শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১
Swadeshvumi
শুক্রবার ● ৮ মার্চ ২০২৪
প্রচ্ছদ » মুক্তমত » সংসদীয় রাজনীতিতে নারী নেতৃত্ব
প্রচ্ছদ » মুক্তমত » সংসদীয় রাজনীতিতে নারী নেতৃত্ব
২৪২ বার পঠিত
শুক্রবার ● ৮ মার্চ ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সংসদীয় রাজনীতিতে নারী নেতৃত্ব

আন্তর্জাতিক নারী দিবস

---

 

শাহনাজ পারভীন এলিস

 

তিন দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্বে রয়েছে নারী। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের নারী নেতৃত্ব এখন প্রশংসিত। এদেশের উন্নয়নের কেন্দ্রেও রয়েছে নারী। এ পর্যন্ত ১২টি সংসদে নেতৃত্ব দেওয়া মোট নারীর সংখ্যা ৫৩৯ জন। তাদের মধ্যে সরাসরি ভোটে অংশ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হওয়া নারী এমপির সংখ্যা ১২৫ জন। আর সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচিত নারী এমপির সংখ্যা ৪১৪ জন।

 

১৯৯১ সাল থেকে এই দীর্ঘ সময়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দুজন নারী- শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়া। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এ পর্যন্ত পাঁচবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন। তবে বাংলাদেশের সংসদীয় রাজনীতিতে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হলেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি ১৯৯১ সালে, পঞ্চম জাতীয় সংসদের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। 

 

এদেশের জাতীয় সংসদে এবার দিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো স্পিকারের দায়িত্বে রয়েছেন একজন নারী। তিনি হলেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বাংলাদেশের সংসদীয় ইতিহাসে তিনি সর্বকনিষ্ঠ স্পিকার এবং প্রথম নারী স্পিকার। এছাড়াও বিরোধীদলীয় নেতা, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের শীর্ষ অনেক পদে নেতৃত্ব দিয়েছেন, দিচ্ছেন নারীরা। যদিও বাংলাদেশের তৃণমূল সমাজ এখনো পিতৃতান্ত্রিক আবহেই বিরাজমান। তারপরও পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের নানা বাধা-প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে যোগ্যতা ও দক্ষতার সঙ্গে দেশের অর্থনীতিতেও বেড়েছে নারীর অংশগ্রহণ। 

 

---

 

সংসদ অধিবেশনে নারী

 

স্বাধীনতার পর দীর্ঘ ৫৩ বছরে বাংলাদেশে গঠিত হয়েছে ১২টি সংসদ। প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ। সেই সংসদে ১৫টি সংরক্ষিত আসনে নেতৃত্ব দেওয়ার মাধ্যমে শুরু হয় এদেশের সংসদীয় রাজনীতিতে নারীর পদযাত্রা। তারপর ১৯৭৯ সালে সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ৩০-এ উপনীত হয়। পরে ২০০১ সালের অষ্টম সংসদে সেটি ৪৫ করা হয়। ২০১১ সালের ৩০ জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত আসনের বর্ধিত মেয়াদকাল ও নির্বাচন পদ্ধতি অক্ষুণ্ণ রেখে আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করার প্রস্তাব করা হয়। পরে সর্বশেষ ২০১৪ সালের দশম সংসদে সেটি বেড়ে ৫০-এ উন্নীত করা হয়। 

 

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংসদীয় রাজনীতিতে বাড়তে থাকে নারীর অংশগ্রহণ। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সাল থেকে সংরক্ষিত আসনের বাইরে সরাসরি রাজনীতির মাঠে ভোটযুদ্ধেও জয়ী হয়ে সংসদে আসছেন নারীরা। সে বছরের দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসে প্রথমবার নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন খুলনা-১৪ আসনের সৈয়দা রাজিয়া ফয়েজ। তারপর ১৯৮৬ সালের ৫ জন, ১৯৮৮ সালে ৪ জন নারী সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন। তবে ওই দুই নির্বাচনে কতজন নারী প্রার্থী ছিলেন তার সংখ্যা জানা যায়নি। 

 

১৯৯১ সালে ৩৯ প্রার্থীর মধ্যে ৫ জন, ১৯৯৬ সালে ৩৬ প্রার্থীর মধ্যে ৮ জন, ২০০১ সালে ৩৮ প্রার্থীর মধ্যে ৬ জন, ২০০৮ সালে ৫৯ প্রার্থীর মধ্যে ১৯ জন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনে ২৯ প্রার্থীর মধ্যে ১৮ জন নারী সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে, ওই সংসদে সংসদ সদস্য স্বামীর মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে তিনজন, স্বামীর ছেড়ে দেওয়া আসনে একজন এবং প্রধানমন্ত্রীর ছেড়ে দেওয়া আসনে একজনসহ আরও ৫ নারী নির্বাচিত হয়েছিলেন ।

