শনিবার ● ২২ অক্টোবর ২০২২
প্রচ্ছদ » জাতীয় » শুরু হলো গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব
শুরু হলো গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব
বাংলাদেশ ও ভারতের হাজার চারেক শিল্পীর অংশগ্রহণে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হলো ১১ দিনব্যাপী গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব। আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এবারের উৎসবে বাংলাদেশ ও ভারতের ১২২টি সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশগ্রহণ করবে।
শুক্রবার জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক পর্ষদ আয়োজিত এ উৎসব উদ্বোধন করেন নাট্যকার আতাউর রহমান। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, “ভারত ও বাংলাদেশের মৈত্রীর বন্ধনকে সুদৃঢ় করতে এ উৎসবের যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, একইসঙ্গে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রেও এ উৎসবের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।”
এই উৎসবের মধ্য দিয়ে মানুষের মাঝে বন্ধন গড়ে উঠে মন্তব্য করে উদ্বোধক আতাউর বলেন, “এই উৎসব বাংলাদেশ ও ভারতের সাংস্কৃতিক বিনিময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।” রামেন্দু মজুমদার বলেন, “সাম্প্রদায়িক শক্তির আস্ফালন রুখে দিতে না পারলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ পথ হারাবে।”
গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব পর্ষদের আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন আসাদুজ্জামান নূর, মামুনুর রশীদ, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী শাহ আলম সারোয়ার এবং সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক মো. আহকাম উল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য ও সঞ্চালনা করেন উৎসব পর্ষদের সদস্যসচিব আক্তারুজ্জামান।
উদ্বোধনী সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে মঞ্চায়িত হয় থিয়েটার প্রযোজিত নাটক ‘পোহালে শর্বরী’। সুরেন্দ্র বর্মার মূল রচনা থেকে এটি অনুবাদ করেছেন অংশুমান ভৌমিক, নির্দেশনা দিয়েছেন রামেন্দু মজুমদার।
একই সন্ধ্যায় পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় পুলিশ থিয়েটারের নাটক ‘অভিশপ্ত অগাস্ট’। রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদুর রহমান। আর স্টুডিও থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় মানিকগঞ্জের নিরাভরণ থিয়েটার প্রযোজিত নাটক ‘জুঁইমালার সইমালা’। রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন আনন জামান।
এছাড়া মহিলা সমিতি মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় লোক নাট্যদল (বনানী) প্রযোজিত ‘কঞ্জুস’। মলিয়রের মূল রচনা থেকে রূপান্তর করেছেন তারিক আনাম খান, নির্দেশনা দিয়েছেন কামরুন নূর চৌধুরী।
আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এবারের উৎসবে বাংলাদেশ ও ভারতের ১২২টি সাংস্কৃতিক সংগঠনের চার হাজারের মতো শিল্পী অংশগ্রহণ করবেন বলে জানান উৎসবের আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছ। তিনি বলেন, “এই উৎসবের মধ্য দিয়ে অনেক মানুষের মেলবন্ধন ঘটবে। নতুন প্রজন্ম নিজস্ব সংস্কৃতির প্রতি দায়িত্ববোধে আবদ্ধ হবে।”
শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তন, পরিক্ষণ থিয়েটার হল, স্টুডিও থিয়েটার হল ও সঙ্গীত আবৃত্তি ও নৃত্য মিলনায়তন এবং বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে ভারতের চারটি দল, ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ৪০টি নাট্যদলসহ মোট ৪৪টি মঞ্চনাটক প্রদর্শনীর পাশাপাশি ১৮টি সঙ্গীত আবৃত্তি ও নৃত্যদলের পরিবেশনা থাকছে উৎসবে।
এ ছাড়া এ আয়োজনে উন্মুক্ত মঞ্চে পথ নাটক হবে ৯টি। ১৫টি আবৃত্তি সংগঠন, ১২টি সঙ্গীত সংগঠন, ৭টি নৃত্য সংগঠন, ১০টি শিশুদলের পাশাপাশি একক আবৃত্তি ও একক সঙ্গীত পরিবেশনাও থাকছে।
উন্মুক্ত মঞ্চের সাংস্কৃতিক পর্ব প্রতিদিন বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত এবং মঞ্চনাটক প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে। মঞ্চ নাটক দেখতে টিকেট কিনতে হবে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি এবং আইএফআইসি ব্যাংকের সহযোগিতায় এ উৎসব উদযাপিত হচ্ছে।
উৎসবের সদস্য সচিব আকতারুজ্জামান বলেন, মৌলবাদীদের উত্থান ঠেকাতে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে সম্মুখে লড়াই করেছে সংস্কৃতিকর্মীরা। সংস্কৃতির এই মহাশক্তিকে আরও একবার বিপুল জনগোষ্ঠীর সম্মুখে উপস্থাপনের লক্ষ্যে আবারো আয়োজিত হচ্ছে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব।
বিষয়: #গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব