মঙ্গলবার ● ৭ নভেম্বর ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » লক্ষ্মীপুরের উপনির্বাচনে অনিয়মের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ
লক্ষ্মীপুরের উপনির্বাচনে অনিয়মের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে একটি কেন্দ্রে অনৈতিক ভোট দেওয়ার ঘটনা তদন্ত করতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল সোমবার বিকেলে ইসির পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়।
এই আসনে উপনির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বরাত দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ঘটনা সংক্রান্ত ভিডিওর সিডি সংযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্র চিহ্নিত করতে এবং সেখানে নিয়োজিত সব ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যের বক্তব্য জানতে হবে। তারপর ঘটনার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সোমবার লক্ষ্মীপুরের উপনির্বাচনে ‘সাদা রঙের পাঞ্জাবি পরা একব্যক্তি নৌকা প্রতীকে সিল মারছেন’- ৫৭ সেকেন্ডের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ভোটকেন্দ্রে ওই ব্যক্তি একাধিক ব্যালট পেপারে শুধু নৌকা প্রতীকে সিল মারছেন। সিল মারার সময় ওই লোককে সহযোগিতা করছেন আরও এক কর্মী। অভিযোগ উঠেছে তিনি ৫৭ সেকেন্ডে ৪৩টি ব্যালটের সিল মেরেছেন। এ ঘটনায় দেশজুড়েই চলছে সমালোচনা।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি নাকি ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা। তার নাম আজাদ হোসেন। সে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি। সম্প্রতি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করেছে জেলা ছাত্রলীগ।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওটি লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে ভোটের সময়ের, না পুরনো- তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী মিয়া গোলাম ফারুক দাবি করেছেন- ‘ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও পুরনো। এই নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পুরোনো ওই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছে।’ একই সাথে ঘটনার তদন্ত দাবি করেন তিনি।
এছাড়াও লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে কেন্দ্র দখল, কারচুপি, এজেন্টদের বের করে দেওয়া ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ভোট বর্জন করে জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টির প্রার্থী।
এসব বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন গতকাল গণমাধ্যমকে জানান, প্রকাশ্যে সিল মারার কোনো ভিডিও প্রথমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নজরে আসেনি। পরে বিষয়টি নজরে আসলে জেলা প্রশাসনও তাকে ভিডিওটি পাঠায়। এরপরই ঘটনাটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে রবিবার অনুষ্ঠিত দুই উপনির্বাচন এবং লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে অনিয়মের ঘটনায় কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি নির্বাচন কমিশন। সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সপ্তাহখানেক আগে- ভাইরাল হওয়া এমন ঘটনায় আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচনে ইসির সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। আলোচিত এই ঘটনায় ইসির ব্যাখ্যা পেতে সোমবার (৬ নভেম্বর) দিনভর নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন গণমাধ্যমকর্মীরা। কিন্তু সিইসি এবং কোনো নির্বাচন কমিশনারই মুখ খোলেননি। এছাড়া বার বার চেষ্টার পরও গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেননি, অফিস আদেশে জারি করা ইসি সচিবালয়ের মুখপাত্র সচিব মো. জাহাংগীর আলমও।
এদিকে ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা এবং জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোট করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি। এ লক্ষ্যে গত ২ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকাও প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
বিষয়: #লক্ষ্মীপুরের উপনির্বাচনে অনিয়মের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