শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
Swadeshvumi
রবিবার ● ২৩ অক্টোবর ২০২২
প্রচ্ছদ » জাতীয় » সিসি ক্যামেরায় ভোটারের গোপনীয়তা নষ্ট হয়নি: ইসি
প্রচ্ছদ » জাতীয় » সিসি ক্যামেরায় ভোটারের গোপনীয়তা নষ্ট হয়নি: ইসি
২৪৬ বার পঠিত
রবিবার ● ২৩ অক্টোবর ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সিসি ক্যামেরায় ভোটারের গোপনীয়তা নষ্ট হয়নি: ইসি

---

বিশেষ প্রতিনিধি

ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম এড়াতে ভোটকক্ষে স্থাপিত সিসি ক্যামেরার কারণে ভোটারের ভোট দেওয়ার গোপনীয়তা নষ্ট হয় না বলে দাবি করেছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল রোববার ইসি’র যুগ্ম-সচিব এবং কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে কমিশনের এই অবস্থান তুলে ধরা হয়।

এর ব্যাখ্যায় বিজ্ঞপ্তিতে কমিশন বলেছে, ভোট দেওয়ার সময় বুথে ভোটারের সাথে অন্য কেউ প্রবেশ করল কি না- ওই ক্যামেরায় শুধু সেটি ধরা পড়ে, কিন্তু ভোটার কাকে ভোট দিচ্ছেন সেটি দেখার সুযোগ রাখা হয়নি।  এজন্য ভোটকক্ষে স্থাপন করা ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার কারণে ভোটারের গোপনীয়তা কোনভাবেই নষ্ট হচ্ছে না।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে ‘ভোট কেন্দ্রের গোপন কক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপনে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন হচ্ছে’- গণমাধ্যমে প্রকাশিত অনেকের এ ধরনের বক্তব্যকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে বর্ণনা করেছে ইসি। কমিশন মনে করছে, ভোটকক্ষের গোপন বুথে সিসি ক্যামেরা স্থাপন নিয়ে কারও কারও বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। প্রচারিত ওইসব বক্তব্য মতে, ভোটকক্ষের গোপন বুথে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে কে কাকে ভোট দিচ্ছে, তা দেখা মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন। গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে ইসি সেই কাজটি করে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করেছে। এ ধরনের বক্তব্য মোটেও সঠিক নয়, বরং বিভ্রান্তিকর বলে জানিয়েছে ইসি।

সেখানে আরও বলা হয়, প্রতিটি ভোটারের ভোট প্রদানের গোপনীয়তা রক্ষায় আইন অনুযায়ী সব ব্যবস্থাই ইসি’র দায়িত্ব। সম্প্রতি গাইবান্ধা উপ-নির্বাচনে অর্ধশতাধিক ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়মের দৃশ্য ঢাকায় বসে সিসিটিভিতে দেখে ভোট বন্ধ করে দেয় নির্বাচন কমিশন। বিষয়টি নানামুখি আলোচনার জন্ম দেয়।

 ---

গাইবান্ধা উপ-নির্বাচনের পর তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বক্তব্যের উদ্ধৃতি উল্লেখ করে কমিশন জানায়, ভোট কেন্দ্রের গোপন বুথে সিসি ক্যামেরা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন বলে আইনজ্ঞরা অভিমত দিয়েছেন। এমন প্রেক্ষাপটে কমিশনের ব্যাখ্যায় বলা হয়, গোপন কক্ষে ভোটার কাকে ভোট দিলেন তা দেখার কোন সুযোগ সিসিটিভিতে নেই। গাইবান্ধা-৫ শূন্য আসনের নির্বাচনে ভোটকক্ষে ভোট প্রদানের সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং এর জন্য ইসি ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছিল। গোপন কক্ষে ভোটার কাকে ভোট দিলেন তা দেখার কোন সুযোগ নেই। তবে গোপনকক্ষে ভোটারের সাথে কেউ প্রবেশ করল কি না বা ভোটার ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ করল কি না, একই সাথে একাধিক ব্যক্তি প্রবেশ করল কিনা, ভোট প্রদানের সময় কেউ উঁকি দিয়ে দেখে কিনা বা পাশে দাঁড়িয়ে কোন নির্দেশ প্রদান করল কিনা তা দেখা যায়।

নির্বাচনি আইন থেকে উদ্ধৃত করে কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৩১(৭) ধারা অনুযায়ী ভোটার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বা অন্যভাবে এরূপ অক্ষম হলে তিনি কোন সঙ্গীর সাহায্য ছাড়া ভোট প্রদান করতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে প্রিজাইডিং অফিসার ওই ভোটারের পছন্দমতো ও বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে তার ভোট দিতে সাহায্য করার জন্য গোপন কক্ষে নিতে পারবেন। তবে তার সাথে কোনভাবেই কোন ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা, এজেন্ট বা অন্য কেউ গোপন কক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না। অর্থাৎ বিষয়টি খুবই স্পষ্ট যে ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপনে কোনক্রমেই ভোট প্রদানের গোপনীয়তা নষ্ট হয়নি।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘ভোট কেন্দ্রের গোপন কক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপনে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন হচ্ছে বলে যে আলোচনা-সমালোচনা চলছে তা ভিত্তিহীন। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, গোপন কক্ষে সিসি ক্যামেরা রাখার কোন সুযোগ নেই। ভোট কক্ষে স্থাপন করা হয়েছে। ব্যালট ইউনিট, ভোটার কাকে ভোট দিচ্ছে, তা দেখার সুযোগ নেই।’ সম্প্রতি গাইবান্ধা উপ-নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে অনিয়মের দৃশ্য সিসি ক্যামেরায় দেখে ভোট বন্ধ করে দিয়েছিল ইসি।

গোপন কক্ষে সিসি ক্যামেরা রাখার বিষয়ে ভুল তথ্য আসছে উল্লেখ করে কমিশনার আলমগীর আরও বলেন, ‘যারা বলেছেন, গোপন কক্ষে সিসি ক্যামেরা, তাদের কাছে হয়ত সঠিক তথ্যটি নেই। গোপন কক্ষে সিসি ক্যামেরা রাখার আইনগত অধিকার নেই; আমরা তা রাখিওনি। ভোট দেবেন গোপনে; কোন মার্কায় ভোটার কাকে ভোট দিলেন গোপন কক্ষে, তা দ্বিতীয় ব্যক্তি জানার সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশনেরও জানার সুযোগ নেই। সরাসরি বা ক্যমেরায় কারও দেখারও সুযোগ নেই।’

চলতি বছরে দায়িত্ব নেওয়ার পর সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে বর্তমান কমিশন ইভিএমে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের বেশ কিছু নির্বাচন করেছে। গাইবান্ধার পাশাপাশি জেলা পরিষদ নির্বাচনেও সব কেন্দ্রে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোটদানের পদ্ধতি শেখাতে প্রচার চালানোর কথা তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে ইসি বলেছে, ‘একজন ভোটারকে ভোট দেওয়ার জন্য গোপনকক্ষে প্রবেশের পূর্বেই সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তারা ‘ডামি’ ব্যালট ইউনিটে দেখিয়ে দেন কীভাবে ভোট দিতে হবে। কাজেই ভোট কীভাবে দিতে হবে এটা দেখানোর জন্য ভোটারের সাথে গোপনকক্ষে অন্য কারো প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই।’ এছাড়া সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যাঘাত ঘটে- ভবিষ্যতে এমন কোন ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য না দিয়ে ইসিকে সহযোগিতা করারও অনুরোধ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। 



বিষয়: #



আর্কাইভ