বৃহস্পতিবার ● ২০ অক্টোবর ২০২২
প্রচ্ছদ » জাতীয় » গাইবান্ধা-৫ আসনে উপ-নির্বাচনের সময় আরও ৯০ দিন বৃদ্ধি
গাইবান্ধা-৫ আসনে উপ-নির্বাচনের সময় আরও ৯০ দিন বৃদ্ধি
গাইবান্ধা-৫ শূন্য আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন। সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে ইসি এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় বাড়িয়েছে বলে গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এতে করে ওই আসনে উপনির্বাচন সম্পন্ন করতে আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় পেলো ইসি। কারণ নির্ধারিত সময়ে গাইবান্ধা-৫ ওই উপনির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়।
নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব (পরিচালক-জনসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামান সই করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সংবিধান অনুযায়ী কোনও সংসদীয় আসন শূন্য হলে শূন্য ঘোষণার ৯০ দিনের মধ্যে ওই আসনে উপ-নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে, দ্বৈবদুর্বিপাকে ওই সময়ের মধ্যে ভোট করতে না পারলে প্রধান নির্বাচন কমিশন আরও ৯০ দিন সময় বাড়াতে পারে। করোনা মহামারির সময় বেশ কয়েকটি উপনির্বাচনে এভাবে সময় বাড়িয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
ইসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়- গত ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা-৫ শূন্য আসনের নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম হওয়ায় নির্বাচন কমিশন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ৯১ (ক) অনুচ্ছেদের বিধান মতে সম্পূর্ণ নির্বাচনি এলাকার ভোটগ্রহণসহ সকল নির্বাচনি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে। সংবিধানের ১২৩ (৪) অনুচ্ছেদের বিধান মতে-জাতীয় সংসদের কোনও সদস্যপদ শূন্য হলে শূন্য হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে উক্ত শূন্যপদ নির্বাচনের মাধ্যমে পূরণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। উক্ত ৯০ দিবসের মেয়াদ ২০ অক্টোবর ২০২২ তারিখে সমাপ্ত হবে। কিন্তু গাইবান্ধা-৫ শূন্য আসনের সম্পূর্ণ নির্বাচনি এলাকার নির্বাচন বন্ধ ঘোষিত হওয়ার কারণে ৯০ দিনের মধ্যে সকল আবশ্যক আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ৮ দিনের মধ্যে পুনঃনির্বাচন কোনভাবেই সম্ভব নয়।
বাংলাদেশের সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের (৪) দফা অনুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এখতিয়ারের প্রসঙ্গ টেনে গাইবান্ধা ভোট বন্ধের অবস্থাটি অনাকাক্সিক্ষত, অকল্পনীয় ও নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত বিবেচনায় দৈবদুর্বিপাক গণ্য করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার চলতি অক্টোবর মাসের ২০ তারিখের পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে তথা আগামী ২০ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখের মধ্যে জাতীয় সংসদের গাইবান্ধা ৫ শূন্য আসনের শূন্য পদ নির্বাচনের মাধ্যমে পূরণের লক্ষ্যে পরবর্তী নতুন মেয়াদ নির্ধারণ করেছে। সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পরবর্তী সকল কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ প্রদান করা হয়।
গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে উপনির্বাচনে গত বুধবার সকালে ভোট গ্রহণ শুরুর পর থেকেই নানা অনিয়মের কারণে একের পর এক কেন্দ্রের ভোট বাতিল করে ইসি। দুপুর নাগাদ এক-তৃতীয়াংশ কেন্দ্রের ভোট বাতিল করে। শেষ পর্যন্ত ভোটগ্রহণে ব্যাপক অনিয়মের পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে ভোট শেষ হওয়ার দেড় ঘণ্টা আগেই পুরো সংসদীয় এলাকার ভোট বন্ধের ঘোষণা করে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এর আগে বেলা দেড়টার মধ্যে ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫১টি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নিকট অতীতে একইসঙ্গে পুরো নির্বাচনি আসনের ভোট বন্ধের ঘটনা ঘটেনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব মিহির সারওয়ার মোর্শেদ বলেছেন, তার জানা মতে এভাবে পুরো আসনের ভোট বন্ধের ঘটনা ঘটেনি। তবে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের সময় স্থানীয় জনগণের প্রতিরোধের মুখে নারায়ণগঞ্জের একটি আসনের এক উপজেলায় ভোট গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৫ আসন। এর মধ্যে সাঘাটা উপজেলার ১০টি ও ফুলছড়ি উপজেলার সাতটিসহ মোট ইউনিয়ন ১৭টি। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৭০ হাজার ১৬০ জন।
গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর নিয়ম অনুযায়ী ওই আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
বিষয়: #গাইবান্ধা-৫ আসনে উপ-নির্বাচন