শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১
Swadeshvumi
বুধবার ● ৭ আগস্ট ২০২৪
প্রচ্ছদ » জাতীয় » যত ভুলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন
প্রচ্ছদ » জাতীয় » যত ভুলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন
৩৯ বার পঠিত
বুধবার ● ৭ আগস্ট ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

যত ভুলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন

---

 

বিশেষ প্রতিনিধি

তরুণ সমাজের হাত ধরে বিপ্লবের মধ্যদিয়ে ফের একবার জাগ্রত হলো বাংলাদেশ। ১৯৫২ সাল থেকে শুরু করে ১৯৬৯ এবং ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতন, এর দীর্ঘ সময় পর ২০২৪ সালে আরেকটি অভ্যুত্থান দেখল সমগ্র দেশ। তবে এবারেরটা ছিল ছাত্রজনতার অভ্যুত্থান। আন্দোলনের তীব্রতার মুখে সোমবার সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

চলতি বছরে জানুয়ারি মাসে টানা চতুর্থবারের মতো নতুন সরকারের ক্ষমতা নেন শেখ হাসিনা। দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থেকেও ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমাধান করতে পারেনি হাসিনা সরকার। একের পর এক বক্তব্য ও ভুল সিদ্ধান্তের ফলে ক্রমেই বেড়েছে আন্দোলনের তীব্রতা। যা সামাল দিতে না পেরে বাধ্য হয়ে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করেছেন শেখ হাসিনা। গতকাল (সোমবার) দেশ ছাড়ার আগে জাতির উদ্দেশে বক্তব্য রেকর্ড করার অনুমতি চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। কিন্তু তাকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। এদিন দুপুর আড়াইটার দিকে গণভবন থেকে সামরিক হেলিকপ্টারে করে ‘নিরাপদ স্থানের উদ্দেশ্যে’ পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এ সময় সঙ্গে ছিলেন ছোটবোন শেখ রেহানা। দেশ ত্যাগের পরই ক্ষিপ্ত জনতা শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রবেশ করেন।

এরপর সেনাবাহিনীকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি বলেন, জনগণ এবং আমার দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আপনাদের দায়িত্ব। সাংবিধানিক দায়িত্ব সমুন্নত রাখুন। এর অর্থ হলো এক মিনিটের জন্যও কোনো অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া উচিত নয়।

সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ জামান জানান, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। শিগগিরই একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে। একই সঙ্গে তিনি দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার কথা বলেন। নাগরিকদের সহিংসতা বন্ধের আহ্বানও জানান তিনি।

দায়িত্ব নিচ্ছি আর একটি গুলিও হবে না : সেনাপ্রধান

সেনাপ্রধান জনগণকে আশ্বস্ত করে বলেন, সম্প্রতি সংঘটিত সব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করব আমরা। দেশে আর কোনো কারফিউ বা জরুরি অবস্থার প্রয়োজন নেই। সোমবার রাতেই একটি সমাধান বের করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

কোটা আন্দোলন শুরু এবং চাওয়া

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। গত ৩ জুলাই (বুধবার) দুপুর আড়াইটায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে একত্রিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এ আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এরপর মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট মোড়, মৎস্যভবন হয়ে শাহবাগ আসেন শিক্ষার্থীরা।

২০১৮ সালের প্রথম পর্যায়ের কোটা আন্দোলনে পাঁচ দফা দাবি দেওয়া হয়। এবার প্রথমে কোটা সংস্কারের দাবি, পরে ৯ দফা এবং সবশেষে এক দফা দাবি দিয়ে সরকার পতন করে আন্দোলনকারীরা।

কোটা সংস্কারের প্রথম দফা আন্দোলনে ২০১৮ সালের ১৩ মার্চের মধ্যে দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য একটি আলটিমেটাম দেওয়া হয়। তারপর আবার ৯ এপ্রিল কয়েক হাজার সমর্থক কর্মী গণপদযাত্রা করে বেলা ৩টায় শাহবাগে এসে জমা হন। কিন্তু সেদিন সরকারি বাহিনী ওই জমায়েতকে কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে আন্দোলন থেমে না গিয়ে আরও তীব্র হয়ে ওঠে। কিছুতেই যখন এই আন্দোলন থামানো যাচ্ছিল না, তখন ১১ এপ্রিল সংসদে সব ধরনের কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্ভবত এটি ‘আবেগপ্রসূত’ বা ‘বিরক্তিবশত’ একটি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত ছিল। তিনি নিজেও পরে স্বীকার করেছেন বিষয়টি।