 

২০১৮ সালে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৬৮ নারীর মধ্যে এ যাবতকালে সর্বাধিক ২২ জন সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন। তারপর জাতীয় নির্বাচনের ইতিহাসে এবারই (দ্বাদশ সংসদ) ভোটের মাঠে ১ হাজার ৮৯৫ প্রার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চসংখ্যক ৯৪ জন নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাদের মধ্যে ২৬ জন মাঠে ছিলেন স্বতন্ত্র হিসেবে। ভোটে জয়ী হন ১৯ নারী। এই নির্বাচনে আসা ২৭ রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১৪টি দল ৬৮ নারীকে মনোনয়ন দেয়। তবে সেই সংখ্যা পুরুষ প্রার্থীর তুলনায় মাত্র ৫ শতাংশ।

 

বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, গতবারের তুলনায় এবার বিজয়ীর সংখ্যা কমলেও অংশগ্রহণ বাড়ার দিক থেকে এই পরিস্থিতি খুবই আশাব্যঞ্জক। এ বিষয়ে মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির খবরের কাগজকে বলেন, ‘পিতৃতান্ত্রিক এই সমাজব্যবস্থায় নারীর অগ্রযাত্রার পথ কখনোই মসৃণ ছিলো না। রাষ্ট্র পরিচালনার কাঠামোয় নারীর অংশগ্রহণ যত বেশি বাড়বে, ততই নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার পথ সহজ হবে। কারণ পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে সম-অংশীদারিত্ব ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নারীদের লড়াই-সংগ্রাম এখনো বিরাজমান। আর সমাজের সর্ব স্তরের নারীদের সামনে থেকে এগিয়ে নিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন রাজনীতিতে অংশ নেয়া নারীরা’।

 

দলীয় রাজনীতিতে নারী

 

রাষ্ট্র পরিচালনার শীর্ষে এদেশে নারীর অবস্থান। তারপরও রাজনীতিতে জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দেয়া নারীর সংখ্যা এখনো আশানুরূপ নয়। কেন? সেই প্রশ্নের উত্তর মিলবে বিগত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীর মধ্যে নারী প্রার্থীদের সংখ্যার দিকে তাকালে। মোট প্রার্থীর মধ্যে নারী প্রার্থী ছিলো ৫ শতাংশেরও কম!

 

নির্বাচন কমিশনের প্রার্থী তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৩শ’ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ২৮টি রাজনৈতিক দলের ১,৮৯১ জন প্রার্থীর মধ্যে নারী প্রার্থী মাত্র ৯৪ জন। তাদের মধ্যে ১৪টি দলের ৬৮ নারী প্রার্থী আর ২৬ জন নারী মাঠে ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। দলগত হিসাবে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের ৩৬৩ প্রার্থীর ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ নারী প্রার্থী। জাতীয় পার্টির ২৬৪ প্রার্থীর ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ নারী প্রার্থী। স্বতন্ত্র ৩৮২ প্রার্থীর ৬ দশমিক ৫২ শতাংশ নারী প্রার্থী।

 

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার এ প্রসঙ্গে বলেন, রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ ধীরগতিতে হলেও বাড়ছে। তবে সংসদে আসা বেশির ভাগ নারীই পারিবারিক সূত্রে রাজনীতিতে আসছেন। তাদের কারো বাবা-মা, কারো স্বামী রাজনীতিবিদ ছিলেন কিংবা আছেন। রাজনৈতিক পরিবারের বাইরে একেবারে তৃণমূল থেকে রাজনীতি করে আসা নারীদের সংখ্যা খুবই নগণ্য। ঘুরেফিরে পরিচিত মুখদেরই নির্বাচনে বেশি অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে।

 

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নারী প্রার্থী ছিলো ২০ জন। ওই তালিকা দেখা গেছে, ওইসব প্রার্থীর ১৭ জনই বিগত একাদশ সংসদের সদস্য। একজন ছিলেন দশম সংসদের সদস্য। বাকি দুজনের মধ্যে একজন ২০০৮ সালের নির্বাচনেও দলীয় মননোনয় পেয়েছিলেন। শুধু মাত্র ময়মনসিংহ-৩ নিলুফার আনজুম আগে মনোনয়ন পাননি, সংরক্ষিত আসনের সদস্যও ছিলেন না। তার স্বামী মাহবুবুল হক শাকিল ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী। একইভাবে জাতীয় পার্টির ৯ প্রার্থী মধ্যে ৩ জন ছিলেন সংরক্ষিত আসনের সদস্য। আর জাসদের একমাত্র নারী প্রার্থী ছিলেন শিরীন আখতার, যিনি বিগত সংসদেও ছিলেন। এছাড়া স্বতন্ত্র ২৬ জনের ৫ জন বিভিন্ন সময় সংরক্ষিত ও সরাসরি ভোটের সংসদ সদস্য ছিলেন।

