মঙ্গলবার ● ২০ ডিসেম্বর ২০২২
প্রচ্ছদ » জাতীয় » জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএমে ভোটের সিদ্ধান্ত জানুয়ারিতে: ইসি আলমগীর
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএমে ভোটের সিদ্ধান্ত জানুয়ারিতে: ইসি আলমগীর
বিশেষ প্রতিনিধি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবার কত আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে তা নিয়ে এখনো চূঢ়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, জাতীয় সংসদের ৩শ’ আসনের মধ্যে কত আসনে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা তা নির্ভর করছে বাজেটের ওপর। আর এ ব্যাপারে ইসির সিদ্ধান্ত জানুয়ারি মাসের মধ্যেই হবে বলেও জানান তিনি।
মো. আলমগীর বলেন, এখন যে পরিমাণ ইভিএম ইসির কাছে আছে তা দিয়ে ৭০-৮০টি আসনে ভোট করা যাবে। আর ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে পর্যাপ্ত বাজেট পেলে ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোটের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে। তবে বাজেটের পরিমাণ কম থাকলে অথবা জানুয়ারি মাসের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত অনুমোদন না হলে পূর্ব ঘোষিত ১৫০ আসনে ইভিএমএ ভোট করা ইসির পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।
এর আগে গত ৯ নভেম্বর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছিলেন, আগামী বছরের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদন না পেলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অর্ধেক অর্থাৎ ১৫০ আসনে বহুল আলোচিত এই যন্ত্র ব্যবহার করা সম্ভব হবে না। কারণ নতুন করে ইভিএম কেনা সম্ভব না হলে বর্তমানে ইসির হাতে থাকা মাত্র ১ লাখ ৫০ হাজার ইভিএম দিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনের ১৫০ আসনে ভোট গ্রহণ করা অসম্ভব। আর ইসির হাতে থাকা দেড় লাখ ইভিএম এর মধ্যে এরই মধ্যে অনেকগুলো যন্ত্র অকেজো, ফলে তা দিয়ে ৬০-৭০টি আসনে ভোট সম্ভব হবে।
এর আগে আগামী সংসদ নির্বাচনে অর্ধেক আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণের জন্য নতুন করে ২ লাখ ইভিএম কিনতে ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি সেটি পর্যালোচনা করে পরিকল্পনা কমিশন প্রস্তাবিত ওই প্রকল্প প্রস্তাবের ব্যয় যৌক্তিক করতে ইসিকে পরামর্শ দেয়। এ নিয়ে টানাপড়েনের অবসান হওয়ায় সংকট এখনো কাটেনি। ইসি আলমগীর আরও জানান, পরিকল্পনা কমিশনের পর্যবেক্ষণগুলো নিয়ে নির্বাচন কমিশন আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। তার মতে, এধরনের প্রকল্প অর্থনৈতিক সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে। পরিকল্পনা কমিশন বা অর্থ মন্ত্রণালয় কত টাকা দিতে পারবে, তার ওপর এটি নির্ভর করে।
প্রকল্প অনুমোদনের পর কার্যাদেশ দেওয়া, এলসি খোলা, যন্ত্রাংশ দেশে আনা, মান পরীক্ষা করা, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ, ইভিএম ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা, মাঠে পাঠানো- এ কাজগুলো করতে হবে। তাই ইসি আলমগী তখন জানান, ডিসেম্বরের শেষ থেকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রকল্প অনুমোদন না হলে নতুন করে কেনা ইভিএম জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহার করা সম্ভব হবে না।
এদিকে সংকটের সময় বিপুল অর্থ ব্যয়ে ইভিএম কেনা নিয়েও রয়েছে নানা বিতর্ক। তাই বেশিরভাগ দল ইভিএমের বিপক্ষে হলেও আগামী নির্বাচনে সর্বোচ্চ দেড়শ’ আসনে ইভিএমে ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ব্যয় সংকোচনের জন্য কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প স্থগিত রাখাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। আগামী বছর দুর্ভিক্ষ আসতে পারে এমন আশংকাও প্রকাশ করেছে সরকার প্রধান। তারপরেও ইভিএম কিনতে চায় ইসি।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বরাদ্দ ছিল ৭০০ কোটি টাকা। ইভিএমের কারণে গত নির্বাচনের চেয়ে এবার বহু গুণ টাকা খরচ করতে হবে। নতুন ইভিএম কেনার খরচ ধরলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য ব্যয় হবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিষয়: #জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএমে ভোটের সিদ্ধান্ত জানুয়ারিতে