শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১
Swadeshvumi
শুক্রবার ● ২১ অক্টোবর ২০২২
প্রচ্ছদ » জাতীয় » ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো দু’দিনব্যাপী সংগীত উৎসব
প্রচ্ছদ » জাতীয় » ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো দু’দিনব্যাপী সংগীত উৎসব
২৬২ বার পঠিত
শুক্রবার ● ২১ অক্টোবর ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো দু’দিনব্যাপী সংগীত উৎসব

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত উৎসবের উদ্বোধনী দিনে বুধবার রাতে টিএসসি মিলনায়তনে সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রতিষ্ঠানটির সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

শাহনাজ পারভীন এলিস

‘শতবর্ষের আলোয় সংগীত’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় দু’দিনব্যাপী সংগীত উৎসব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র- টিএসসি মিলনায়তনে বুধবার সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে দু’দিনব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

---

উৎসবের শুরুতে সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. দেবপ্রসাদ দাঁ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ মিহির লাল সাহা। উৎসবের প্রথম দিন অনুষ্ঠানে বাংলা গানের অসামান্য অবদানের দুজন শিল্পীকে সম্মাননা দেওয়া হয়। সম্মাননাপ্রাপ্ত শিল্পীরা হলেন- প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমান এবং অধ্যাপক ড. রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। এছাড়া প্রতি বছরের মতো এ বছরও ঢাবি সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভাগের প্রয়াত শিক্ষক নীলুফার ইয়াসমীন স্মারক বৃত্তি এবং মো. শহিদুল ইসলাম স্মারক বৃত্তি দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগীত বিভাগের দুই শিক্ষক।

---

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘গত দু’বছর করোনা মহামারির কারণে এ উৎসব করা সম্ভব হয়নি। এই উৎসব শুধু সংগীত বিভাগের বড় উৎসব নয়, এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় উৎসব। তাই এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। প্রতিবছর এর জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকেন। দীর্ঘদিন পর দু’দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য এই উৎসবের আয়োজন হওয়ায় তাদের সেই আগ্রহের অবসান হলো। সংগীত বিভাগের বয়স বেশি নয়, তবু এরই মধ্যে এই বিভাগ তার নিজস্ব আলো ছড়িয়েছে।’ এসময় মহামারির স্থবিরতা কাটিয়ে এ ধরনের উৎসবের আয়োজন করার জন্য সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মী ও কলাকুশলীদের ধন্যবাদ জানান উপাচার্য।

---

উৎসবের প্রথম দিন আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- দেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা, সাদি মোহাম্মদ, কিরণ চন্দ্র রায়, ইয়াকুব আলী খান, ছায়া কর্মকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগের পরিবেশনায় উদ্বোধনী আয়োজনে ছিলো- শাস্ত্রীয় সংগীত, রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল সংগীত, লোক সংগীত ও তবলা মিলিত পরিবেশনা। উৎসবে শুরুতেই সমবেতভাবে পরিবেশন করা হয় তবলায় লহরা। সংগীত বিভাগের তবলা বিষয়ের শিক্ষার্থীরা এই লহরা পরিবেশনা করেন। এতে অংশগ্রহণ করেন বিভাগের আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী।

এরপর কণ্ঠশিল্পী অধ্যাপক ড. রেজওয়ান চৌধুরী বন্যা একক গান পরিবেশন করেন। তারপর আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্য থেকে একক গান পরিবেশন করেন- স্বরাজ সাহা, ছায়া কর্মকার, ইয়াকুব আলী খান, পূর্বা সরকার, মোহাম্মদ শোয়েব ও কিরণ চন্দ্র রায়। এছাড়া বিভাগের শিক্ষার্থীদের সমবেত অংশগ্রহণে রবীন্দ্রসংগীত- ‘ওহে দয়াময়’, ‘আমার প্রাণের গভীর গোপন’; নজরুল সংগীত ‘আজি রক্ত নিশি ভোরে’ ‘নাচের নেশায় ঘোর লেগেছে’ এবং লোকসংগীত ‘ছাতা ধরো হে দেওড়া’ ‘গ্রামের নওজোয়ান’ ইত্যাদি গান পরিবেশিত হয়।

---

উৎসবের দ্বিতীয় দিন গতকাল বৃহস্পতিবার উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশনা দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর আলোচনা পর্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। বিশেষ অতিথি ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির। এছাড়া অনুষ্ঠানে সংগীত বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা পর্ব শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন অতিথি শিল্পীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. দেবপ্রসাদ দাঁ সংবাদ সারাবেলাকে জানান, ‘এবছর সংগীত বিভাগ তার পথচলার ২৭ বছর পূর্ণ করছে। বাংলাগানে পাঁচ গীতিকবির গান, আধুনকি গান, লোকগানসহ বাংলা গানের নানা বিষয়ের পরিবেশনায় মৌলিকত্বের পাশাপাশি নতুনত্ব ও পরীক্ষণ এবারের উৎসবের মূল আকর্ষণ। আমরা এই উৎসবের মধ্য দিয়ে সমগ্র দেশের সংস্কৃতি অনুরাগী মানুষের সাথে মেলবন্ধন ঘটাতে চাই।’ এছাড়া দু’দিনব্যাপী এই উৎসবে গত একশতকের বাংলা গানের রূপরেখা সংগীতের মাধ্যমে তুলে ধরছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।

দু’দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য এই উৎসবে শাস্ত্রীয়, রবীন্দ্র, নজরুল ও লোক সংগীতসহ শিল্পীদের নানা ধরনের পরিবেশনা উপভোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থী। ১৯৯৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগীত বিভাগ প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক সংগীত বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার সূচনা ঘটে।



বিষয়: #



আর্কাইভ