শনিবার ● ২৫ মে ২০২৪
প্রচ্ছদ » জাতীয় » মুক্তিযুদ্ধের ঝান্ডা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সঞ্চারিত করতে হয়: সিইসি
মুক্তিযুদ্ধের ঝান্ডা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সঞ্চারিত করতে হয়: সিইসি
# শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে স্মার্ট এনআইডি দিলো ইসি
# স্মার্ট কার্ডে স্বীকৃতি পেয়ে সরকার ও ইসিকে সাধুবাদ জানান মুক্তিযোদ্ধারা
নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র (স্মার্ট এনআইডি) বিতরণ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল বৃহস্পতিবার শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধার হাতে বিশেষ স্মার্ট এনআইডি তুলে দেওয়ার মাধ্যমে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করে সংস্থাটি। সকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিলনায়তনে উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বিশেষ স্মার্টকার্ড ও ক্রেস্ট তুলে দেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।
বিশেষ স্মার্টকার্ডকে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের স্মারক হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের তা
ৎপর্য অসীম। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে যে পরিমাণ ত্যাগ বাঙালি জাতিকে করতে হয়েছে তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। মুক্তিযুদ্ধ বীরত্ব গাঁথা সবসময় বেঁচে থাকে- গল্পে কাব্যে নাটকের মাধ্যমে। আমেরিকার মুক্তিযুদ্ধ মরে যায়নি।
আমরা আপনাদের খুব বেশি সম্মানিত করতে পারিনি, বরং আমরাই সম্মানিত বোধ করছি। দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করতে হবে। যে চেতনার মূল্যবোধে ৩০ লাখ বাঙালি নিহত হয়েছেন, তাদের একটা প্রত্যাশা ছিল। আমারা সে প্রত্যাশার দিকে যেন এগিয়ে যেতে পারি, নির্বাচনের মাধ্যমে, গণতন্ত্রের মাধ্যমে। সেই চেতনায় বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। লক্ষ্য বাস্তবায়নে মুক্তিযুদ্ধের ঝান্ডা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সঞ্চারিত করতে হয়। এই কার্ড আপনারা হারাবেন না- এটা আপনাদের বীরত্বের একটি স্মারক। হয়তো আপনি থাকবেন না। আপনার কার্ডটা থেকে যাবে’।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রালয়ের সচিব ইশরাত চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের হারানো গৌরব ফিরিয়ে দিতে কাজ করছে। সেই ধারাবাহিকতায় ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত এই বিশেষ স্মার্ট কার্ড তাদের সম্মানিত করার পদক্ষেপ। এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এছাড়া জেলা-উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা, প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষভাবে সম্মানিত করার নানা উদ্যোগ চলমান।
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জন্য করা বিশেষ এই স্মার্ট কার্ডের ডানপাশে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ লেখা রয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কয়েকজন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তাদের মধ্যে ছিলেন- সাবেক নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউদ্দিন আহমদ, সায়মা খান, এ এইচ সালাহউদ্দিন মাহমুদ ও আব্দুল হালিম মোল্লা।
জাতীয় পরিচয়পত্রে এমন স্বীকৃতি পেয়ে সরকার ও ইসিকে সাধুবাদ জানিয়ে তারা বলেন, দেশকে শত্রুমুক্ত করতে আমরা জীবন বাজি রেখেছিলাম। বেঁচে থাকতে এ ধরনের সম্মান পাবো তা ভাবিনি। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই বিশেষ স্মার্টকার্ড পেয়ে খুব ভালো লাগছে। এটা আসলে সম্মান। আর সম্মান ছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধারা কিছুই চায় না। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করার মাধ্যমে কমিশনও সম্মানিত হয়েছে বলে মনে করেন তারা।
সংস্থাটির সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সভাপতিত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মার্টকার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, মোহাম্মদ আলমগীর ও আনিছুর রহমান, এনআইডির মহাপরিচালক মো. মাহবুব আলম তালুকদার বক্তব্য রাখেন। তারা জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা খচিত স্মার্টকার্ড এর এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। পর্যায়ক্রমে সব বীর মুক্তিযোদ্ধাকে স্মার্ট এনআইডি দেয়া হবে। তবে এই স্মার্ট কার্ড পেতে মুক্তিযোদ্ধাদের স্থানীয় উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করতে হবে। সাথে দিতে হবে মুক্তিযোদ্ধার প্রমাণপত্র।
এর আগে গত ৭ মে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত নতুন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে তার স্মার্ট এনআইডি হস্তান্তর করেন। ২০২২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কে এম নুরুল হুদা কমিশন এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের স্মার্টকার্ড/এলিস
বিষয়: #মুক্তিযুদ্ধের ঝান্ডা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সঞ্চারিত করত