আমাদের দাবি একটাইযেসব ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তারা যেন উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পায়।

কতগুলো দোকান পুড়েছে

কৃষি মার্কেটের আগুনে প্রায় পাঁচ শতাধিক দোকান পুড়ে গেছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। মার্কেট কাঁচা বাজারে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে প্রায় ৭০০-৮০০টি দোকান ছিল। তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেছেন, অবৈধ দোকানগুলো ছিল ফুটপাতে। আমাদের বরাদ্দ দেওয়া দোকান ছিল ৩১৭টি। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত আমরা যে তথ্য পেয়েছি সেখানে ২১৭ দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শফিকুল ইসলাম নামের জুতার দোকানি বলেন, প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভেতরে ঢুকতে পারলে আগুনে এত দোকান পুড়ত না। সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে আমাদের। দোকান থেকে কিছুই বের করতে পারিনি। ওয়াহিদ নামে কাপড়ের এক ব্যবসায়ী জানান, তিনি রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে যান। তখনো তার দোকানে আগুন লাগেনি। প্রায় ৩০ মিনিট পর দোকানে আগুন লাগে। দোকানটি মার্কেটের ভেতর হওয়ায় তিনি সেখানে যেতে পারেননি। জাকির হোসেনের ছিল স্বর্ণের দোকান। তিনি বলেন, মার্কেটের মধ্যে দোকান হওয়ায় ভেতরে প্রবেশ করতে পারিনি। এজন্য দোকান থেকে টাকাপয়সা কিংবা স্বর্ণালংকারও বের করা যায়নি।

ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আমরা তাদের তালিকা করছি। বিভিন্ন সংস্থা এগিয়ে আসবে। আমরা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তাদের পাশে দাঁড়ব।

ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে

দিকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে পুড়ে যাওয়া দোকানের প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিয়ে ঘটনাস্থলের দক্ষিণ পাশের চৌরাস্তায় হাজির হওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।



বিষয়: #  #



আর্কাইভ