শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১
Swadeshvumi
রবিবার ● ৩০ অক্টোবর ২০২২
প্রচ্ছদ » জাতীয় » মোবাইল ফোন ব্যবহারেও বাড়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি: বিএসএমএমইউ উপাচার্য
প্রচ্ছদ » জাতীয় » মোবাইল ফোন ব্যবহারেও বাড়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি: বিএসএমএমইউ উপাচার্য
৩৫৭ বার পঠিত
রবিবার ● ৩০ অক্টোবর ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মোবাইল ফোন ব্যবহারেও বাড়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে গতকাল রোববার সকালে বিএসএমএমইউতে আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সেমিনারে বক্তারা।

# স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাসে চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ জরুরি

# মানসিক চাপ কমিয়ে শরীর চর্চা ও কায়িক পরিশ্রমের পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মোবাইল ফোনের অধিক ব্যবহারেও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে গতকাল রোববার সকালে বিএসএমএমইউ এর শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

নিউরোসার্জারি বিভাগের আয়োজনে বৈজ্ঞানিক সেমিনার উপাচার্য বলেন, দ্রুত সময়ে স্ট্রোকের রোগীদের হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হলে অনেক মৃত্যু ও পক্ষাঘাত রোধ করা সম্ভব। স্ট্রোকের রোগের চিকিৎসা করার চেয়ে প্রতিরোধ করা জরুরি। এজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। খাবারে লবণ না খাওয়া, ডায়াবেটিস কন্ট্রোল করা, নিয়মিত শরীর চর্চা করা, স্ট্রেস না নেয়া, ধুমপান না করার ওপর জোর দিতে হবে। তাই ওষুধের পেছনে বেশি অর্থ ব্যয় না করতে হয় সেজন্য সবাইকে রোগ প্রতিরোধে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিশ্বব্যাপী মানুষের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ স্ট্রোক। বিশ্বে প্রতি  ৪ জনের ১ জনের স্ট্রোকে মৃত্যু হয়। আর প্রতি মিনিটে এতে মৃত্যু হয় ১০ জনের। বিশ্বের ১০০ জন স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীর ৪৮ জনই উচ্চরক্তচাপে ভোগেন। বিশ্বে প্রতি হাজারে ৮ থেকে ১০ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে বিশ্বে প্রতি লাখে ২ থেকে ১৩ শিশু স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। তাদের মস্তিষ্কে স্ট্রোকের অর্ধেক হয় রক্ত চলাচল বন্ধ হওয়ার কারণে। বাকি অর্ধেক হয় মস্তিষ্কের রক্তনালি ছিঁড়ে রক্তক্ষরণের মাধ্যমে।

বাংলাদেশে স্ট্রোক রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বছরে ১০ থেকে ২৫ ভাগ শিশু স্ট্রোকে মারা যায়। ২৫ ভাগ শিশু বারবার এতে আক্রান্ত হয়। স্ট্রোকে আক্রান্ত ৬৬ ভাগ শিশুর হাত, পায়ে দুর্বলতা, খিঁচুনি দেখা দিতে পারে। এছাড়া শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হয়। এর চিকিৎসার জন্য সাড়ে ৪ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। এসময়ে সেবা দেয়া সম্ভব হলে রোগীর মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব কমানো সম্ভব। স্ট্রোক রোগীদের বিশেষ করে মাথায় রক্তক্ষরণ হলে জরুরি অপারেশন প্রয়োজন হয়। ইসকেমিক স্ট্রোক (রক্তবাহিকা নালিকা বন্ধ) হলে জরুরি অপারেশন করলে রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব।

সেমিনারে বলা হয়, স্ট্রোক প্রতিরোধে ৭টি পদক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাবারে তেল ও লবণের ব্যবহার কমানো, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, নিয়মিত শরীরচর্চা করা, ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন থেকে বিরত থাকা, ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ থাকলে নিয়ন্ত্রণে রাখা, রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা ও স্ট্রেস কমাতে নামাজ, উপাসনা বা মেডিটেশন করা।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ,  ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইন্সসহ দেশের পনের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে স্ট্রোকের অপারেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীদের আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ ও প্রয়োজনে বিশেষায়িত হাসপাতালে আসার জন্য বলা হয়। শতকরা ৮০ ভাগ স্ট্রোক আক্রান্ত ওষুধের মাধ্যমেই ভাল হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে ১০০টি বেডের অত্যাধুনিক স্ট্রোক ইউনিট চালু হলে দেশের রোগীদের আর বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।

এর আগে ‘জানুন স্ট্রোকের লক্ষণ, মিনিটেই বাঁচিয়ে দিন বহু জীবন’- এমন স্লোগানে শনিবার বিশ^ব্যাপী পালিত হয় বিশ^ স্ট্রোক দিবস। রোববার বিএসএমএমইউতে সেমিনারের আগে নিউরোমেডিসিন ও নিউরো সার্জারি বিভাগের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আলাদা গণসচেতনামূলক শোভাযাত্রা বের করা হয়। পরে সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরো সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আখলাক হোসেন খান। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্ট্রোকের চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থাপনা নিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনসের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন।



বিষয়: #



আর্কাইভ