শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১
Swadeshvumi
রবিবার ● ৩০ জুন ২০২৪
প্রচ্ছদ » জাতীয় » শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে জাতীয় রূপরেখা জরুরি
প্রচ্ছদ » জাতীয় » শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে জাতীয় রূপরেখা জরুরি
৭৩ বার পঠিত
রবিবার ● ৩০ জুন ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে জাতীয় রূপরেখা জরুরি

সমষ্টি’র সেমিনারে বক্তারা

---

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে সরকারিভাবে একটি জাতীয় রূপরেখা তৈরির তাগিদ দিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। আর সেই লক্ষ্য  বাস্তবায়নে সমন্বিত কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

গতকাল শনিবার (২৯ জুন) গণমাধ্যম ও যোগাযোগ উন্নয়ন সংগঠন সমষ্টি আয়োজিত ‘শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে অভিভাবকদের ভূমিকা’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতব্য সংস্থা হিউম্যানিটি বিয়ন্ড ব্যারিয়ার্স-এর সহযোগিতায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সভাকক্ষে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তত্ত্বাবধানে ২০১৮-১৯ সালে করা বাংলাদেশ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট পরিচালিত জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য জরিপের তথ্য তুলে ধরা হয়। তাতে বলা হয়- বাংলাদেশের জনসংখ্যার ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ (২৮ মিলিয়নের বেশি) হালকা থেকে গুরুতর মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে। আর ৭ থেকে ১৭ বছর বয়সী ১৪ শতাংশ শিশুর মানসিক অসুস্থতা রয়েছে। মানসিক অসুস্থতায় ভোগা শিশুদের ৯৫ শতাংশই কোন ধরনের পরামর্শ বা চিকিৎসার আওতায় আসে না। শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যজনিত এসব সমস্যা অভিভাবকরা চিহ্নিত করতে না পারায় এ সমস্যা ক্রমেই আরো প্রকট আকার ধারণ করছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে একুশে পদকপ্রাপ্ত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘শিশুদের সুস্থ-স্বাভাবিক ও পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশ জরুরি হলেও এটি সব মহলে তেমন গুরুত্ব পচ্ছে না। এজন্য নীতি-নির্ধারণী উদ্যোগ ও কর্মসূচি দরকার। শহরের পাশাপাশি গ্রামের শিশুদের জন্য এরকম কর্মসূচি প্রয়োজন। অভিভাবকরা অনেক সময় শিশুদের ওপর অযথা চাপ প্রয়োগ করেন, তাদের প্রতিযোগিতার দৌড়ে নামিয়ে দেন। এরকম চর্চা শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং তাদের মানসিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তিনি বাবা-মাসহ অভিভাবকদের শিশুদের প্রতি সহনীয় আচরণ করার আহ্বান জানান।’

---

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজির লিটন বলেন, ‘শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে সরকারিভাবে একটি জাতীয় রূপরেখা তৈরি করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ শিশু একাডেমির পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত উদ্যোগ নেয়া হবে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি অভিভাবক সাক্ষরতার কার্যক্রমটি আরো ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেবে। তিনি শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলাসহ অন্যান্য সৃজনশীল কাজে অংশগ্রহণ করার সুযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতি সাবেক সিনিয়র সচিব ও বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব জনাব আবু আলম শহীদ খান বলেন, ‘পারিবারিকভাবে যেমন এখানে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তেমনি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্কুল-কলেজ থেকেও শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের পর্যবেক্ষণ জরুরি। এক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়ানো একান্ত প্রয়োজন।’

আলোচনায় শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের জন্য জাতীয়ভাবে সমন্বিত কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো প্রতিকারের জন্য প্রয়োজনীয় সেবার আওতায় আনার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারেন মা-বাবাসহ অভিভাবকরা। এজন্য মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে তাদের সচেতন, উদ্বুদ্ধ ও সাক্ষর করে তোলা জরুরি। এটি সম্ভব হলে তারা শিশুদের মানসিক বিকাশের বাধাগুলো চিহ্নিত করতে পারবেন, মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যাগুলো ধরতে পারবেন এবং সমস্যা অনুযায়ী তাদের সঙ্গে আচরণ করতে পারবেন। প্রয়োজনে পরামর্শক ও চিকিৎসকদের সহায়তা নিতে পারবেন।

উল্লেখ্য, সমষ্টি ‘গঞ্জনা ও বৈষম্য কমিয়ে শিশুদের সুস্থ বিকাশের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক একটি প্রকল্প পরিচালনা করে। প্রকল্পের আওতায় ঢাকা, বরগুনা ও টাঙ্গাইলের ১০টি স্কুলের ৪০০ জন অভিভাবককে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সাক্ষরতা সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

সেমিনারে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিষয় বিশেষজ্ঞ, উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, গণমাধ্যমব্যক্তিত্ব, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

মেন্টাল হেলথ-সেমিনার



বিষয়: #



আর্কাইভ