শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
Swadeshvumi
বৃহস্পতিবার ● ৫ অক্টোবর ২০২৩
প্রচ্ছদ » জাতীয় » মোবাইল অপারেটরগুলোর ওপর ইসির কড়া নজরদারি
প্রচ্ছদ » জাতীয় » মোবাইল অপারেটরগুলোর ওপর ইসির কড়া নজরদারি
১৩৬ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ৫ অক্টোবর ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মোবাইল অপারেটরগুলোর ওপর ইসির কড়া নজরদারি

এনআইডি তথ্য ফাঁস

---

# তথ্য ফাঁসের প্রমাণ মিললেই ব্ল্যাক লিস্টেড করার হুঁশিয়ারি

# ঘটনা তদন্তে ইসি’র দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য টেলিগ্রামে ফাঁস হওয়ার ঘটনায় মোবাইল অপারেটরসহ পার্টনার সার্ভিসগুলোর ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের তথ্য ফাঁসের প্রমাণ মিললে সেইসব সার্ভিস প্রোভাইডারকে ব্ল্যাক লিস্টেড করা হবে, যাতে তারা বাংলাদেশে আর কাজ করতে না পারে।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবীর সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। এ পর্যন্ত কত জনের তথ্য ফাঁস হয়েছে জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, ‘আমাদের এখান থেকে তো যায়নি। আমরা তো বলতে পারবে না।’ এসময় তাকে ইসির এনআইডির ডিটেইল তথ্য কীভাবে পাওয়া সম্ভব হচ্ছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ইন্টারনেটের যুগে সবকিছু সম্ভব। নানা জনের কাছে আমাদের নানা তথ্য আছে। সব জায়গা থেকে ডাটা নিয়ে এগুলো করতে পারে। এর-ওর কাছে তথ্য আছে। সব এক জায়গায় জড়ো হয়তো করা হচ্ছে।’

১৭৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কারা করতে পারে- এমন প্রশ্নের উত্তরে হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে আমরা দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তারা দু’জনই সিস্টেম ম্যানেজার। তারা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিলে বলতে পারবো। তবে কতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে এমন কিছু বলা হয়নি। যতদিনে সম্ভব তারা দেবে।’

এনআইডি মহাপরিচালক জানান,‘ রাত একটার সময় সেবা বন্ধ করেছি। সকালেও পাওয়া গেছে। ওই যে বোতলে যেমন পানি থাকে না, ওই রকম। যাদের কাছ থেকে তথ্য গেছে বলে সন্দেহ হয়েছে সবার সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া আছে। কত প্রতিষ্ঠান সেটা এই মুহূর্তে বলা যাবে না। তদন্তের পর বলা যাবে। সরকারি-বেসরকারি আমার কাছে সেবা নিচ্ছে এমন প্রতিষ্ঠানই রয়েছে এর মধ্যে।

ইসি দুর্বলতা ঢাকছে কিনা- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ইসির কোনো দুর্বলতা নেই। ইসি থেকে হ্যাক হয়নি কারণ, কারণ ইসির টেকনিক্যাল দিকটা খুব স্ট্রং। তারা সবসময় এটা মনিটর করে।’ মোবাইল নাম্বার পাওয়া যাচ্ছে কেন প্রশ্ন করলে মহাপরিচালক বলেন, ‘মোবাইল কোম্পানি হয়তো নম্বর দিয়ে দিচ্ছে। আমি তো বলছি, পাঁচজনের কাছ থেকে ৫ রকম তথ্য নিচ্ছে। এই চক্রটা হচ্ছে পৃথিবীতে আনইথিক্যাল চক্র। এটাই আমরা বের করতে চাচ্ছি। এই চক্রটা কারা।’