জাতীয় সংসদে সব রকম কোটা বাতিলের ঘোষণার পর ২০১৮ সালের অক্টোবরে যে নির্বাহী পরিপত্র জারি করা হয়েছিল, তার বিরুদ্ধে ২০২১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা হাইকোর্টে একটি রিট করেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলন : বন্ধ সায়েন্স ল্যাব-মিরপুর সড়ক

হাইকোর্ট ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর এই কোটা পরিবর্তনের পরিপত্রটিকে বাতিল করে দেন। ফলে সব ধরনের কোটা আবার পুনর্জীবিত হওয়ার একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়। সরকার এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে। এই আপিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হওয়ার প্রথম তারিখ ঠিক হয় গত ৪ জুলাই। কিন্তু ক্রমান্বয়ে ছাত্রদের আন্দোলন বাড়তে থাকলে গত ২৩ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে রায় দিতে বাধ্য হন আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে সরকারের পরিপত্র বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া ‘বিতর্কিত’ রায় বাতিল করেন। পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে ৭ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত রাখার নির্দেশনা দেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ; প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর জন্য এক শতাংশ এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য এক শতাংশ কোটা রাখতে বলেছেন সর্বোচ্চ আদালত।

বক্তব্যই কাল হলো শেখ হাসিনার

গত ১৪ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোটা বিষয়ে আমার কিছু করার নেই। মামলার পর আদালত যে রায় দেন, এতে নির্বাহী বিভাগের কিছু করার নেই। আদালতেই সমাধান হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে?

জার্মানি সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন শুরু

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরই ১৪ জুলাই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের স্লোগান ওঠে, ‘আমি কে? তুমি কে? রাজাকার রাজাকার’। পরে তা বদলে হয় ‘চেয়েছিলাম অধিকার/ হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘আমি কে? তুমি কে? রাজাকার, রাজাকার/ কে বলেছে? কে বলেছে? সরকার, সরকার’। ক্ষেত্রবিশেষে সরকারের বদলে ‘স্বৈরাচার’ শব্দটিও শোনা গেছে। এরপর এই আন্দোলন আর দমানো যায়নি। সরকারি-বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা রাজধানীর সব সড়ক অবরোধ করে প্রতিদিনই আন্দোলন করেন। আন্দোলন পরবর্তীতে এমনভাবে বৃদ্ধি পায় যা আর কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি।

কাদেরের বক্তব্য উসকে দেয় সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকে

গত ৪ জুলাই আদালত যখন শুনানি আরও এক মাস পেছান তখন ছাত্রদের আন্দোলন আরও তীব্রতর হতে থাকে। অবশেষে ৬ জুলাই কোটাবিরোধীরা সারা দেশে ‘বাংলা বন্ধের’ ডাক দেন। সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ, পরীক্ষা বর্জন ও সাধারণ ছাত্র ধর্মঘটের আহ্বান জানান।

গত ১১ জুলাই ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটাবিরোধীরা সর্বোচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে যে শক্তি প্রদর্শন করছেন, তা বেআইনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা লিমিট ক্রস করে যাচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলন বাতিল করলেন ওবায়দুল কাদের

সারা দেশব্যাপী জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে কোটা আন্দোলন করতে দেওয়া প্রশাসনিক দুর্বলতা কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এটা প্রশাসনিক দুর্বলতা নয়, আমরা ধৈর্য ধরছি। ধৈর্য ধরা মানে দুর্বলতা নয়। আমরা জোড় করে আন্দোলনের ওপর চড়াও হব, তখন আপনি কি বলবেন? সময়মতো সব কিছুই দেখবেন, সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেওয়া হবে।

সেসময় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের রাজাকার স্লোগানের জবাব ছাত্রলীগই দেবে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ছাত্র আন্দোলনের কতিপয় নেতা যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটার জবাব ছাত্রলীগই দেবে। ছাত্রদের বিষয় ক্যাম্পাস পর্যন্ত সীমিত থাকবে। আমরা দেখি রাজনৈতিকভাবে কারা প্রকাশ্যে আসে, তখন দেখা যাবে। আমরাও মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।

ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পর ছাত্রলীগের হামলা

ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পরই গত ১৬ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের সামনে প্রথমে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে দফায় দফায় ক্যাম্পাসজুড়ে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ইটপাটকেল ছোড়ার ঘটনা ঘটে।

পরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী একজোট হয়ে ফের আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র, রড ও লাঠিসোঁটা হাতে থাকা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর দখলে চলে যায় ক্যাম্পাস। সংঘর্ষের সময় কয়েকজন যুবককে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দেখা গেছে। সন্ধ্যায় বহিরাগতদের ক্যাম্পাস থেকে বের করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সেখানে পুলিশ প্রবেশ করে। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর মধ্যরাতে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে পুলিশ।

কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র

আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার পরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে এর প্রতিবাদে ছাত্রলীগের পদধারী অনেক নেতা পদত্যাগ করেন। এর বাইরে অনেক কর্মী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেন।

সমন্বয়কদের নিয়ে ডিবিপ্রধান হারুনের কাণ্ড

গত পহেলা আগস্টে ডিবি হেফাজতে নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর আগে গত ২৮ জুলাই (রোববার) বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে’ তাদের আটক করা হয়েছে।

হারুন এখন কোথায়?

গত ২৭, ২৮ ও ২৯ জুলাই নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ ও নুসরাত তাবাসসুমকে হেফাজতে নেয় ডিবি। ডিবি কার্যালয় থেকে সমন্বয়কদের জোড় করে বিবৃতি দিতেও বাধ্য করেন হারুন। যা ছাড়া পেয়ে গণমাধ্যমকে জানান সমন্বয়করা।

ডিবি হারুনের পক্ষে সাফাই গেয়েছিলেন আইনমন্ত্রী

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক গত পহেলা আগস্ট (বৃহস্পতিবার) বলেন, তারা (সমন্বয়ককারীরা) আমাদের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। এ ব্যাপারে জিডিও করা হয়েছিল। এখন তারা বলছেন তাদের আর নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই। যখন তারা চলে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, চলে যেতে আমরা কোনো বাধা দেইনি। তারা চলে গেছেন।

সমন্বয়করা চলে গেছে, তাদের বাধা দেওয়া হয়নি : আইনমন্ত্রী

সমন্বয়কদের ডিবি অফিসে নেওয়ার বিষয়ে করা মামলা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী জানান, ৬ সমন্বয়ককে ডিবি অফিসে নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার জন্য। সেটাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট ডিভিশনে একটা মামলা করা হয়েছিল। একজন বিচারপতি অসুস্থতার কারণে ছুটিতে থাকায় শুনানি হচ্ছে না।

স্বাধীনতার পর দুইবার নির্বাসনে শেখ হাসিনা

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যা করা হয়। তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সেই সময় বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। স্বামী ওয়াজেদ মিয়ার কর্মসূত্রে জার্মানিতে ছিলেন শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা গিয়েছিলেন বোনের কাছে বেড়াতে। দেশে স্বজনদের হারিয়ে এরপর নির্বাসিত জীবন শুরু হয় শেখ হাসিনার, আশ্রয় পান ভারতে। ছন্নছাড়া আওয়ামী লীগকে এক করতে ১৯৮১ সালে দলের ত্রয়োদশ কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ওই বছরের ১৭ মে দেশে ফিরে দলের দায়িত্ব নেন তিনি।

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত যুক্তরাজ্যের

এরপর ১৯৯৬ সালে ভোটে জিতে শেখ হাসিনা প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। আর ২১ বছর পর ক্ষমতায় ফিরে আওয়ামী লীগ। ২০০১ সালের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর আবারও বিরোধী দলে যান শেখ হাসিনা। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। প্রায় দুই বছর পর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে ২০০৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা। এরপর টানা সাড়ে ১৫ বছর দেশ শাসন করেন। তিন নির্বাচনে নানা বিতর্কের মধ্যেও ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পেরেছিলেন শেখ হাসিনা। এবার ছাত্রজনতার তীব্র গণ-আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তিনি।

 



বিষয়: #



আর্কাইভ