 

বড় রাজনৈতিক দলগুলোতে নারীদের অবস্থান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটিতে বর্তমানে ৭৮ জন সদস্য রয়েছেন। তার মধ্যে নারী মাত্র ২০ জন। ফলে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটিতে নারী ২৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আর দলটির ১৯ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীতে শেখ হাসিনাসহ রয়েছেন চার নারী।

 

অন্যদিকে বিএনপির ৫০২ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় নির্বাহী কমিটির তালিকায়, স্থায়ী কমিটি ও নির্বাহী কমিটি মিলিয়ে মোট নারী সদস্যের সংখ্যা ৬৭ জন; যা ১৫ শতাংশের কম। আর জাতীয় পার্টির সব পর্যায়ের কমিটিতে নারী রয়েছে ২০ শতাংশ।

 

সংরক্ষিত আসনে নারী

 

সংসদের সংরক্ষিত আসন নিয়েও মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকদের। এসব আসনে নির্বাচিত নারীদের মর্যাদা, কাজের ক্ষেত্রে তাদের যথাযথ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেক। কেউ নারীর ক্ষমতায়নে সংসদের মোট আসন ৪৫০ এ উন্নীত করার পক্ষে। অনেকে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় এসব আসনেও সরাসরি নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মনে করেন। তাদের মতে, রাজনীতিতে ভোটের মাঠে সরাসরি নারীদের অংশগ্রহণ বাড়িয়ে- এই সংরক্ষিত ব্যবস্থা ক্রমান্বয়ে বাতিল করা যেতে পারে।

 

রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ আরও এগিয়ে যাওয়া পর্যন্ত সংরক্ষিত আসন দরকার বলে মনে করেন সংরক্ষিত নারী আসনে লক্ষ্মীপুরে এমপি ফরিদুন্নাহার লাইলী। তিনি বলেন, ’যেহেতু নারীকে সরাসরি ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হচ্ছে কম, তাই সংরক্ষিত আসন দরকার। প্রত্যেকটি দলে যদি ৩৩ শতাংশ নারী আসতে পারতো তখন সংরক্ষিত আসনের দরকার হতো না। তাই আরও কয়েক বছর সংরক্ষিত নারী আসন থাকার দরকার আছে।’

 

নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করা মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির বলেন, ’সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত নারী এমপিদের কেউ কেউ সংসদে ও তাদের এলাকায় ভালো ভূমিকা রেখেছেন। সংরক্ষিত নারী আসনের উদ্দেশ্য ছিলো সরাসরি ভোটের জন্য নারীদের তৈরি করা। কয়েকজন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য পরে ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে, আমি মনে এখন আর নারীদের সংরক্ষিত আসনে সদস্য না করে তাদের সরাসরি ভোটে নিয়ে আসা উচিত। সংরক্ষিত পদ্ধতি বিলুপ্ত করা দরকার। আর চাইলে আনুপাতিক হারে নির্বাচন করা যেতে পারে।’

 

অধ্যাপক রেহমান সোবহান মনে করেন, সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নারীদের নির্বাচিত হতে না পারা অন্যতম একটি সমস্যা। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোকে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। সামনের দিনগুলোতে তারা এ বিষয়ে জোর প্রচারণা চালাতে পারেন।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, নারী-পুরুষে বৈষম্য সমাজে এখনো বিরাজমান। পুরুষ নেতারা নারীদের এগিয়ে যেতে দিতে চায় না। অল্প কিছু আসনে ভোটে বিজয়ী হয়ে নারীদেরও তারা অলঙ্কার হিসেবে ভাবার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। তারা মনে করে, নারী নেতৃত্ব দিতে পারবে না, ওই কাজ পুরুষের। অথচ সুযোগ পেলে নারীরা যে রাজনীতিতেও সাহসী ভূমিকা রাখতে পারে- তার উজ্জ্বল উদাহরণ হলো আমাদের প্রধানমন্ত্রী। তারপরও আমাদের সমাজে, রাজনৈতিক দলগুলোতে নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয় না। নারীদের রাজনীতিতে এগিয়ে যাওয়ার পথে ধর্মীয়-সামাজিক নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, বিত্তশালীদের পেশীশক্তি ও  পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব- এসব বাধা দূর করা করা জরুরি।

 

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক, দৈনিক খবরের কাগজ

 






আর্কাইভ