---

পার্টনার সার্ভিসের কেউ জড়িত হলে বড় কোন শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা ওদের সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক সেবা পুরোপুরি বন্ধ করতে পারছি না। তদন্তের পরে দোষী যে হবে তাকে আইনের তুলে দেওয়া হবে। জরিমানা করার কোনো বিধান নেই। জরিমানা করে কী হবে? মোবাইল নাম্বার, স্পাউজ নেম এগুলো তো পার্টনার সার্ভিসের কাছে যাওয়ার কথা নয়। কিন্তু তথ্য ফাঁসকারীরা সেগুলোও নিচ্ছে। মোবাইল কোম্পানির কাছে গ্রাহকদের নাম্বার আছে না? আমাদের ডাটা নিচ্ছে না তারা? মোবাইল অপারেটরও কেউ জড়িত থাকতে পারে। আমরা সেসব তদন্ত করে দেখছি।’

একটি মন্ত্রণালয়ে এর আগে যে তথ্য দিয়ে এনআইডি পাওয়া গেছে এবারও তাই হচ্ছে। বিষয়টি উত্থাপন করা হলে এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে দেখি। তারপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর সবাইকে সব তথ্য শেয়ার করা হয় না। পুলিশের কাছে দশ-বারোটা তথ্য আছে। ব্যাংকগুলোর কাছে নাম, বাবার নাম ও ঠিকানা আছে, এইরকম।’ ভিন্ন ভিন্ন সার্ভিস পার্টনারের কাছে থেকে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য নেওয়া হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি তো বলতে পারি না। তদন্ত করে দেখি। সন্দেহভাজনদের সেবা বন্ধ করা হয়েছে।’

প্রাইভেসি সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে একেএম হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘যখন পাবলিক সার্ভিস কমিশনে আবেদন করেন তখন প্রাইভেসি থাকে নাকি? যখন নিকাহ নিবন্ধন করেন তখন থাকে? তারপর ব্যাংকে, পাসপোর্টে তথ্য দিচ্ছেন তখন কি দেখে না ওরা? প্রাইভেসি বলতে পৃথিবীতে টেকনোলজির যুগে কিছু থাকে না। টেকনোলজির যুগে আপনার প্রাইভেসি, আপনার তথ্য সবকিছু পাবলিক হয়ে যায়। ইন্টারেনেট আমাকে খোঁজেন, পেয়ে যাবেন। আমরা তো লিক করিনি। আপনার তথ্য যদি উনাকে দিয়ে দিতাম তাহলে বলতে পারতেন।

প্রাইভেসি নেই এই কথা আমি বলিনি। সার্ভিস পার্টনার যার কাছ থেকেই যাক, তার সঙ্গে যে চুক্তি আছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। সর্বোচ্চ ব্যবস্থা কি আছে সেটা নেবেন কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে এনআইডি ডিজি বলেন, ‘সর্বোচ্চ ব্যবস্থা আছে। যারা সফটওয়্যার মেইনটেন্যান্সে কাজ করে, সফটওয়্যার যারা লুক আফটার করে- এমন যদি হয় তাহলে ব্ল্যাক লিস্টেট করতে আমরা সুপারিশ করবো। সে যেন বাংলাদেশে কোথাও কাজ না পায়। কারণ সে বাংলাদেশের সঙ্গে, মানুষের সঙ্গে চিটিং করছে। তাকে বিশ্বাস করে হাতে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কেউ জড়িত নয়। আমাদের এখান থেকে লিক হয় নাই। যেসব জায়গা সাসপেক্টেড তাদের সেবা বন্ধ করা হয়েছে। তাদের জানানো হবে।’

উল্লেখ্য, দেশের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রধারী নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে ফাঁস হয়েছে। বিষয়টি স্বীকার করেছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এনআইডি সার্ভারে ১২ কোটি নাগরিকের তথ্য আছে। তাদের মধ্যে সাড়ে পাঁচ কোটি নাগরিকের স্মার্ট এনআইডি আছে। গত মঙ্গলবার বিষয়টি চাউর হয়। এর পেছনে কে বা কারা, জানে না ইসির এনআইডি শাখার সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট। তবে শনাক্ত করা গেছে- এনআইডি সার্ভারে অ্যাক্সেস রয়েছে, এমন ১৭৪টি সংস্থার একটির মাধ্যমেই এসব তথ্য ফাঁস হয়েছে।



বিষয়: #



আর্কাইভ