বৃহস্পতিবার ● ১৯ অক্টোবর ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » ইসি’র নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ শুরু আজ
ইসি’র নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ শুরু আজ
# প্রথমে বিতরণ হবে ঢাকা জেলায়
# পর্যায়ক্রমে সব জেলায় যাবে সরঞ্জাম
# স্ট্যাম্পপ্যাড বাদে সব উপকরণ কেনা শেষ
বিশেষ প্রতিনিধি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কেনা নির্বাচনী উপকরণ বিতরণ আজ থেকে শুরু করছে নির্বাচন কমিশন। প্রথমেই ঢাকা জেলায় স্বচ্ছ ব্যালটবাক্স সরবরাহের মাধ্যমে এই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে বলে খবরের কাগজকে জানিয়েছেন ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। তিনি জানান, নির্বাচনি উপকরণের মধ্যে এ পর্যায়ে শুধু স্ট্যাম্পপ্যাড ছাড়া ভোটের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের কেনাকাটা প্রায় শেষ পর্যায়ে। ভোটের জন্য সংগ্রহ করা সব ধরনের সরঞ্জাম ইসি ভবনের স্টোররুমে সংরক্ষণ করা হচ্ছে, চলছে ল্যাবরেটরি টেস্টে পরীক্ষার কাজ। এরপর পর্যায়ক্রমে সব জেলায় পাঠানো হবে নির্বাচনি সব ধরনের উপকরণ।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন মানেই বিশাল বিশাল কর্মযজ্ঞ। এই নির্বাচনে ভোটের জন্য আমাদের ১৩ ধরনের নির্বাচনী উপকরণ কিনতে। তার মধ্যে রয়েছে- ব্যালট বাক্স, ব্যালট বাক্সের ঢাকনা ও লক, অমোচনীয় কালি, বিভিন্ন ধরনের সিল, স্ট্যাম্প, বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ, কাগজ, প্যাড, রশি প্রভৃতি। এসবের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য পুরনো যেসব নির্বাচনী উপকরণ ভালো আছে তার সাথে যোগ করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বাড়তি উপকরণ আমরা কিনেছি।‘
অশোক কুমার দেবনাথ জানান, সংগৃহীত উপকরণের মধ্যে- নতুন ব্যালট বাক্স কেনা হয়েছে ৮০ হাজার। আর আগের কিছু ঢাকনা ভালো থাকায় ব্যালট বাক্সের ঢাকনা কেনা হয়েছে ৫৫ হাজার। এছাড়া গানিব্যাগ ৯০ হাজার, বড় হেসিয়ান ব্যাগ ৬৫ হাজার, ছোট হেসিয়ান ব্যাগ ১ লাখ, মার্কিন সিল ১৪ লাখ ৩৫ হাজার, সিল ৪০ লাখ ৬০ হাজার, অফিসিয়াল সিল ৭ লাখ ১৫ হাজার, ব্রাশ সিল ১ লাখ, লাল গালা ২০ হাজার কেজি এবং অমোচনীয় কালি-কলম ৮ লাখ ১৫ হাজার। এছাড়া ৪ লাখ স্ট্যাম্পপ্যাড সংগ্রহ করার কাজ চলছে। এর আগে সারাদেশের আঞ্চলিক, জেলা, উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসের নির্বাচনী সরঞ্জামে রাখার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
ইসি সূত্রে জানা যায়, সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকক্ষের জন্য একটি করে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স প্রয়োজন হয়। আর প্রতি কেন্দ্রে একটি করে অতিরিক্ত স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স দেওয়া হয়। সে হিসাবে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৩ লাখের বেশি স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স প্রয়োজন হবে। নির্বাচনী সব ধরনের সরঞ্জাম ইসি সচিবালয়ের ১০টি আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস, প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও মেট্রোপলিটন এলাকায় থানা নির্বাচন অফিসে সংরক্ষণ করা হবে। এর পর ভোটের দিন সকালে বা আগের দিন নির্ধারিত কেন্দ্রে এইসব মালামাল পাঠানো হবে।
এদিকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রশিক্ষণের কার্যক্রমও পুরোদমে শুরু করেছে দিয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বিভাগীয় কমিশনারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এবার প্রায় ১০ লাখের মতো ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান।
এদিকে সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসি’র ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করার কাজও শেষ পর্যায়ে। আগামী ২ নভেম্বরের মধ্যে আসনভিত্তিক ভোটার তালিকা প্রস্তুত করার জন্য মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। সীমানা পুনর্নির্ধারণ এবং ভোটকেন্দ্রের খসড়াও চূড়ান্ত করা হয়েছে। এবার ৪২ হাজার ৩৫০টির মতো ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা করেছিল জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কমিটি। সেখানে ভোটকক্ষ রাখা হয়েছিল ২ লাখ ৬১ হাজার ৫০০টির মতো। এর মধ্যে শুনানি শেষে টিকেছে ৪২ হাজার ১০৩টি। এতে ভোটকক্ষ রয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজারের মতো। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র ছিলো ৪০ হাজার ১৮৩টি। ভোটকক্ষ ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি। মোট ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন।
২০২২ সালের হালনাগাদ অনুযায়ী, দেশে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৪ জন। আর নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪ হাজার ৮৭৯ জন। এছাড়া হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৮৩৭ জন। তরুণ ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ সৃষ্টি করায় এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তাই এবার ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষের সংখ্যা বাড়ছে পাঁচ শতাংশের মতো। আসনভিত্তিক এই ভোটার তালিকা আগামী ২ নভেম্বর চূড়ান্ত করবে ইসি।
বিষয়: #ইসি’র নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ শুরু আজ