শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১
Swadeshvumi
বুধবার ● ৩১ জুলাই ২০২৪
প্রচ্ছদ » জাতীয় » নির্ধারিত দিনে ইসিতে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়নি অর্ধেকের বেশি দল
প্রচ্ছদ » জাতীয় » নির্ধারিত দিনে ইসিতে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়নি অর্ধেকের বেশি দল
৫৪ বার পঠিত
বুধবার ● ৩১ জুলাই ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

নির্ধারিত দিনে ইসিতে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়নি অর্ধেকের বেশি দল

রাজনৈতিক দলের আয়-ব্যয়ের তথ্যবিবরণী

# ইসিতে হিসাব জমা দিয়েছে ২১টি দল 

# সময় চেয়ে আবেদন করেছে ২৩টি দল 

---

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২০২৩ সালের দলীয় আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে ২১টি দল, আর হিসাব জমা দিতে পারেনি বাকি ২৩টি রাজনৈতিক দল। আজ বুধবার (৩১ জুলাই) ছিলো দলগুলোর জন্য তাদের বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের তথ্যবিবরণী বা হিসাব জমা দেওয়ার শেষদিন।

সংস্থাটির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে না পারা বাকি দলগুলো সময় চেয়ে সংস্থাটির কাছে আবেদন করেছে। হিসাব জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই দলগুলোর জন্য সময় বাড়ানো হবে কি না সে ব্যাপারে খুবশিগগিরই কমিশন সভায় আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তাদের জন্য বাড়তি সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও জানান এই ইসি কর্মকর্তা।

নির্ধারিত এই সময় গতকাল বুধবার পর্যন্ত ইসিতে আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), কিল্পধারা বাংলাদেশ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), গণতন্ত্রী পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট (আইওজে), খেলাফত মজলিস, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, ইসলামিক ঐক্যফ্রন্ট বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জাতীয় পার্টি (জেপি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট।

অন্যদিকে নির্ধারিত সময়ে হিসাব জমা দিতে না পারা (২৩টি) দলগুলো হলো- বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল), বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন (বিটিএফ), বাংলাদেশ ক্যরাণ পার্টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)। এই দলগুলোর পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে সরাসরি বা মেইলের মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়ে এক থেকে দুই মাস পর্যন্ত সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে।

ইসিতে জমা দেওয়া হিসাবের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগের আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ কোটি ১৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ১৬ কোটি ৪৩ লাখ ৯ হাজার ২৩২ টাকা বেশি। একই বছর দলটির ব্যয়ও বেড়েছে, আগের চেয়ে যা দুই কোটি ৫১ হাজার ৪২১ টাকা বেশি।

২০২৩ সালে জানুয়ারি মাসে আওয়ামী লীগের ব্যাংকে ৭৩ কোটি ২৭ লাখ ৫৪ হাজার টাকা জমা ছিল। এ বছর আয় হয়েছে ২৭ কোটি ১৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। মাসিক চাঁদা, সদস্যরা চাঁদা দেন। যার পরিমাণ ১ কোটি ৬৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। অনুদান প্রাপ্তি (মেঘনা ব্যাংক পিএলসি) এক কোটি এক লাখ টাকা। নমিনেশন ফরম বিক্রয় (৩,৩৬৫ জন) ১৬ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ফরম বিক্রয় (অন্যান্য) দুই কোটি ২৯ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। ভাড়া (২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ) ১৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। ব্যাংক সুদ ৪ কোটি ৮৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা। অন্যান্য (উত্তরণ, বিদ্যুৎ বিল) ৩৭ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এতে মোট ২৭ কোটি ১৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা আয় করেছে। আর দলটির ব্যয় হয়েছে ৯ কোটি ৮৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।

এদিকে টানা তিন বছর ধরে ঘাটতিতে থাকার পর গত বছর লাভের মুখ দেখলেও এবার ফের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির। এতে দলটির ক্ষতি হয়েছে ২ কোটি ৫৪ লাখ ৪৩ হাজার ৮১৯ টাকা। ২০২৩ পঞ্জিকা বছরে দলটির আয় হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ ৮০ হাজার ১৫১ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৬৫ লাখ ২৩ হাজার ৯৭০ টাকা। অফিস খরচ স্টাফদের বেতন, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন, পোস্টার-লিফলেট, ইফতার আয়োজন ও দলীয় নেতাকর্মী গুম-খুন পরিবারের আর্থিক সহযোগিতা বাবদ ব্যয় হয়েছে। আর ক্ষতি হয়েছে ২ কোটি ৫৪ লাখ ৪৩ হাজার ৮১৯ টাকা।

অন্যদিকে আগের বছরের তুলনায় জাতীয় পার্টির আয় ও ব্যয় কিছুটা কমেছে। তবে তহবিল আগে চেয়ে বেড়েছে। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া দলটির ২০২৩ পঞ্জিকা বছরের বিবরণী বলছে, জাপা আয় করেছে ২ কোটি ২২ লাখ ২ হাজার ৪০৫ টাকা। আর ব্যয় করেছে ১ কোটি ১৩ লাখ ১৮ হাজার ৫২৫ টাকা। জাপার ব্যাংকে আগের স্থিতি ছিল ১ কোটি ৭৭ হাজার ৪২৬ টাকা। বর্তমানে তহবিল হচ্ছে ২ কোটি ৯ লাখ ৬১ হাজার ৩০৬ টাকা। ২০২২ পঞ্জিকা বছরে দলটির আয় হয়েছিল ২ কোটি ২৯ লাখ ১৪ হাজার ৯৬৮ টাকা। আর ব্যয় হয়েছিল ১ কোটি ২৮ লাখ ৩৭ হাজার ৫৪২ টাকা।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের বর্ষপঞ্জিকা অনুযায়ী বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের তথ্য বিবরণী জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে আগের পঞ্জিকা বছরের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর পর্যন্ত) দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব স্বীকৃত চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিং ফার্ম দিয়ে নিরীক্ষা করে ইসিতে জমা দিতে হয়।

২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালুর পর আইন করে রাজনৈতিক দলগুলো বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়। এবং পর পর তিন বছর কোন দল আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে। তবে কোনো দল ইসিতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হিসাব জমা দিতে না পারার কারণ উল্লেখ করে সময় বাড়ানোর আবেদন করলে কমিশন সময় বাড়িয়ে দেয়। এবারও সময় বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে সংস্থাটি। এর আগে গত কয়েক বছরও আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা নিতে ইসি সময় বাড়িয়েছিল।

ইসিতে দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব/এলিস



বিষয়: #



আর্কাইভ