শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩১
Swadeshvumi
শুক্রবার ● ২৩ ডিসেম্বর ২০২২
প্রচ্ছদ » জাতীয় » সাধারণ সম্পাদক পদে এবারও আলোচনায় কাদের
প্রচ্ছদ » জাতীয় » সাধারণ সম্পাদক পদে এবারও আলোচনায় কাদের
২৭৬ বার পঠিত
শুক্রবার ● ২৩ ডিসেম্বর ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সাধারণ সম্পাদক পদে এবারও আলোচনায় কাদের

---

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি

# বিদেশি অতিথি আমন্ত্রণ জানানো হয়নি না 

# থাকবেন ৩২ হাজার কাউন্সিরল ও ডেলিগেট

# ৫০ হাজার লোকের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা

শাহনাজ পারভীন এলিস

আগামীকাল (২৪ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন। ওই সম্মেলনে নির্ধারণ হবে আগামী তিন বছর কারা এই দলের নেতৃত্ব দেবেন। আর মাত্র একবছর পরই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাই নির্বাচনের আগে দলের এই সম্মেলন নিয়ে নেতাকর্মীদের উৎসাহেরও কমতি নেই। এরই মধ্যে সম্মেলনস্থল ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল মঞ্চ তৈরি করাসহ সব ধরনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন।

দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া সংবাদ সারাবেলাকে জানিয়েছেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে এবারের জাতীয় সম্মেলনের কর্মসূচি দু’দিনের পরিবর্তে একদিনে শেষ করা হবে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে ৩২ হাজার কাউন্সিরল ও ডেলিগেট ছাড়াও সারাদেশ থেকে লক্ষাধিক নেতাকর্মী অংশ নেবেন বলে তারা ধারণা করছেন।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পদ্মা সেতুর ওপরে নৌকার আদলে তৈরি ৮০ ফুট দৈর্ঘ্য আর ৪৪ ফুট প্রস্থের মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। ৭ ফুট উচ্চতার মূল মঞ্চে চার সারিতে চেয়ার সাজানো থাকবে। এছাড়া সাংস্কৃতিক পর্বের জন্যও তৈরি হয়েছে আলাদা মঞ্চ। মূল মঞ্চের প্রথমে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বসবেন। দ্বিতীয়টিতে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সিনিয়র নেতা ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাকি দুটিতে বসবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। মোট ১২০টি চেয়ার রাখা হবে। বিকেলে সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে করা হবে নেতৃত্ব নির্বাচন। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। বরাবরের মতো এবারও দলটির নেতৃত্ব নির্বাচন হবে আলোচনা-সমঝোতার মাধ্যমে।

বরাবরের মতো এবারের সম্মেলনেও সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গেলো ৪১ ধরে তিনি দলটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে রাষ্ট্র ক্ষমতায় রয়েছে। এবারও তিনিই হবেন দেশের সর্ববৃহৎ এই রাজনৈতিক দলের সভাপতি এমনটাই ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ এর আগেও কয়েকবার শেখ হাসিনা নিজ থেকেই দলের এই দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে চাইলেও কাউন্সিলর-প্রতিনিধিরা তাতে রাজি হননি। কারণ এখন পর্যন্ত সভাপতি পদে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাবৃন্দ। এজন্য বিগত চার দশক ধরে ঐতিহ্যবাহী এই দলের কাউন্সিলে মূল আকর্ষণ দাঁড়িয়েছে সাধারণ সম্পাদক পদ। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়।

কে হচ্ছেন সাধারণ সম্পাদক?

দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে সবচেয়ে কাক্সিক্ষত পদ হলো সাধারণ সম্পাদক। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কী এই পদে ‘হ্যাটট্রিক’ করতে যাচ্ছেন, নাকি নতুন কেউ আসছেন- তা নিয়েও দলের ভেতরে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। আলোচনা। নোয়াখালী-৫ আসনের সংসদ সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের টানা দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। কারণ এর আগে আওয়ামী লীগে টানা তিন মেয়াদে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের রেকর্ড কারও নেই।

ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থার কারণে এই পদে পরিবর্তন আসছে বলে- দলের নেতাদের মধ্যে এতোদিন ধরে বেশ আলোচনা চললেও বর্তমানে তিনি শারীরিকভাবে বেশ ভালো আছেন। এবং গেলো দু’মাস ধরে জেলায় জেলায় দলীয় কার্যক্রম এবং সম্মেলনেও অংশ নিয়েছেন। তিনি ছাড়াও সাধারণ সম্পাদক পদে এবার আলোচনায় আছে- দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাকে নাম। সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কাজী জাফর উল্যাহও সাধারণ সম্পাদক হতে আগ্রহী প্রকাশ করেছেন। এছাড়া দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আবদুর রহমানকেও কেউ কেউ এই পদের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থী মনে করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তিটিকেই সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করবেন বলে আমরা আশা রাখি। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার বিবেচনায় নিয়ে তিনি সম্মেলনে চাকচিক্য বাদ দিতে বলেছেন। ফলে আলোকসজ্জা, বাহুল্য থাকবে না। এবার বিদেশি কোন অতিথিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়া বরাবরের মতো বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা আমন্ত্রণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে কাউন্সিলর ও প্রতিনিধি ছাড়াও রাজনীতিক, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, পেশাজীবী এবং বিদেশি কূটনীতিকদের বিশেষ আমন্ত্রণ পেয়েছেন। সব মিলিয়ে ৫০ হাজার মানুষের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জাতীয় সম্মেলনের আগে জেলা, উপজেলাসহ তৃণমূলের সম্মেলন সম্পন্ন করার কথা। করোনা মহামারির কারণে বর্তমান কমিটি প্রথম আড়াই বছর তেমন কোন সম্মেলন করতে পারেনি। গত ছয় মাসে সম্মেলন করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৬৮টির সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। বেশির ভাগই হয়েছে গত নভেম্বর ও চলতি মাসে।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে আত্মপ্রকাশ ঘটে আওয়ামী লীগের। এ পর্যন্ত দলটির ২১টি জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালের সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক পুনরায় নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালে সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০ ও ২১ ডিসেম্বর। সর্বশেষ সম্মেলনের বাজেট ছিল ৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এবারের সম্মেলনের জন্য বাজেট ৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা অনুমোদন করেছে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি।



বিষয়: #



আর্কাইভ