শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১
Swadeshvumi
সোমবার ● ৫ ডিসেম্বর ২০২২
প্রচ্ছদ » রাজধানী » মাতৃমৃত্যুর প্রধান কারণ সময়মতো হাসপাতালে না আসা: ওজিএসবি
প্রচ্ছদ » রাজধানী » মাতৃমৃত্যুর প্রধান কারণ সময়মতো হাসপাতালে না আসা: ওজিএসবি
৫৬০ বার পঠিত
সোমবার ● ৫ ডিসেম্বর ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মাতৃমৃত্যুর প্রধান কারণ সময়মতো হাসপাতালে না আসা: ওজিএসবি

---

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ৫০ বছরে দেশে মাতৃমৃত্যু উল্লেখযোগ্য হারে কমলেও এখনো শঙ্কার পর্যায়ে রয়েছে। সন্তান প্রসব করতে গিয়ে যেসব মায়ের মৃত্যু হচ্ছে, তাঁদের বড় অংশই সঠিক সময়ে হাসপাতালে আসেননি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা, যা মাতৃমৃত্যুর প্রধান কারণ। চিকিৎসকেরা বলছেন, রক্তক্ষরণ ও খিঁচুনির কারণে মাতৃমৃত্যু হয়ে থাকে, যা বাড়িতে অদক্ষ দাইদের মাধ্যমে ডেলিভারির কারণে হয়ে থাকে। এটি মোকাবিলায় ডেলিভারি রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু রোগীরা এমন অবস্থায় হাসপাতালে আসেন, যখন আর কিছুই করার থাকে না।

আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে অবসট্রেটিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন।

---

চিকিৎসকেরা বলেন, ‘মাতৃমৃত্যু রোধে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে মায়েদের হাসপাতালে না আনা। তাঁদের হাসপাতালে আনতে পারলে এই সমস্যা বহুলাংশেই কমে আসত। স্বাধীনতার পর দেশে প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন মা এবং ৫০০ নবজাতকের মৃত্যু হতো। বর্তমানে তা অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে। এখন প্রতি লাখে ১৬৪ জন মায়ের মৃত্যু হয়। তবে এটিকে আরও কমিয়ে আনতে প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির বিকল্প নেই।’

সংগঠনটি বলছে, মাতৃমৃত্যু কমাতে গ্রামে ডেলিভারির জন্য সরকার মিউওয়াইফ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে অনেক মিউওয়াইফ তৈরি হয়েছে। এখন শুধু তাঁদের পদায়ন করতে হবে।

এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওজিএসবির সভাপতি অধ্যাপক ফেরদৌসি বেগম বলেন, ‘মাতৃমৃত্যু ৭০ জনে নামিয়ে আনতে হবে। এখনো প্রধান প্রতিবন্ধকতা অপ্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি। এখনো ৫০ শতাংশ ডেলিভারি বাড়িতে অদক্ষ দাইয়ের মাধ্যমে হচ্ছে। আমরা সেটাকে প্রাতিষ্ঠানিক করতে চাই। গর্ভবতী নারীর সেবায় প্রতিটি স্তরে চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। তবু অনেকে প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির জন্য হাসপাতালে যান না। গর্ভাবস্থায় মাত্র ৪৭ শতাংশ মা চারবার চিকিৎসকের কাছে আসেন। মায়েদের এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে।’

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি অ্যান্ড অবসট্রেটিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ফারহানা দেওয়ান বলেন, ‘পরিবার পরিকল্পনার বিষয়ে কয়েকটি সূচক রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৬০ শতাংশ কাপল কনডম ব্যবহার করেন। এটাকে আরও বাড়াতে হবে। আমাদের বর্তমান ফার্টিলিটি রেট ২.২।। এটাকে ২-এর নিচে নামিয়ে আনতে হবে। এসব বিষয়ে আমরা উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছি। পরিবার পরিকল্পনায় আমরা দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপে জোর দিচ্ছি। এতে সফলতার হার প্রায় শতভাগ। এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়েও এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। এখন শুধু এটির ব্যাপারে জনগণকে জানাতে হবে।’

---

বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুল আরা হক বলেন, ‘মাতৃমৃত্যু রোধে সব থেকে জরুরি নারীকে মানুষ হিসেবে সম্মান করা। নারী মৃত্যুর কারণ, সমাজে নারীর জীবনের মূল্য নেই। বর্তমানে লাখে ১৬৪ জন মা মারা যান। আমরা এটাকে ৭০-এ নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছি। যদিও আমাদের চাওয়া একটা মায়েরও যেন মৃত্যু না হয়। আমরা নারীরা কেন একজন মানুষকে জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করব? আমাদেরও মানুষ হিসেবে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। তাই মায়ের মৃত্যু রোধে সমাজে নারীদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে প্রসবসংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতায় করণীয় এবং উদীয়মান চিকিৎসকদের পড়াশোনাসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু নিয়ে নতুন সংযোজন বাংলাদেশের প্রথম ইউটিউব চ্যানেল ‘ওজিএসবি স্বাস্থ্যশিক্ষা’ উদ্বোধন করা হয়।



বিষয়: #



আর্কাইভ