শিরোনাম:
ঢাকা, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
Swadeshvumi
শনিবার ● ১১ নভেম্বর ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ শেষ করতে আবারও নৌকায় ভোট দিন: প্রধানমন্ত্রী
প্রচ্ছদ » জাতীয় » অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ শেষ করতে আবারও নৌকায় ভোট দিন: প্রধানমন্ত্রী
১৫৯ বার পঠিত
শনিবার ● ১১ নভেম্বর ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ শেষ করতে আবারও নৌকায় ভোট দিন: প্রধানমন্ত্রী

---

বিশেষ প্রতিনিধি

উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা বাস্তবায়ন এবং অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ শেষ করার জন্য আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আজ তার সরকার বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় তুলে এনেছে। যেটার বাস্তবায়ন করতে হবে। আর এটা বাস্তবায়ন করতে হলে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকেই জয়ী করতে হবে। অন্য কোনও দলে আওয়ামী লীগের মতো দেশপ্রেম নেই বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

শনিবার (১১ নভেম্বর) বিকালে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের মাঠে মহেশখালী আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘এটা আওয়ামী লীগই পারবে অন্য কেউ পারবে না। কারণ তাদের (বিএনপি-জামায়াত) কোনও দেশপ্রেম বা মানুষের প্রতি কোনও দায়িত্ববোধ নাই।’

‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় এবং মানুষের জন্য কাজ করে,’ উল্লেখ করে বিএনপি’র প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর অন্য একটি দল (বিএনপি) আছে, এরা মানুষের সম্পদ লুটে খায়। এরা খুন, হত্যা, বোমাবাজি, গ্রেনেড হামলা, অর্থপাচার, অস্ত্র চোরাকারবারি—এগুলোই জানে। মানুষের কল্যাণে তারা কাজ করতে জানে না।’

বিগত ১৫ বছরে তার সরকার দেশের যে উন্নয়ন করেছে, তা নবীন প্রজন্মের অনেকেই বুঝবে না বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘কারণ তারা দেখেনি, কোন দুরাবস্থা থেকে বাংলাদেশ আজকের সম্মানজনক অবস্থানে এসেছে। আজকে বাংলাদেশ বদলে যাওয়া এক দেশ। কারণ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে।’

জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন বলেই আমরা ক্ষমতায় আছি। আগামীতে নির্বাচন, সেই নির্বাচনেও আমি চাইব নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবারও আপনাদের সেবা করার ও যেসব কাজ অসমাপ্ত রয়েছে; সেগুলো শেষ করার সুযোগ দেবেন।’

‘আপনারা কি নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন?’, প্রধানমন্ত্রীর এমন প্রশ্নের উত্তরে উপস্থিত জনসমুদ্র সমস্বরে দুই হাত তুলে সমস্বরে সম্মতি জানায়। দূর দূরান্ত ও প্রত্যন্ত দ্বীপাঞ্চল থেকে নৌকা, ট্রলার বা পায়ে হেঁটে কষ্ট করে তার জনসভায় যোগ দেওয়ায় উপস্থিত জনগণকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি সম্প্রতি তার সৌদি আরবের মক্কা-মদিনা সফরের উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে যেন আর কষ্ট করতে না হয় তারা যেন সুন্দর জীবন পায়, সেজন্য সেখানে তিনি মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করেছেন।

অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনও মানুষের মধ্যে যদি মনুষত্ববোধ থাকে, তাহলে জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারতে পারে না। ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় জীবন্ত মানুষগুলোকে বিএনপি-জামায়াত পুড়িয়ে হত্যা করছে। গাড়ি যানবাহন সব পুড়িয়ে দিচ্ছে। মানুষকে পুড়িয়ে মারা, আর সম্পদ পুড়িয়ে নষ্ট করাটাই তাদের কাজ। আমরা উন্নয়ন করি আমরা সৃষ্টি করি। ওরা ভাঙে, নস্যাৎ করে; ওরা ধ্বংস করতে জানে, মানুষের কল্যাণ করতে জানে না। কাজেই এদের থেকে জনগণকে সাবধান থাকতে হবে।’

মূল্যস্ফীতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়, তখন দেওয়া নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার ফলে মুদ্রাস্ফীতি একটু বেড়েছে। কিন্তু সেটাও নিয়ন্ত্রণে আমরা চেষ্টা চালিয়েছি। খুব শিগগির মূল্যস্ফীতি হ্রাস পাবে। মানুষ আরও ভালোভাবে চলতে পারবে বলে আশা করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছি, আর হারানোর কিছু নেই। পাওয়ারও কিছু নেই। শুধু একটাই কাজ এই বাংলাদেশের মানুষ যেন ভাল থাকে, উন্নত জীবন পেতে পারে যেভাবে আমার বাবা স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার। সে বাংলাদেশই আমি গড়তে চাই। বাবার স্বপ্নটাই আমি পূরণ করতে চাই।’

‘সব হারিয়ে এই দেশবাসীর মাঝেই তিনি বাবা-মা-ভাইয়ের স্নেহ খুঁজে পেয়েছেন’, উল্লেখ করে এই জনগণের জন্য তিনি যে কোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত বলেও জানান। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে বাবার মতো বুকের রক্ত দিতেও আমি প্রস্তুত। শুধু আপনাদের কল্যাণ করাটাই আমার একমাত্র কাজ।’

প্রধানমন্ত্রী এরআগে সমাবেশস্থলে মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ ১৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৫৩ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকার অন্য তিনটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার পাশা চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও ড. হাছান মাহমুদ, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক প্রমুখ। এর আগে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি এ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। এর আগে, সকালে তিনি ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন ও আইকনিক ঝিনুক আকৃতির কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনের উদ্বোধন করেন।

ইতোমধ্যে সমাপ্ত প্রকল্পগুলো হলো- বকখালী নদীর উপর সেতু, সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে কুতুবদিয়া দ্বীপকে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্তকরণ, কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প (প্রথম পর্যায়), উখিয়া বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প, ৪০টি উপজেলায় ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং একটি ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি। চট্টগ্রামে চারটি স্কুলের একাডেমিক ভবন, ট্যুরিস্ট বাস সার্ভিস, পর্যটকদের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার, চকরিয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল হামিদ পৌর বাস টার্মিনাল সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন কাজ, কুতুবদিয়া ঠান্ডা চৌকিদার পাড়া আরসিসি গার্ডার ব্রিজ এবং মহেশখালীতে গোরাকঘাটা-শাপলাপুর জনতাবাজার সড়ক।

যেসব প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়, সেগুলো হলো-টেকনাফ বহুমুখী দুর্যোগ প্রতিরোধক আশ্রয়কেন্দ্র কাম আইসোলেশন সেন্টার, রামু উপজেলার নন্দা খালিতে ১৮৪টি সেতু আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ ও জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাব স্কাউটিং সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ভবন নির্মাণ প্রকল্প।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ কৃত্রিম নেভিগেশন চ্যানেলের উদ্বোধন করেন। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর এলাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের পর বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে চ্যানেলটির উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।



বিষয়: #



আর্কাইভ