সোমবার ● ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
প্রচ্ছদ » জাতীয় » ইভিএম কিনতে ৮৭১১ কোটি টাকার প্রকল্প ইসি’র অনুমোদন
ইভিএম কিনতে ৮৭১১ কোটি টাকার প্রকল্প ইসি’র অনুমোদন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন করে প্রায় দুই লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন কেনা, মেরামত ও আগেরগুলো রক্ষণাবেক্ষণের প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আগামী সংসদ নির্বাচনে কমপক্ষে দেড়শ’ আসনে ইভিএম ব্যবহারের লক্ষ্যে কমিশন সভায় এটি চূড়ান্ত করা হয় বলে জানান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আলমগীর।
গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটি এরপর একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে বলেও জানান এই কমিশনার।
আলমগীর বলেন, ‘আপনারা জানেন, সোমবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে কমিশনের সভা ছিল। এর আগেই সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। বর্তমানে আমাদের কাছে যতগুলো ইভিএম রয়েছে তা দিয়ে ৭০টি আসনে ভোটগ্রহণ করা সম্ভব। ফলে ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট হলে আমাদের আরও ইভিএম মেশিন ও সরঞ্জামাদি লাগবে। এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্প তৈরির জন্য সচিবালয়কে বলা হয়েছিল। সেটা তারা তৈরি করে গত সভায় উপস্থাপন করেছিল। সেখানে আমাদের কিছু প্রশ্ন ছিল। সে প্রশ্নের উত্তরগুলো সঠিকভাবে দিতে পারেনি বলে আমরা তাদের বলেছিলাম এগুলো ঠিক করে নিয়ে আসার জন্য। তথ্যগুলো আজকের সভায় যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এবার সব তথ্য ঠিক থাকায় কমিশন এটার অনুমোদন দিয়েছে। এখন পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। তারা অনুমোদন করবে কি করবে না- এটা তাদের বিষয়।’ তিনি আরও জানান, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানোর আগে জনবলের জন্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি সভা করবে কমিশন।
সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর ইভিএম ব্যবহার বিষয়ে দেওয়া মতামত রোডম্যাপে সঠিকভাবে ওঠে আসেনি- গণমাধ্যমের এমন প্রতিবেদন নিয়েও ব্যাখ্যা দেন মোহাম্মদ আলমগীর। তিনি বলেন, ভোটার তালিকার সঙ্গে ইভিএমেও ফটো দেখা যায়। কাজেই কারও আঙুলের ছাপ না মিললেও একজনের ভোট অন্যজন দেওয়ার সুযোগ নেই। কারও আঙুলের ছাপ না মিললে সেই ফটো মিলিয়ে দেখা হয়।
এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, এ প্রকল্পে মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় আরও প্রায় ২ লাখ ইভিএম কেনা হবে। প্রস্তাবিত এই বাজেটে ইভিএম রক্ষণাবেক্ষণ, জনবল তৈরি এবং প্রশিক্ষণের জন্য ব্যয় রাখা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই প্রকল্প পাশের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে।
সোমবারের কমিশন সভায় চার নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। আর কোভিডে আক্রান্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বাসা থেকেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন। তার সভাপতিত্বেই কমিশনের এ মুলতবি সভা হয়। গত বৈঠকে প্রকল্পের ইভিএমের বাজার দরসহ নানা বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য না পাওয়ায় সভাটি মুলতবি করা হয়। সোমবারের সভায় সবকিছু পর্যালোচনা করে প্রস্তাবিত প্রকল্পে সায় দেয় কমিশন।
ইভিএম নিয়ে শুরু থেকেই রয়েছে বিতর্ক। একপক্ষ এই পদ্ধতির ভোটকে সাধুবাদ জানালেও বিএনপিসহ দেশের অন্যান্য অনেক রাজনৈতিক দল শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও নির্বাচন কমিশন মনে করে, ইভিএমেও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। এক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইভিএম পদ্ধতির ভোটকে মডেল হিসেবেও সামনে তুলে ধরছে ইসি। এরই মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচনে সারাদেশে অন্তত ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে কমিশন।
বিষয়: #ইসি’র ইভিএম কেনার প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদন