বুধবার ● ৭ ডিসেম্বর ২০২২
প্রচ্ছদ » জাতীয় » গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচনে পুন:ভোট ৪ জানুয়ারি
গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচনে পুন:ভোট ৪ জানুয়ারি
# সব কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে ইভিএম পদ্ধতিতে
# এবারও সব কেন্দ্র ভোট পর্যবেক্ষণ করা হবে সিসিটিভিতে
বিশেষ প্রতিনিধি
জাতীয় সংসদের গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে পুনরায় ভোট গ্রহণের জন্য নতুন তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৪ জানুয়ারি অনিয়মের কারণে বন্ধ ঘোষিত ওই আসনে ভোট গ্রহণ করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা শেষে ইসি সচিব জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
ইসি সচিব জানান, ভোটের দিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে- ইভিএম ভোট গ্রহণ করা হবে। এই আসনের ১৪৫টি কেন্দ্রে ভোট হবে। তবে এবারের ভোটে নতুন করে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই। ভোটের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আগের মতোই এবারও ভোট কেন্দ্রগুলোতে স্থাপন করা হবে সিসিটিভি ক্যামেরা। এবং ঢাকা থেকে সরাসরি ভোটের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে।
জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, তদন্ত কমিটির সুপারিশে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের আলোকে ভোটে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে পরিবর্তন করা হয়েছে। ঢাকা অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলামকে এ ভোটের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে ভোট হলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন আগের প্রার্থীরাই। ভোটের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নির্বাচনি প্রচার চালাতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে এ দফায় প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের মাহমুদ হাসান নৌকা প্রতীক নিয়ে, জাতীয় পার্টির (জাপা) এএইচএম গোলাম শহীদ লাঙ্গল মার্কা নিয়ে, বিকল্প ধারার জাহাঙ্গীর আলম কুলা প্রতীক নিয়ে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান আপেল, স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান ট্রাক প্রতীক নিয়ে লড়ছেন এ নির্বাচনে।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলাকালে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণে ৫১টি ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়মের কারণে ভোট গ্রহণ পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। পরে অনিয়মের ঘটনায় সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করতে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমারকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
পরে ঘটনা তদন্ত শেষে কমিটি প্রথমে ৫১টি কেন্দ্রের ঘটনা পর্যবেক্ষণ শেষে গত ২৭ অক্টোবর ইসিকে প্রতিবেদন দেয়। পরে বাকি ৯৪ কেন্দ্রে অনিয়ম ছিল কি না, তা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয় ইসি। বাকি তদন্ত শেষ করে পুরো প্রতিবেদন তৈরি করতে দেড় মাস সময় নেয় কমিটি।
তাদের তৈরি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে গত ১ ডিসেম্বর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে অনিয়মের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত ১২ অক্টোবরে উপনির্বাচনে অনিয়মের ঘটনায় রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ ১৩৩ নির্বাচনি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ঘটনায় জড়িত অন্যরা হলেন- ১২৫ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুশান্ত কুমার সাহা, একজন নির্বাহী অফিসার এবং ৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা। এছাড়া অনিয়ম হওয়া ১৪৫ নির্বাচনি কেন্দ্রের পোলিং এজেন্টেরা ভবিষ্যতে কোনও নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। তবে প্রার্থী ও ডিসি-এসপিদের সরাসরি সম্পৃক্ততা প্রমাণিত না হওয়ায় ওই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির কোন সুপারিশ করা হয়নি।
সেদিন প্রতিবেদন প্রকাশকালে সিইসি জানান, ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ আইন অনুসারে বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তির ব্যবস্থা নেবে তাদের নিজ নিজ নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। এ ব্যাপারে তাদের শাস্তি কার্যকর করার পর ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী এক মাসের মধ্যে তা ইসিকে জানাতে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। তবে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। কারণ তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া গত ২৩ জুলাই মারা গেলে তার সংসদী এলাকা গাইবান্ধা-৫ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। ফুলছড়ি ও সাঘাট উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৫ আসনে ভোটার মোট তিন লাখ ৩৯ হাজার ৯৮ জন। ১৪৫টি কেন্দ্রের ৯৫২টি বুথে ইভিএমে তাদের ভোটগ্রহণ হবে।
বিষয়: #গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচনে পুন:ভোট ৪ জানুয়ারি