বৃহস্পতিবার ● ১৭ নভেম্বর ২০২২
প্রচ্ছদ » জাতীয় » প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আগামী সপ্তাহে গাইবান্ধার সিদ্ধান্ত: ইসি আনিছুর
প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আগামী সপ্তাহে গাইবান্ধার সিদ্ধান্ত: ইসি আনিছুর
গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচনে অনিয়ম
# অনিয়মে জড়িতদের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হবে
# কূটনীতিকদের আচরণ জেনেভা কনভেনশনেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত
বিশেষ প্রতিনিধি
গাইবান্ধ-৫ আসনে উপ-নির্বাচনে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের রেহাই নেই উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান জানিয়েছেন, অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, আইন ও বিধিতে অনিয়মের শাস্তি যেটা আছে তাদের ক্ষেত্রে সেটাই হবে। গতকাল বুধবার আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব বলেন। তিনি জানান, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই গাইবান্ধার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে ইসি। এসময় এদেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশি কূটনৈতিকদের মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন এই নির্বাচন কমিশনার।
গাইবান্ধা-৫ আসনের অনিয়ম তদন্তের সর্বশেষ প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি আনিছুর রহমান বলেন, ‘গত সোমবার প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এখনো আমরা দেখিনি। আগেরটা দেখেছি, পড়েছি। মতামত ব্যক্ত করার সুযোগ হয়েছিল। আপনাদের মাধ্যমে জেনেছি পরের তদন্তে তারা বেশকিছু অনিয়ম পেয়েছেন। কোন কোন কেন্দ্রের সিসিটিভি ডিসকানেক্ট করা হয়েছে, ১৭টি বা এমন সংখ্যা হয়েছে বলে শুনেছি।’
আগামী সপ্তাহের মধ্যে অনিয়মের তথ্য ও ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে ইসির সিদ্ধান্ত জানা যাবে উল্লেখ করে আনিছুর রহমান বলেন, অনিয়মে ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হবে। কাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কী হবে। সবাই তো একই অপরাধে অপরাধী হবেন না। অপরাধের মাত্রা ভিন্ন হবে। সেক্ষেত্রে সিদ্ধান্তও প্রত্যেকের জন্য ভিন্ন ভিন্ন হবে।
দুই তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিবেদনের প্রথম অংশের জন্য আমরা প্রত্যেকে মতামত দিয়েছি। দ্বিতীয় অংশ দেখে চূড়ান্ত মন্তব্য করা হবে। সবার মন্তব্য সমন্বয় করে সিদ্ধান্ত আসবে।
এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, গাইবান্ধা উপনির্বাচনে অনিয়ম তো হয়েছে। এটা তো কেউ অস্বীকার করছেন না। যারা তদন্ত করছেন তারাও অনিয়মের কথা বলেছেন। আমরাও দেখেছি অনিয়ম হয়েছে। অনিয়মের শাস্তি আইন ও বিধিতে যেটা আছে সেটাই হবে। অনিয়মে সর্বোচ্চ শাস্তি থাকে আবার সর্বনিম্ন শাস্তিও থাকে। অপরাধের মাত্রা দেখে শাস্তি হবে। তিনি জানান, শাস্তি কী হবে সেটা আইন ও বিধিতে স্পষ্ট করা আছে। কোথাও বিভাগীয় ব্যবস্থা হবে। কোথাও মামলা হবে। ফৌজদারি অপরাধ করলে তো বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। এসময় তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে কী না এটা কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে বলেও উল্লেখ করেন আনিছুর রহমান।
এদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি গত সোমবারের দেয়া মন্তব্যের জবাবে ইসি আনিসুর রহমান বলেন, ‘এটা তারা কোন প্রেক্ষাপটে কী বলেছে, এটা তারাই ভাল জানেন। এ বিষয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে মন্তব্য করতে চাই না। এটা কূটনীতিকদের নিজস্ব এখতিয়ার। সেটা সত্য কী মিথ্য তারাই জানেন ভাল। তারা এই ধরনের মন্তব্য করতে পারেন কী না- এমন প্রশ্নের উত্তরে আনিছুর রহমান বলেন, ‘না এটা তো আমরা সবাই জানি যে কূটনৈতিক বিষয় হয় জেনেভা কনভেশন অনুযায়ী। এখন তারা বিবেচনা করে দেখতে পারেন যে তারা কতখানি তার মধ্যে ছিলেন বা আছেন। কূটনৈতিক বিষয়ে আমরা তো মনে করি যে প্রত্যেকটা দেশেরই আছে একটা নিজস্ব স্বকীয়তা। প্রত্যেকেই স্বকীয়তার মধ্যে থাকতে হয়। এখন সেখানে তারা কতটুকু আছেন সেটা বিবেচনা করা উচিত।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করতে চান উল্লেখ করে এই কমিশনার বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যত ধরনের প্রচেষ্টা তা অব্যাহত থাকবে। ভোট মনিটরিংয়ের জন্য ৩শ’ আসনেও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা সম্ভব বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আসছে সংসদ নির্বাচনে ৩শ’ আসনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন কীভাবে সম্ভব জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি টেকনিক্যালি সম্ভব। হিউম্যানলি সম্ভব কি না পরীক্ষা করে দেখছি। ৩/৪ লাখ ক্যামেরা লাগানো কঠিন কিছু নয়। কীভাবে আমরা মনিটর করবো সেটার ম্যাকানিজম তো তৈরি করতে হবে। ৪ লাখ সিসিটিভি মনিটর করতে হলে কতটা জায়গা লাগবে। কত লোকবল লাগবে সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার করে দেখা হবে।
বিষয়: #প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আগামী সপ্তাহে গাইবান্ধার সিদ্ধ