শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১
Swadeshvumi
শুক্রবার ● ১৬ ডিসেম্বর ২০২২
প্রচ্ছদ » জাতীয় » বিজয়ের ৫১ বছর পূর্ণ হলো আজ
প্রচ্ছদ » জাতীয় » বিজয়ের ৫১ বছর পূর্ণ হলো আজ
২৮৮ বার পঠিত
শুক্রবার ● ১৬ ডিসেম্বর ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বিজয়ের ৫১ বছর পূর্ণ হলো আজ

---

বিশেষ প্রতিনিধি

আজ মহান বিজয় দিবস, বাঙালি জাতির আত্মগৌরবের একটি দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে, দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে- স্বাধীন ও সার্বভৌম হানাদার মুক্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান আর ২ লাখ মা-বোনের ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং কোটি বাঙালির আত্মনিবেদন আর গণবীরত্বে পরাধীনতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পায় বাঙালি জাতি।

এজন্য এই দিনটি বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বিশ^ দরবারে বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে লাল-সবুজের পতাকার পরিচয়ে স্বাধীন ভূখণ্ডের নাম জানান দেয়ার দিন। কারণ এই দিন রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী পরাজয় মেনে নিতে বাধ্য হয়। ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। ১৯৭১ সালের ১৬  ডিসেম্বর বাঙালি জাতি পরাধীনতার শেকল ভেঙ্গে প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে। ২৪ বছরের পরাধীনতার নাগপাশ ছিন্ন করে জাতির ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় এক নতুন সূর্যোদয়।

বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা ইতিহাসের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে মুক্তির আকাক্সক্ষায় উজ্জীবিত করে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের পথে এগিয়ে নিয়ে যান। তার নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ’৬৬ সালের ছয় দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে দেয়া বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চে গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। দীর্ঘ নয় মাসের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটিয়ে বাঙালি জাতির জীবনে এলো নতুন প্রভাত। বাঙালি জাতি এদিন অর্জন করে তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। সেই হিসাবে বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তি হলো বাংলাদেশের।

---

জাতীয় পর্যায়ে আজ ঢাকায় প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে এবারের বিজয় দিবস উদযাপনের কর্মসূচি শুরু হবে। এরপর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তববক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বাংলাদেশে অবস্থনরত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণকারী আমন্ত্রিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্য এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।

এছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সেই কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী আলাদা বাণী দিয়েছেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এদিকে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে বিভিন্ন গণমাধ্যম।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ থেকে তিন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি শুরু করছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৬ ডিসেম্বরের কর্মসূচির মধ্য রয়েছে- সূর্যোদয়ের ক্ষণে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল সাড়ে ৬ টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন। সাড়ে ৭ টায় ধানমণ্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। সকাল ১১টায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল।

এরপর ১৭ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ধানমণ্ডির বত্রিশস্থ ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত বিজয় শোভাযাত্রা আওয়ামী লীগ। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে সারাদেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের উদ্যোগে বিজয় শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয়েছে। আর ১৮ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজন করা হয়েছে আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বক্তব্য রাখবেন দেশ বরেণ্য বুদ্ধিজীবী ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ।

মহান বিজয় দিবস উদযাপনে আজ রাজধানীতে  ট্রাক  ও লঞ্চযোগে দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের গণযোগাযোগ অধিদপ্তর। এই অনুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্ট সংগীত শিল্পীদের বহনকারী একটি ট্রাক শহরের গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল স্থান- প্রেসক্লাব, টিএসসি, শাহবাগ মোড়, ফার্মগেট, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর, মিরপুর, এফডিসি ঘাট, তেজগাঁও সাতরাস্তার মোড়, কুনিপাড়া, বেগুনবাড়ি, মেরুল বাড্ডা, গুলশান পুলিশ প্লাজায় সংগীত পবিবেশন করবে। সন্ধ্যায় তেজগাঁও হাতির ঝিলে অনুষ্ঠিত হবে এর সমাপনী পর্ব। গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের নিজস্ব সঙ্গীতশিল্পী, যন্ত্রশিল্পী এবং অতিথি শিল্পীবৃন্দ ভ্রাম্যমাণ সংগীতানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।

এদিকে ঢাকা জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে লঞ্চযোগে অনুষ্ঠিত হবে সংগীতানুষ্ঠান; যা সদরঘাট থেকে শুরু করে শ্মশানঘাট, পোস্তগোলা হয়ে বসিলায় গিয়ে শেষ হবে। ভ্রাম্যমাণ সংগীতানুষ্ঠানে শিল্পীরা দেশাত্মবোধক ও মুক্তিযুদ্ধের গান পরিবেশন করবেন। রাজধানীর সার্কিট হাউস রোডে তথ্য ভবনে গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের সদর দপ্তর থেকে দিনব্যাপী এই ভ্রাম্যমাণ সংগীতানুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জসীম উদ্দিন। এই অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন অধিদপ্তরের প্রচার ও সমন্বয় শাখা। এছাড়াও বিজয় দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে গণযোগাযোগ অধিদপ্তরে উদ্যোগে নিয়মিত কার্যক্রম ছাড়াও জেলা ও উপজেলা তথ্য অফিসে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।



বিষয়: #



আর্কাইভ