শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
Swadeshvumi
বৃহস্পতিবার ● ২০ অক্টোবর ২০২২
প্রচ্ছদ » জাতীয় » পূর্বসূরিদের গাইডলাইন পেয়েছি, ইন্সপায়ার করেছেন: সিইসি
প্রচ্ছদ » জাতীয় » পূর্বসূরিদের গাইডলাইন পেয়েছি, ইন্সপায়ার করেছেন: সিইসি
২৬২ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ২০ অক্টোবর ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পূর্বসূরিদের গাইডলাইন পেয়েছি, ইন্সপায়ার করেছেন: সিইসি

গতকাল সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের সাথে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

বিশেষ প্রতিনিধি

গাইবান্ধার নির্বাচন বন্ধ করা আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক নানা দিক নিয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের ইতিবাচক মন্তব্য ও গঠনমূলক পরামর্শে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গতকাল বুধবার বর্তমান কমিশনের সাথে সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে সিইসি বলেন, ‘গাইবান্ধায় আমরা যে অ্যাকশনটা নিয়েছি- উনারা বলেছেন এটা সঠিক হয়েছে। আইন ও সাংবিধানিকভাবে ঠিক হয়েছে। উনারা আমাদের গুরুজন হিসেবে পরামর্শ দিয়েছেন, সততা ও সাহসিকতার সঙ্গে আমাদের এগিয়ে যেতে বলেছেন। এই সভায় আমাদের পক্ষ থেকে আমরা কোন বক্তব্যই দিইনি; তাদের শুনেছি। সার্বিক বিষয়ে কথা হয়েছে। আমরা তাদের ডেকেছিলাম, এটা সত্য গাইবান্ধাতে যে একটা ঘটনা ঘটে গেল, আমাদের প্রয়োজন ছিল আরও এনলাইটেন্ড হওয়া; ওনাদের তরফ থেকে কোনো গাইডেন্স আছে কিনা, কীভাবে মূল্যায়ন করেছেন অতটুকু জেনেছি।’ সিইসি জানান, এটা তাদের জন্য ক্রিটিক্যাল ছিল। প্রথমবারের মতো বড় ধরনের কোন পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশন নিয়েছে এবং এটা যথেষ্ট সেনসেশন ক্রিয়েট করেছে সর্বমহলে। এটা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্য হয়েছে।

বন্ধ করার পর সাবেকদের কাছ থেকে নতুন করে মূল্যায়ন কেন- এমন প্রশ্নের বিষয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘মূল্যায়নের খুবই প্রয়োজন রয়েছে। যে কোন বিষয়ে বিচারক হিসেবে আমরা সহকর্মীদের জিজ্ঞেস করি. বিষয়টা ঠিক হয়েছে কিনা। আমরা শুদ্ধ সিদ্ধান্ত নিয়েছি কি নেইনি, আমরা আমাদের অভিমতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারপরেও এটা সঠিক নাও হতে পারে। কোর্টে গিয়ে কেউ যদি চ্যালেঞ্জ করেন, উনারা যদি বলতেন সঠিক সিদ্ধান্ত নেননি তখন আমাদের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার প্রয়োজন হতো।’ তবে আইনি জটিলতা দেখা না দেওয়ায় এবং সাবেকদের পাশে পেয়ে নিজেদের সক্ষমতার দেখানোর ব্যাপারে উজ্জীবিত হয়ে সিইসি বলেন, ‘উনারা (সাবেক সিইসি ও ইসি) সবাই একমত পোষণ করেন, আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়েছে। বলেছেন এগিয়ে যান। আমরা ওনাদের কাছে যে পরামর্শ পেয়েছি; বক্তব্য শুনেছি আমাদের অ্যাডুকেটেড করেছেন, ইন্সপায়ার করেছেন।

গতকাল সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের সাথে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

গাইবান্ধায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আপনাদের উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সাবেক একজন সহকর্মীর এমন পরামর্শের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সিইসি বলেন, ‘অপেক্ষা করেন। আমরা তদন্ত কমিটি করেছি, রিপোর্টটা আসুক। তারপরে আপনারা দেখেন আমরা কোনো পদক্ষেপ নেই কি না। ওয়েট এ্যান্ড সি। একটু অপেক্ষা করতে হবে।’

গত ১২ অক্টোবর সিসি ক্যামেরায় ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ার পর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনটি ভোটের মাঝপথে বন্ধ করে দেয় নির্বাচন কমিশন। ঘটনা তদন্তে কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন যুগ্ম সচিব শাহেদুন্নবী চৌধুরী ও যুগ্ম সচিব কামাল উদ্দিন বিশ্বাস। ইতোমধ্যে মঙ্গলবার থেকে গাইবান্ধায় তদন্ত কাজ চালাচ্ছে ইসির ওই তদন্ত কমিটি। তাদের আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে।

বুধবারের সভায় গাইবান্ধা উপনির্বাচন ছাড়াও জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা, ইভিএম ব্যবহার ও সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ এসেছে। এনআইডি সেবা ইসি থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে স্থানান্তরের বিরোধিতাও এসেছে।

এ প্রসঙ্গে সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘এনআইডিটা এখানেই থাকা প্রয়োজন- একবাক্যে সবাই বলেছেন। এনআইডি সরকার কেন নিতে চাচ্ছে সেটা পরিষ্কার নয়। এতগুলো বছরে একটি সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট করেছে। এটা যদি আলাদা হয় ভবিষ্যতে ভোটার তালিকা নিয়ে কথা উঠবে। প্রশ্ন আসবে কোনটি ঠিক? ভোটার তালিকা ঠিক না এনআইডি ঠিক? আপনি এনআইডির নাম পরিবর্তন করলেন, বয়স পরিবর্তন করলেন, তখন ভোটার লিস্টের কী হবে? আল্টিমেটলি এটা নিয়ে একটি গণ্ডগোল হওয়া আশঙ্ক জানিয়েছেন তারা।’

উনাদের (পূর্বসূরিদের) যে নলেজ রয়েছে আমার সেটা নেই। এছাড়া ইভিএম নিয়েও পক্ষে-বিপক্ষে কথা হয়েছে। অধিকাংশই পক্ষে বলেছেন। এটা নিয়ে জনমনে একটা নেগেটিভ পারসেপশন রয়েছে- এ পারসেপশনটা দূর করতে হবে। সেই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের দিকে নজর দেওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরেন আলোচকরা।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো এক চিঠিতে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম নির্বাহী বিভাগের দায়িত্বে থাকা সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তরের কথা বলা হয়। এর প্রেক্ষাপটে কয়েক দফা চিঠি চালাচালির পর ওই বছরের ২০ জুন সরকার জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কার্যক্রম আইনানুগভাবে নির্বাচন কমিশন থেকে সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ইসিকে চূড়ান্তভাবে জানিয়ে দেয়। তবে শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এর বিরোধিতা করে আসছিলেন। এরই মধ্যে গত ১০ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২২’-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। আইনটি সংসদে পাসের পর শেষ হবে সব প্রক্রিয়া।



বিষয়: #  #



আর্কাইভ