শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩১
Swadeshvumi
বুধবার ● ২৩ নভেম্বর ২০২২
প্রচ্ছদ » জাতীয় » নতুন ৯৩ রাজনৈতিক দলের আবেদন পর্যালোচনা করছে কমিশন
প্রচ্ছদ » জাতীয় » নতুন ৯৩ রাজনৈতিক দলের আবেদন পর্যালোচনা করছে কমিশন
৩৪৫ বার পঠিত
বুধবার ● ২৩ নভেম্বর ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

নতুন ৯৩ রাজনৈতিক দলের আবেদন পর্যালোচনা করছে কমিশন

---

* মে, ২০২৩ সালে চূড়ান্ত হবে নতুন দলের নিবন্ধন

* ৭ দিনের মধ্যে প্রাথমিক বাছাই চূড়ান্ত করবে কমিটি

* ত্রুটি সংশোধনে ১৫ দিন সময় পাবেন আবেদনকারীরা

শাহনাজ পারভীন এলিস 

নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা ৯৩টি রাজনৈতিক দলের কাগজপত্র, তথ্য-উপাত্ত ও দলিলাদি পর্যালোচনা করছে নির্বাচন কমিশন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এসব রাজনৈতিক দলের আবেদনপত্র নির্ধারিত চেক লিস্টের মাধ্যমে যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রাথমিক ধাপে উত্তীর্ণ হওয়া দলগুলোর তালিকা ইসি কমিটিতে বিবেচনার জন্যে উপস্থাপন করবে বাছাই কমিটি। তারপর কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপে নেয়া হবে। এসব তথ্য সংবাদ সারাবেলাকে জানিয়েছেন নতুন দল যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।

কমিটির আহ্বায়ক জানান, এরই মধ্যে দেখা গেছে আবেদনকারী বেশকিছু রাজনৈতিক দলের কাগজপত্রে নিবন্ধনের ন্যূনতম শর্ত পূরণের দালিলিক প্রমাণে ঘাটতি দেখা গেছে। যেমন- কোন কোন দল জমা দেয়নি প্রয়োজনীয় চালানের টাকা, কোনাটির কেন্দ্রীয় কমিটির নাম-পদবী দিয়ে পূর্ণাঙ্গ তালিকায় সঙ্গতি নেই, কোন দলের নেই গঠনতন্ত্র, কোন দল নিবন্ধনের শর্ত পূরণের দালিলিক প্রমাণ দেখাতে পারেনি, কারো বা আবার ঘাটতি রয়েছে দলের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের। বাছাইয়ের এ পর্যায়ে নিবন্ধনের ন্যূনতম শর্তগুলো পূরণের সার্বিক তথ্য পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কারণ নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী, আবেদনকারী যে কোন দলকে অন্তত ৯ ধরনের তথ্য পূরণ করতে হয় এবং সেই সঙ্গে ১০ ধরনের দলিলপত্রের সংযুক্তি দিতে হয়।

যাচাই-বাছাই শেষে নিবন্ধন পেতে আগ্রহী ৯৩টি আবেদনের মধ্যে শেষ পর্যন্ত কতটি দল চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পাবে তা আগামী মে মাসের মধ্যে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। তিনি বলেন, নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন আবেদন যাচাই-বাছাই করছে ইসি সচিবালয়ের নির্ধারিত কমিটি। কাজ শেষ করে তারা ইসি মিটিংয়ে বাছাই প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর কমিশন সেটি পর্যালোচনা করে দেখবে। পর্যালোচনার পর কমিশনের নির্দেশনা পেলে আইন-বিধি মেনে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতেও কিছুটা সময় লাগবে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০২৩ সালের শেষে বা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে। অর্থাৎ রোডম্যাপ অনুযায়ী ভোটের ছ’মাস আগেই সম্পন্ন করা হবে নিবন্ধনের পুরো প্রক্রিয়া। এদিকে ইসিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা এসব দলের মধ্যে কয়েকটি দল নিয়ে আপত্তি উঠেছে। সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোন দলকে নিবন্ধন না দেওয়ার জন্য দাবিও জানানো হয়েছে।

