বৃহস্পতিবার ● ৮ আগস্ট ২০২৪
প্রচ্ছদ » জাতীয় » নির্বাচন কমিশনারদের পদত্যাগের আল্টিমেটাম ছাত্র-জনতার
নির্বাচন কমিশনারদের পদত্যাগের আল্টিমেটাম ছাত্র-জনতার
ইসি সচিবালয়ের গেটে ব্যানার
নিজস্ব প্রতিবেদক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রভাব ও হামলা আতঙ্ক কাটিয়ে এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কার্যক্রম। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনারদের পদত্যাগের দাবি উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) ইসি সচিবালয়ের পূর্ব পাশের মূলগেটের পাশে একটি ব্যানার লাগিয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার পক্ষে ওই দাবি জানানো হয়েছে।
ইসি ভবনে সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটির গেটের পাশে সাটানো ওই ব্যানারে লেখা রয়েছে- ‘বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা হত্যা এবং গণহত্যার দায়ে সকল নির্বাচন কমিশনারকে পদত্যাগ করতে হবে’ ছাত্র-জনতা। ইসি ভবনের সামনে লাগানো ওই ব্যানার কারা লাগিয়েছে জানতে চাইলে সেই গেটে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মীরা জানান, গতকাল বিকেল ৪টার দিকে মাঝবয়সী ৬ থেকে ৭ জন লোককে গেটের পাশে ওই ব্যানারটি লাগাতে দেখেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংস্থাটির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ খবরের কাগজকে জানান, অফিসের স্টাফদের কাছে তিনি ওই ব্যানারটি লাগানোর খবর পেয়েছেন। ব্যানারের পাশাপাশি ইসিতে কোন হুমকি এসেছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না। লিখিত বা সরাসরি কোন ধরনের হুমকি আমরা পাইনি। তবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন চৌদ্দদলীয় জোট সরকারের পদত্যাগ পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ইসি ভবনে হামলা হতে পারে- এমন উড়ো খবরে গত মঙ্গলবার ও বুধবার (৬ ও ৭ আগস্ট) আমাদের কর্মকর্তাদের মধ্যে হামলার আতঙ্ক ছিলো। গতকাল থেকে সবকিছু স্বাভাবিক, সবাই নিয়মিত অফিস করছেন’।
এদিকে ইসি ভবনের গিয়ে জানা যায়, অফিসের কার্যক্রম চালু হওয়ার দুদিন পর বৃহস্পতিবার অফিস করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সিইসি দুপুর ১২টার দিকে নির্বাচন ভবনে আসেন এবং চলে যান বিকেল ৩টার দিকে। এ ছাড়া, নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান পুরো সময় অফিস করেন। তবে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর, রাশেদা সুলতানা ও মো. আনিছুর রহমান অফিস করেননি। এছাড়া ইসি সচিব শফিউল আজিম, অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ, নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার অতিরিক্ত সচিব মো. ফরহাদ আহাম্মদ খানসহ সংস্থাটির বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এর আগে বুধবার নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান, মো. আলমগীর ও রাশেদা সুলতানা, ইসি সচিব শফিউল আজিম ও অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও অফিসে ছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত হওয়ার দিন মঙ্গলবারও ইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যথাসময়ে উপস্থিত ছিলেন। তবে বেলা ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা আগারগাঁওয়ে দিকে আসছে- এমন উড়ো খবর ছড়িয়ে পড়লে ভবনে হামলার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে ভবন থেকে সামনের সড়কে নেমে আসেন অনেকে এবং দুপুর ১টার আগেই বেশিরভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারি চলে যান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবিতে গত সোমবার (৫ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু কন্যা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়ার পর থেকে আন্দোলনকারী ছাত্র জনতার বিজয় উল্লাস আর ধ্বংসাত্মক নানা কর্মকাণ্ডে দেশব্যাপী নানা অস্থিরতা বিরাজ করছে। আর ঢাকার রাজপথে চলা সেইসব কর্মকাণ্ডে ভীতিকর প্রভাব পড়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে।
বিষয়: #নির্বাচন কমিশনারদের পদত্যাগের আল্টিমেটাম ছাত্র-জনতার