শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩১
Swadeshvumi
বুধবার ● ২৫ জানুয়ারী ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ১৯ ফেব্রুয়ারি
প্রচ্ছদ » জাতীয় » ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ১৯ ফেব্রুয়ারি
২৫৮ বার পঠিত
বুধবার ● ২৫ জানুয়ারী ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ১৯ ফেব্রুয়ারি

---
* রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটার সংসদ সদস্যরা

* এই পদে প্রার্থী মনোনয়ন দেয় রাজনৈতিক দল
শাহনাজ পারভীন এলিস

বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জাতীয় সংসদের সংসদ কক্ষে ভোট  গ্রহণ করা হবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পরিচালনা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার, যিনি এ নির্বাচনের ‘নির্বাচনি কর্তা’। আগ্রহী প্রার্থীদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচনি কর্তার কার্যালয়ে (প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অফিসে নির্ধারিত দিনে অফিস চলাকালে) মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) কমিশনের বৈঠক শেষে দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচনের এই তফসিল ঘোষণা করেন। এর আগে সকাল ১১টায় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব, রাশেদা সুলতানা ও আনিছুর রহমানসহ ইসি সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তবে দেশের বাইরে থাকায় নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর এতে অংশ নিতে পারেননি।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, এই নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টা পর্যন্ত সিইসি’র কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। মনোনয়নপত্র যাছাই-বাছাই ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে যতক্ষণ সময় প্রয়োজন হবে ততক্ষণ পর্যন্ত। প্রত্যাহার ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সংসদ ভবনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা ৩৪৩ জন।

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের জানান, প্রার্থীর সংখ্যা একজনের বেশি না হলে তাকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর একাধিক প্রার্থী হলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে বিধিমালা অনুযায়ী ভোট হবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য এরই মধ্যে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচনে এবার ভোটার সংখ্যা ৩৪৩ জন।

সিইসি আরও জানান, একাধিক প্রার্থী হলে ১৯ ফেব্রুয়ারি সংসদের অধিবেশন কক্ষে নির্বাচনি কর্তা ভোটের আয়োজন করবেন। নির্ধারিত ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে নিজের সই দিয়ে তা জমা দেবেন সাংসদরা। ভোটের দিন গ্যালারিসহ সংসদ কক্ষে প্রার্থী, ভোটার, ভোট নেওয়ায় সহায়তাকারী কর্মকর্তা ছাড়া সবার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত থাকবে।

ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে ভোট গণনা করবেন। সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্তকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর সমান ভোট পেলে প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ফল নির্ধারণ করা হবে।

তফসিল ঘোষণার আগে নিয়ম অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। ওইদিন দুপুর সংসদ ভবনে স্পিকারের সঙ্গে তার বৈঠকের সময় ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন, ১৯৯১ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাতে নির্বাচনি কর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আইনটির সপ্তম ধারায় বলা হয়েছে- নির্বাচনি কর্মকর্তা নির্ধারিত দিন, সময় ও স্থানে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। প্রার্থী একজন হলে এবং পরীক্ষায় তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবে। তবে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করবে ইসি।

২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. আবদুল হামিদ। এই পদে দায়িত্বে তার টানা দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে আগামী ২৪ এপ্রিল। দেশের সংবিধান অনুযায়ী তার আর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ নেই। সে কারণে তার জায়গায় এবার এই পদে নতুন কাউকে দেখা যাবে। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, মেয়াদ অবসানের কারণে রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হওয়ার ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তির তারিখের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে এই নির্বাচন করতে হয়। ফলে ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে হলে সংসদ সদস্য হতে হয় না। রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয় এবং সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। সংবিধানের ৪৮(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের একজন নাগরিক রাষ্ট্রপতি হবেন, যিনি আইন অনুযায়ী সংসদ-সদস্যগণ কর্তৃক নির্বাচিত হবেন।

স্বাধীনতার পর থেকে ২০ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৭ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের আইনে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থাকতে পারেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দুই মেয়াদে রয়েছেন। সেই হিসেবে নতুন রাষ্ট্রপতি এই পদে অষ্টদশ ব্যক্তি।

সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একবার সংসদের কক্ষে ভোট করতে হয়েছিল। পরে প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন।

ইভিএম প্রসঙ্গে সিইসি

সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রকল্প স্থগিত হলেও হতাশার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রাপ্যতা সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএম হবে। তাই এখানে (পরিকল্পনা মতো না হওয়ায়) হতাশ হওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমাদের যে ইভিএম আছে তা দিয়ে ৫০ অথবা ৪০টি আসন, নাকি ৩০ আসনে হবে- এ বিষয়ে আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি। আমাদের কাছে যে ইভিএম আছে তা যদি কার্যকর থাকে, আমরা কিউসি করছি যতটা সম্ভব নির্বাচন করবো। তবে আমরা এখনও নিশ্চিত নই যে কত আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা সম্ভব হবে।’

সিইসি আরও বলেন, দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন করে আরও ২ লাখ ইভিএম কেনায় সরকার সায় দেয়নি। প্রকল্পটি স্থগিত হলেও তাতে হতাশ হইনি। সেই সঙ্গে বিদ্যমান কার্যকর ইভিএম দিয়ে কত আসনে ইভিএমে ভোট করবে তা নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, প্রকল্প স্থগিতের পরে কমিশনের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। একই কথার পুনরাবৃত্তি করতে চাই না। ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, তাতে অর্ধেক সংসদীয় আসনে (১৫০টি) ইভিএমে ভোটগ্রহণের ভাবনা ছিল। সেই লক্ষ্যে ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২ লাখ ইভিএম ক্রয় ও ব্যবস্থাপনার জন্য গত বছরের অক্টোবরে এ প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।

সোমবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সরকারের এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে ইসি সচিব জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা পরিকল্পনা কমিশন থেকে রোববার সিদ্ধান্ত পেয়েছি। এ মুহূর্তে প্রকল্পটি তারা প্রক্রিয়াজাতকরণ করছে না। বাতিল হচ্ছে না, তবে এ মুহূর্তে হচ্ছে না।



বিষয়: #



আর্কাইভ