সোমবার ● ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » ইসির আদালতে চলছে আপিল শুনানির ২য় দিনের কার্যক্রম
ইসির আদালতে চলছে আপিল শুনানির ২য় দিনের কার্যক্রম
# শুনানির ১ম দিন প্রার্থিতা ফিরে পান ৫৬ জন
নিজস্ব প্রতিবেদক
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীদের আপিল শুনানির ২য় দিনের কার্যক্রম চলছে। নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে (বেজমেন্ট-২) নির্বাচন কমিশনের অস্থায়ী আদালতে সকাল ১০টায় শুরু হওয়া কার্যক্রম চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। আপিলের শুনানি শেষ হবে ১৫ ডিসেম্বর।
এর আগে গতকাল রবিবার (১০ ডিসেম্বর) আপিল শুনানির প্রথম দিনে ইসির আদালত থেকে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৫৬ জন। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বাছাইয়ে বাতিল হওয়া ৭৩১ প্রার্থীর মধ্যে ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বরে ইসির আদালতে আপিল করেন ৫৬১ জন। এই আপিলকারীদের বেশির ভাগই প্রার্থিতা ফিরে পেতে আবেদন করেছেন। তবে বেশকিছু আপিল আবেদন পড়েছে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বাছাইয়ে বৈধ হওয়া প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দিন প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া ৫৬ জনের মধ্যে ৩৩ জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচনে লড়বেন। বাকি ২৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী।
এ পর্যন্ত প্রার্থিতা ফিরে পাওয়াদের মধ্যে রয়েছে- ঢাকা-৫ কামরুল হাসান (রিপন), টাঙ্গাইল-২ আসনে ইউনুছ ইসলাম তালুকদার, টাঙ্গাইল-৭ আসনের রাফিউর রহমান খান ইউসুফ জাই, জামালপুর-২ আসনের জিয়াউল হক জিয়া, গোপালগঞ্জ-১ আসনের কাবির মিয়া, চট্টগ্রাম-১ আসনের মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, চট্টগ্রাম-২ আসনের মোহাম্মদ শাহজাহান, চট্টগ্রাম-৮ আসনের আবদুচ ছালাম, চট্টগ্রাম-১৫ আসনের আব্দুল মোতালেব, বরগুনা-১ আসনের খলিলুর রহমান, মেহেরপুর-২ আসনের মোখলেসুর রহমান, রংপুর-২ আসনের বিশ্বনাথ সরকার।
ফরিদপুর-১ আসনের মাহমুদা বেগম ও মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, মাদারীপুর-২ আসনের ইউসুফ আলী সুমন, যশোর-২ আসনের এসএম হাবিবুর রহমান, যশোর-৩ আসনের মোহিত কুমার নাথ, যশোর-৬ আসনের আজিজুল ইসলাম, কুষ্টিয়া-১ আসনের ফিরোজ আল মামুন, বরিশাল-৬ আসনের মোহাম্মদ শামসুল আলম, কুমিল্লা-৫ আসনের সাজ্জাদ হোসেন ও এম এ জাহের, বরগুনা-১ আসনের নুরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
শরীয়তপুর-১ আসনের গোলাম মোস্তফা, শরীয়তপুর-২ আসনের খালেদ শওকত আলী, নীলফামারী-১ আসনের জয়নাল আবেদীন, গাইবান্ধা-২ আসনের শাহ সারোয়ার কবীর, গাইবান্ধা-৫ আসনের ফারজানা রাব্বী বুবলী, কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম, নেত্রকোনা-৫ আসনের আনোয়ার হোসেন, ঝালকাঠি-১ আসনের আবুল কাসেম মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের হালিমুল হক মীরু এবং বগুড়া-৩ আসনের আফজাল হোসেন।
এছাড়া আপিলে কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খান প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। জাতীয় পার্টির পাঁচ জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। তারা হলেন- নোয়াখালী-২ আসনের তালেবুজ্জামান, যশোর-১ আসনের আক্তারুজ্জামান, খুলনা-৬ আসনের শফিকুল ইসলাম মধু, কুমিল্লা-২ আসনের এটিএম মঞ্জুরুল ইসলাম ও গাজীপুর-১ আসনের এম এম নিয়াজ উদ্দিন।
তৃণমূল বিএনপির খুলনা-৪ আসনের শেখ হাবিবুর রহমান, সিলেট-২ আসনে আব্দুর রব এবং সুপ্রিম পার্টির ঢাকা-২০ আসনের মিনহাজ উদ্দিন ও ময়মনসিংহ-১১ আসনের এবিএম জিয়া উদ্দিন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।
এছাড়া পাবনা-২ আসন থেকে সঙ্গীত শিল্পী ডলি সায়ন্তনী, যশোর-৩ আসনের জাকের পার্টির মহিদুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের যশোর-৩ আসনের প্রার্থী শেখ নুরুজ্জামান প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। বিএনএফের মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের মমতাজ সুলতানা আহমেদ ও মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের বাচ্চু শেখের আপিলও মঞ্জুর হয়েছে।
বাংলাদেশ কংগ্রেসের লালমনিরহাট-২ আসনের মো. দেলাব্বর হোসেন, কুড়িগ্রাম-৪ আসনের প্রার্থী মো. আব্দুল হামিদ, বগুড়া-৪ আশরাফুল আলম (হিরো আলম) ও নেত্রকোনা-২ আসনের বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. আজহারুল ইসলাম খান, ইসলামী ফ্রন্টের ঢাকা-১৩ আসনের মো. জাফর ইকবাল নান্টু এবং জামালপুর-১ আসনের তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. গোলাম মোস্তফা প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।
নির্বাচন ভবনে আপিল শুনানির প্রথম দিনে ৯৪টি আপিলের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আপিলে প্রায় ৬০ শতাংশ প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। এদিন ৫৬ জন প্রার্থীর আপিল মঞ্জুর করা হয়। এর ফলে তারা বৈধ প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। ৩২টি আপিল নামঞ্জুর এবং ৬টির সিদ্ধান্ত অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছে।
নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে (বেজমেন্ট-২) প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। আজ সোমবার ১১ ডিসেম্বর শুনানি হবে ৯৫-২০০ নম্বর পর্যন্ত আপিলের। আগামীকাল ১২ ডিসেম্বর ২০১-৩০০ নম্বর আপিল, ১৩ ডিসেম্বর ৩০১-৪০০ নম্বর আপিল, ১৪ ডিসেম্বর ৪০১-৫০০ নম্বর আপিল এবং ১৫ ডিসেম্বর ৫০১ থেকে অবশিষ্ট আপিল আবেদনগুলোর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পর সংসদীয় ৩শ’ আসনের বিপরীতে মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছিল ২ হাজার ৭১৬টি। এর মধ্যে বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা বাতিল করেন ৭৩১টি; যা মোট দাখিলকৃত মনোনয়নপত্রের ২৬ দশমিক ৯২ শতাংশ। আর বৈধ হয় ১ হাজার ৯৮৫টি মনোনয়নপত্র; যা দাখিলকৃত মনোনয়নপত্রের ৭৩ দশমিক ৮ শতাংশ।
ইসিতে জমা পড়া সংক্ষুব্ধ প্রার্থীদের আপিল নিষ্পত্তি শেষে ১৫ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। তারপর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি রবিবার।
ইসি/এলিস/
বিষয়: #ইসির আদালতে আপিল শুনানি