শুক্রবার ● ১৬ ডিসেম্বর ২০২২
প্রচ্ছদ » জাতীয় » একাত্তরের শকুনি ও পঁচাত্তরের হায়নাদের বংশধররা এখনো সক্রিয়: প্রধানমন্ত্রী
একাত্তরের শকুনি ও পঁচাত্তরের হায়নাদের বংশধররা এখনো সক্রিয়: প্রধানমন্ত্রী
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের বিজয়ের ৫১ বছর পূরণ হলো। আমাদের অব্যাহত প্রচেষ্টা হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের দারিদ্র্য-ক্ষুধামুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা। পঁচাত্তরের পর ২৯ বছর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল এবং তারা দেশের সম্পদ লুটে-পুটে খেয়ে দেশটাকে খোকলা বানিয়েছিল। এখনও এদেশে একাত্তরের শকুনি এবং পঁচাত্তরের হায়নাদের বংশধররা সক্রিয় আছে। সুযোগ পেলেই তারা দন্ত-নখর বসিয়ে দেশটাকে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলে। সাধারণ মানুষ ভালো আছে দেখলে এদের গায়ে জ্বালা ধরে। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু, বাংলাদেশের মানুষ এদের চিনে ফেলেছে। ষড়যন্ত্র করে আর তাদের বিভ্রান্ত করা যাবে না।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে তার এই ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও বেতার কেন্দ্রগুলো সম্প্রচার করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ যখন নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে, সে সময় স্বাধীনতা এবং উন্নয়নবিরোধী একটি গোষ্ঠী অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এদের অতীত ইতিহাস দেখুন। এদের একটা অংশ শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেই ক্ষান্ত হয়নি, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর হয়ে মানুষ হত্যা করেছে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমান এদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করে। পুনর্বাসিত হয়ে এরা আবার হত্যা ও সন্ত্রাসের রাজনীতি শুরু করে।
তিনি বলেন, আরেকটি দল যার জন্ম ও লালন-পালন সেনানিবাসে, সেই দলটির হাতে শুধুই রক্তের দাগ। এর প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান জাতির পিতার হত্যা-ষড়যন্ত্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। উর্দি গায়ে ক্ষমতা দখল করে সেই ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে সশস্ত্র বাহিনীর হাজার হাজার দেশপ্রেমিক সৈনিক এবং অফিসারকে হত্যা করেছে। এদের প্রত্যক্ষ মদতে হরকাতুল জিহাদ, বাংলাভাই, জমায়িতুল মোজাহিদিন ইত্যাদি জঙ্গি সংগঠন গড়ে ওঠে। ২০০৪ সালের ২১-এ আগস্ট শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে গ্রেনেড হামলা করে আমাকে এবং আমার দলের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করতে চেয়েছিল। আমি বেঁচে গেলেও সেদিন ২৪ জন নেতাকর্মী মারা যায়। ২০০৫ সালের ১৭ই আগস্ট সারা দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে ৫০০-এর বেশি স্থানে বোমা হামলা চালায়।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩ সালে সারা দেশে বিএনপি-জামায়াত অগ্নি এবং পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে, যা ২০১৫ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এ সময় তাদের পেট্রোলবোমা হামলায় ৫০০ জন নিরীহ মানুষ নিহত হয় এবং ৩ হাজার ১৮০ জন দগ্ধ হয়। দগ্ধ শরীরের যন্ত্রণা আজও অনেকেই বয়ে বেড়াচ্ছেন। এ সময় বিএনপি-জামাত জোট সন্ত্রাসীরা হাজার হাজার কোটি টাকার সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ধবংস করে। এদের হামলায় সাড়ে তিন হাজার বাস-ট্রাক, ২৯টি ট্রেন, ৯টা লঞ্চ পুড়ে ধ্বংস হয়। ৭০টি সরকারি অফিস ও স্থাপনা ভাঙচুর করে এবং ছয়টি ভূমি অফিস সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি’র শীর্ষনেত্রী এতিমখানার অর্থ আত্মসাৎ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত। আরেক শীর্ষ পলাতক নেতা অর্থপাচার, দশ-ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। সাধারণ জনগণ কেন তাদের ভোট দিতে যাবেন?
তিনি আরও উল্লেখ করেন, দেশের মানুষের ওপর আস্থা হারিয়ে বিএনপি-জামাত এখন বিদেশিদের কাছে দেশের বদনাম করার জন্য কিছু ভাড়াটিয়া লোক নিয়োগ করেছে। তারা পাচারকৃত অর্থ ব্যবহার করছে আর দেশের বদনাম করে বেড়াচ্ছে।…কাজেই জনগণকেই বেছে নিতে হবে তারা কী চায়, উন্নত মর্যাদাশীল জীবনের ধারাবাহিকতা নাকি বিএনপি-জামাত জোটের দুর্বৃত্তায়নের দুর্বিষহ জীবন, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিষয়: #একাত্তরের শকুনি ও পঁচাত্তরের হায়নাদের বংশধররা এখনো সক্র