বুধবার ● ৩ মে ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ : হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ : হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা
নিজস্ব প্রতিবেদক
হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মাকে ০২ মে ২০২৩-এ ঢাকায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটির ওপর উন্নয়ন সমন্বয় কর্তৃক আয়োজিত একটি সেমিনারে মূল বক্তব্য প্রদান করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর প্রফেসর ড. আতিউর রহমানের আয়োজনে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলাওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
হাই কমিশনার ভার্মা তাঁর মূল বক্তৃতায় ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও মানুষে-মানুষে সম্পর্ক উন্নয়নের সুবিধার্থে সংযোগের দীর্ঘমেয়াদী তাত্পর্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, একটি সন্নিহিত ভৌগোলিক অবস্থান এবং যৌথ ইতিহাস ও সংস্কৃতির উপস্থিতির কারণে, সংযোগের সুযোগ ও গুণগত মান বৃদ্ধির সর্বজনীন সংকল্পটি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ক্রমবর্ধমান অংশীদারত্বের চালক হিসেবে কাজ করে। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, দুই দেশের মধ্যে ভবিষ্যত সংযোগ সড়ক ও রেলপথ, অভ্যন্তরীণ নৌপথ, উপকূলীয় শিপিং এবং একই সঙ্গে জ্বালানি ও ডিজিটাল সংযোগসহ বহুমুখী সংযোগের দ্বারা নির্মিত হবে।
হাই কমিশনার ভার্মা উল্লেখ করেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেরগুলোসহ অন্যান্য রাজ্যসমূহকে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে সংযোগ উদ্যোগ দেশ দুটির মধ্যে পারস্পরিক আন্তঃনির্ভরতাকে শক্তিশালী করা এবং তাদের যৌথ ইতিহাস, ভৌগোলিক অবস্থা ও আর্থ-সামাজিক সম্পর্ককে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে গৃহীত হয়। তিনি আরও বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যসমূহের সঙ্গে বাংলাদেশের নৈকট্যের কারণে, এই অঞ্চলে বিদ্যমান অর্থনৈতিক সুযোগসমূহের মাধ্যমে উপকৃত হওয়ার জন্য বাংলাদেশ সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে।
হাই কমিশনার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে এই দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পরিবর্তনের কথাও বিশেষভাবে তুলে ধরেন, যা দেশ দুটির অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা ও সংযোগের ক্ষেত্রকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির দিকে পরিচালিত করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, বিগত পাঁচ বছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে এবং ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি এখন প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যার ফলে ভারত এশিয়ায় বাংলাদেশের জন্য বৃহত্তম রপ্তানি বাজার হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে।
হাই কমিশনার উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ পথে এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি কমপ্রিহেন্সিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (সেপা)-র জন্য আলোচনার ফলে উভয় দেশের পরিবর্তনশীল অর্থনীতি থেকে উদ্ভূত অর্থনৈতিক সুযোগসমূহকে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে একটি নতুন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সৃষ্টি হবে।
হাই কমিশনার দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক অংশীদারত্বের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগানোর জন্য সীমান্তে উন্নত যোগাযোগ ও বাণিজ্য অবকাঠামোর তাত্পর্যের ওপর জোর দেন, যা উভয় দেশের দ্রুত প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। এই প্রসঙ্গে, তিনি পেট্রাপোল-বেনাপোল ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে যানজট কমানোর জন্য আন্তঃসীমান্ত রেলওয়ে অবকাঠামো উন্নত করার জন্য গৃহীত পদক্ষেপসমূহের উপর জোর দেন, কারণ রেল-ভিত্তিক পরিবহনব্যবস্থা অর্থনৈতিক দক্ষতা ও রিটার্নের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। তিনি অন্যান্য স্থলবন্দরে অবকাঠামো বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও জোর দিয়ে তুলে ধরেন এবং স্থলবন্দরে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য বাণিজ্যিক সীমাবদ্ধতাহীন স্থলবন্দরের সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দেন।
হাই কমিশনার ভার্মা জোর দিয়ে বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ভৌগোলিক নৈকট্য দেশ দুটির সবচেয়ে বড় সুবিধা এবং পারস্পরিক সুবিধার জন্য এটি ব্যবহার করা উচিত। তিনি বলেন, গত দশ বছরে ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েরই উচ্চ হারে উন্নয়ন এটাই দেখায় যে গত এক দশকে আমাদের অর্থনীতির মধ্যে বৃহত্তর আন্তঃসম্পর্ক আমাদের প্রবৃদ্ধিকে পুরস্কৃত ও শক্তিশালী করেছে।
এই আয়োজনে সরকারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, সেক্টরভিত্তিক বিশেষজ্ঞগণ ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিগণ প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
বিষয়: #ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটি খুবই গ