শিরোনাম:
ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১
Swadeshvumi
বৃহস্পতিবার ● ১০ নভেম্বর ২০২২
প্রচ্ছদ » জাতীয় » সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের যুব মহাসমাবেশ
প্রচ্ছদ » জাতীয় » সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের যুব মহাসমাবেশ
৩৩৪ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ১০ নভেম্বর ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের যুব মহাসমাবেশ

 ---

যুবলীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

# এবারের যুব মহাসমাবেশে প্রায় ১০ লাখ লোকের সমাগমের ঘোষণা

সংগঠনটির নেতাকর্মীকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বাণী

শাহনাজ পারভীন এলিস

সংগঠনের সুবর্ণজয়ন্তীতে আজ শুক্রবার রাজধানীতে যুব মহাসমাবেশের আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। দিনটি উদযাপনে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত এই সমাবেশকে ঘিরে রাজধানীতে বড় ধরনের শোডাউন করার প্রস্ততি নিয়েছে সংগঠনটি। যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, এবারের যুব মহাসমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করা হবে। এতে প্রায় ১০ লাখ লোকের সমাগম হবে বলে আশা করছেন তারা। যুব মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এদিকে যুবলীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবলীগের সকল নেতাকর্মীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তীর মধ্য দিয়ে যুব সমাজের সংগ্রামী চেতনার ধারা আরো শাণিত ও বেগবান হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এ দেশের যুবদের বুকে অদম্য শক্তির যে বহ্নিশিখা প্রজ্বলিত করে গেছেন, যে প্রেরণা তিনি যুগিয়েছেন, সেই প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে যুবলীগ এদেশের যুবসমাজকে সঙ্গে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।

সামাবেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ সংবাদ সারাবেলাকে জানিয়েছেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি অপশক্তির মানুষ এবং তাদের দোসররা আবারও মাথাচারা দিয়ে উঠছে। তাদের সন্ত্রাস-নৈরাজ্য মোকাবিলায় প্রয়োজনে যুবলীগের নেতাকর্মীরা রাজপথ পাহারায় থাকবে। ওদের নৈরাজ্য দমনে কোন ছাড় দেয়া হবে না। এই যুব মহাসমাবেশের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করতে চাই সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।’

যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল জানিয়েছেন, ‘এবারের যুব মহাসমাবেশে সারাদেশ থেকে অন্তত ৮ থেকে ১০ লাখ নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করবেন। আমরা কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। এই সমাবেশে প্রমাণ হবে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের সঙ্গে রয়েছেন। বিশেষ করে দেশের যুবসমাজ যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল তা আমাদের যুব মহাসমাবেশে প্রমাণ হবে। পাকিস্তানের দোসররা যেভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে তাতে রাজনৈতিক শক্তি এবং সামর্থ্য প্রদর্শন করা এখন অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠী নানা ধরনের নৈরাজ্য ও অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। আমি মনে করি, তাদের সেসব মিথ্যাচারে জবাব এদেশের জনগণ ভোটের মাধ্যমে দেবে। আর  যুবলীগ সংগঠন হিসেবে তৃণমূল মানুষের অধিকার আদায় আর স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে দমনে জনগণের পাশে থেকে সহায়ক শক্তি হিসেবে মাঠে থাকবে।’

যুব মহাসমাবেশে সফল করতে এরই মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই সহযোগী সংগঠন। যুব মহাসমাবেশকে ঘিরে গোটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। উদ্যানে লেকের পূর্বপ্রান্তে বিশাল মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। উদ্যানের ভেতরে চলাচলের ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন রাস্তা মেরামত, আগাছা ছেঁটে ফেলা, যেখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।

এরই মধ্যে উদ্যানে প্রবেশে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। টিএসসির অদূরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশপথসহ একাধিক প্রবেশপথে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অঘোষিত এ নিষেধাজ্ঞার ফলে উদ্যানে নিয়মিত যারা প্রাতঃভ্রমণ করেন তারা বিপাকে পড়েছেন। অনেকে অনুমতি নিয়ে ব্যারিকেড ডিঙিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পারলেও এ সংখ্যা খুব কম। এতে উদ্যানজুড়ে এখন সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে।

ওইদিন সারাদেশ থেকে আসা নেতাকর্মীরা কোন পথে সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করবে তার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরতে বুধবার যুবলীগের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। নেতারা জানান, ভিআইপি গেট বাদে সমাবেশে প্রবেশের জন্য গেট থাকবে পাঁচটি। এগুলো হলো- টিএসসি’র রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন গেট, মেট্রোরেল স্টেশন গেট, রমনা কালি মন্দির গেট, মেট্রোরেল গেট-১ (মাজার গেটের পরের গেট) এবং মাজার গেট।

