শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১
Swadeshvumi
শুক্রবার ● ১৬ আগস্ট ২০২৪
প্রচ্ছদ » জাতীয় » সহিংসতায় এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
প্রচ্ছদ » জাতীয় » সহিংসতায় এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
৪৫ বার পঠিত
শুক্রবার ● ১৬ আগস্ট ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সহিংসতায় এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

---

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকাসহ সারাদেশে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনগতকাল শুক্রবার (১৬ আগস্ট) নর্থইস্ট নিউজকে টেলিফোনে দেওয়া ৪৫ মিনিটের একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ঢাকার কিছু জায়গায় এবং অন্যান্য জেলায় আন্দোলনরতদের বেশিরভাগ ছিলো ছাত্র ও তরুণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পুলিশ বাহিনী গুলি চালায় অথবা প্রাণঘাতী অস্ত্র দিয়ে হামলা করে।’

গত ১৫ আগস্ট ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা নর্থইস্ট নিউজকে জানান, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এবং জেলা পর্যায়ের নেতাদের ওপর প্রথম মনোনিবেশ করেছে, যারা ভারত এবং অন্যান্য দেশে পালিয়ে গেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পর্যায়ক্রমে জেলা পর্যায়ের নেতাদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছে। বিশেষ করে তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে তারা খুজে বের করতে আগ্রহী।

একটি সূত্র জানিয়েছে, হাসান মাহমুদকে সেনাবাহিনী আটক করেছে- আগে এমন ধারণা করা হলেও এখনো তার সন্ধান মেলেনি। সে কোথায় লুকিয়ে আছে, আমরা জায়গাটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। আওয়ামী লীগ সরকারের অর্ধেক নেতাকে খুঁজে বের করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে ভারতের নয়াদিল্লিতে গিয়ে আশ্রয় নেনএ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ক্ষমতার নেশায় শেখ হাসিনা একটি অত্যাচারী রাজত্বের সভাপতিত্ব করে গেছেন এবং মানুষের জীবন নিয়ে তিনি বিশেষ মাথা ঘামাতেন না। তার মন্ত্রিপরিষদের কিছু মন্ত্রী যেমন আসাদুজ্জামান খান কামাল (স্বরাষ্ট্র), আনিসুল হক (আইন) এবং ওবায়দুল কাদের (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) এবং বেশকিছু সিনিয়র পুলিশ অফিসার- যারা এই হত্যাযন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল।’ আওয়ামী লীগের শাসনামলে আসাদুজ্জামান খান কামাল ২ হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন সাখাওয়াত হোসেন। সেই সঙ্গে তিনি আওয়ামী লীগের দুর্নীতির তদন্ত ত্বরান্বিত করতে দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন।

১৯৪৫ পরবর্তী জার্মানিতে ঘটে যাওয়া ‘নুরেমবার্গ ট্রায়ালের’ মতোই তদন্ত হবে উল্লেখ করে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এরপর একটি সর্বজনীন আদেশ জারি করা হবে; যা বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ড, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ব্যাপক তদন্ত শুরু করবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি বিপুলসংখ্যক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘তাদের শান্ত করতে আমার টানা পাঁচ ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে। আমি তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, হাসিনা সরকারের আমলে তারা কাকে হত্যা করেছে? কার নির্দেশে হত্যা করেছে? অফিসারদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা আমার পা ছুঁয়ে, আমাকে জড়িয়ে ধরে অনুশোচনার ভঙ্গিতে ক্ষমা চেয়েছেন’

এরই মধ্যে এম সাখাওয়াত হোসেনের অধীনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুলিশ বাহিনীর ইউনিফর্ম এবং প্রতীক পরিবর্তন করার নির্দেশ দিয়েছে। তিনি বলেন, এই প্রস্তাবের জন্য মন্ত্রিসভার অনুমোদনের প্রয়োজন হবে, আশা করি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তা চলে আসবে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন ঠিক করবে পুলিশ বাহিনীকে কীভাবে পরিচালনা করা হবে। এই উপদেষ্টার মতে, ‘কাজটি কঠিন হবে। বেশকিছু অফিসারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই কর্মকর্তারা মাদক ব্যবসায় লিপ্ত এবং বদলি-পোস্টিং র‌্যাকেট চালিয়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করত। তদন্ত শেষ হলে তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।’

ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার ‘অদৃশ্য ষড়যন্ত্রকারী এবং শত্রুদের দ্বারা পরিবেষ্টিত’- এ কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা কেউ টুকরে টুকরে গ্যাং নই ভারতীয় এস্টাবলিশমেন্টের কাছে তার বার্তা হলো- আপনি কি ঢাকায় বন্ধুত্বপূর্ণ না শত্রু সরকার চান? কারণ যে দেশ পরাশক্তি হতে চায়, তাকে বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী দেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা



বিষয়: #



আর্কাইভ