কমিটির সদস্য সচিব ও ইসি’র উপসচিব আব্দুল হালিম খান জানান, ইসিতে জমা পড়া আবেদনপত্রগুলো তিন থেকে চার ধাপে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে আবেদনপত্র ও সংযুক্ত কাগজপত্র যথাযথ রয়েছে কিনা গুছিয়ে নিচ্ছে। ইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যেসব দলের আবেদন অযোগ্য হবে তাও জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে বিধি অনুযায়ী তথ্যের সঠিকতা যাচাই, আপত্তি-নিষ্পত্তি, মাঠ পর্যায়ে তদন্ত, ত্রুটি সংশোধনেও ১৫ দিন সময় দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। এরপর যারা যোগ্য বিবেচিত হবে তাদের দলের নাম নিবন্ধন সংক্রান্ত গেজেটে প্রকাশ করা হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সাল থেকে দলের নিবন্ধন প্রথা চালুর এক যুগে ৪৪টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পায়। কিন্তু শর্ত পূরণে ব্যর্থ এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দল- ফ্রিডম পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা’র নিবন্ধন পরে বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এতে করে আবেদনকারী ১২৬টি দলের মধ্যে নিবন্ধনের চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পায় ৩৯টি দল। এরপর দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে ৪৩টি আবেদনের মধ্যে নিবন্ধন পায় মাত্র তিনটি দল। বাতিল হয় আরও ১টি (জামায়াত) দলের নিবন্ধন।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে ৭৬টি দল আবেদন করলেও একটি নিবন্ধনের যোগ্য বলে বিবেচিত হয়নি। আরও একটি নতুন দলের (ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন) আবেদন বাতিল হয়। পরে আদালতে গিয়ে ২০১৯ সালে দুটি দল আদেশ নিয়ে এলে যুক্ত হয়; তবে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি। ২০২০ সালে একটি দল (পিডিপি) ও সবশেষ ২০২১ সালে নিবন্ধন বাতিল হয় আরেকটি দলের।

ইসি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নতুন দলের নিবন্ধন দেওয়ার পাশাপাশি নিবন্ধিত দলগুলো শর্ত প্রতিপালন করছে কিনা সেসব তথ্য পর্যালোচনা করছে ইসি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিবন্ধিত ৩৯টি দলের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে।

নতুন দলের বাছাইয়ের প্রক্রিয়া

১. ন্যূনতম কাগজপত্র ও তথ্য না থাকলে আবেদনপত্র বিবেচনা করা হবে কি না, তা বাছাই কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।

২. কোন দলের নিবন্ধন নিয়ে কারও কোন আপত্তি রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখবে। বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর আপত্তি পেলে দু’পক্ষের শুনানি আবেদন মঞ্জুর বা না মঞ্জুর করতে পারে। আপত্তি না পেলে আবেদন নেবে।

৩. প্রাথমিক তথ্য উপাত্ত-দলিল যাদের রয়েছে, কোন ধরনের সামান্য ঘাটতি তা ত্রুটি সংশোধনের থাকলে বিধি মেনে তা জমা দিতে সময় দেওয়া হবে। কাগজপত্র জমা না দিলে তো অযোগ্য বিবেচিত হবে; আর জমা দিলেও তা বাছাই কমিটি দেখে করণীয় নির্ধারণ করবে।

৪. মাঠপর্যায়ে তদন্তে পাঠানোর মতো ক’টি দল রয়েছে, বাছাই কমিটি কঠোরভাবে তা অনুসরণ করা হবে। এসব দলের আবেদনপত্রের দলিলাদি ও তথ্য সঠিকতা যাছাইয়ে তদন্তে যাবে এবং সংশ্লিষ্ট অনেক নির্বাচন কর্মকর্তা সম্পৃক্ত করা হবে। এ কাজটি করতে সময় লাগবে। কারণ কেন্দ্রীয় দপ্তর ও কমিটির পাশাপাশি এক তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলা, ন্যূনতম একশ’ উপজেলার ২শ’ ভোটারের সমর্থন তালিকা রয়েছে; অসত্য তথ্য মিললেই ঝরে যাবে।

৫. কোন রকম বাছাইয়ে উৎরে যাওয়ার মতো দল থাকলেও শেষধাপে নিবন্ধন সার্টিফিকেট পাবে; যা গেজেট আকারে প্রকাশ হবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আবেদন আহ্বান করে নির্বাচন কমিশন। জুলাই-অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে ৯৮টি আবেদন থেকে কয়েকটি একাধিকবার হওয়ায় বাদ দিয়ে ৯৩টি নতুন রাজনৈতিক দলের আবেদনপত্র ইসি’র প্রাথমিক বাছাই তালিকায় স্থান পায়।



বিষয়: #



আর্কাইভ