সমাবেশে প্রবেশের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সবুজ কার্ডধারী অতিথিরা ৩ নম্বর গেট (রমনা কালি মন্দির গেট) দিয়ে প্রবেশ করবেন। রংপুর বিভাগ, রাজশাহী বিভাগ, ময়মনসিংহ বিভাগ ও ঢাকা মহানগর উত্তর, টাঙ্গাইল, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, মাণিকগঞ্জ, গাজীপুর, ঢাকা জেলা উত্তরের নেতাকর্মীরা প্রবেশ করবেন ১ ও ২ নম্বর গেট দিয়ে। বৃহত্তর ফরিদপুর, খুলনা বিভাগ, বরিশাল বিভাগ, সিলেট বিভাগ, চট্টগ্রাম বিভাগ, ঢাকা জেলা দক্ষিণ, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের নেতাকর্মীরা প্রবেশ করবেন ৩, ৪ ও ৫ নম্বর গেট দিয়ে।

বৃহত্তর ফরিদপুর ও খুলনা বিভাগ থেকে যারা পদ্মা সেতু হয়ে মহাসমাবেশে আসবেন তারা হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে না এসে বাবুবাজার ব্রিজ হয়ে আসবেন। কারণ সিলেট বিভাগ, চট্টগ্রাম বিভাগ, বৃহত্তর ফরিদপুর ও খুলনা বিভাগের নেতাকর্মী একইসঙ্গে হানিফ ফ্লাইওভার ব্যবহার করলে টোল প্লাজায় দীর্ঘ লাইন পড়ে যেতে পারে। সাংবাদিকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশনা মোতাবেক ভিআইপি গেট, অর্থাৎ শিখা চিরন্তনী গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন। সমাবেশস্থলে সুপেয় পানি, পর্যাপ্ত পরিমাণে মোবাইল টয়লেটের ব্যবস্থা রয়েছে। মোবাইল নিয়ে ভেতরে প্রবেশে কোন বাধা নেই।

চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের নেতাকর্মীরা মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার হয়ে গুলিস্তান, জিরো পয়েন্ট, হাইকোর্ট, দোয়েল চত্বর, শহীদ মিনার, পলাশী হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসবেন। আর বৃহত্তর ফরিদপুর, খুলনা, বরিশাল বিভাগ (যারা বাসে আসবেন) পদ্মা সেতু হয়ে বাবুবাজার ব্রিজ দিয়ে গুলিস্তান, নগর ভবনের সামনের রাস্তা, বঙ্গবাজার সংলগ্ন রাস্তাসমূহ এবং জিরো পয়েন্ট ওসমানী উদ্যান সংলগ্ন এলাকা। ময়মনসিংহ বিভাগ মহাখালী, মগবাজার ফ্লাইওভার, কাকরাইল চার্চের বামে মোড় সংলগ্ন রাস্তা হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করবেন। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের নেতাকর্মীরা- গাবতলী, মিরপুর রোড, সায়েন্সল্যাব ক্রসিং, নিউমার্কেট ক্রসিং, বামে মোড়; অথবা গাবতলী, মিরপুর রোড সায়েন্সল্যাব ক্রসিং বামে মোড়, কাঁটাবন ক্রসিং ডানে মোড়, নীলক্ষেত ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করবেন।

সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সংগঠনের নেতারা ও দূরদূরান্ত থেকে আসা নেতাকর্মীদের বেশিরভাগই আগে উদ্যানের সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করবেন। এজন্য ওই দিন শুক্রবার হওয়ায় সমাবেশে আসা বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য নামাজের ব্যবস্থা না থাকলে জুমার সময় বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। তাই জুমার নামাজ সম্মেলনস্থলেই আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগত মুসলমানরা সেখানেই জুমার নামাজ আদায় করতে পারবেন। আবার কেউ চাইলে বাইরে গিয়েও তাদের সুবিধামতো মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

মহাসমাবেশে যেন কোন ধরনের নাশকতা না ঘটে সেজন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সমাবেশস্থলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিভিন্ন স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সব প্রবেশপথে নিয়মিত দায়িত্বরত আনসার সদস্যারা অবস্থান করছেন। বাঁশের বেরিকেড দিয়ে নির্ধারিত প্রবেশপথ ছাড়া অন্যগুলো আটকে দেওয়া হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর নজরদারি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে শেখ ফজলুল হক মণির নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক যুব কনভেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আদলে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য নিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয় সংগঠনটি।






আর্কাইভ